Home প্রবাস যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে ৮ মাস ধরে আটক বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী

যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে ৮ মাস ধরে আটক বাংলাদেশি অবৈধ অভিবাসী

by bnbanglapress
Published: Updated:
A+A-
Reset

 

আবু সাবেত: বৈধ কাগজপত্রহীন এক বাংলাদেশি ৮ মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে আটক রয়েছেন। চলতি বছরের মে মাসে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে কানেকটিকাট অঙ্গরাজ্য পুলিশ গ্রেপ্তার করে মেইন অঙ্গরাজের কারাগারে স্থানান্তর করেন। সেখানেই তিনি আটক রয়েছেন। আটকের ৮ মাস পার হলেও কেউ খোঁজ নেয়নি তার।
ফেডারেল ইমিগ্রেশন কর্মকর্তারা জানান, এপ্রিল মাসে যৌন নির্যাতনের অভিযোগে মনির উদ্দিন (৪৭)কে আটক করা হয়। তিনি কানেকটিকাটের লিচফিল্ড সিটগো গ্যাস স্টেশন/কনভিনিয়েন্স স্টোরের দোকান কর্মী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। তাকে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে আটক করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি একজন বাংলাদেশি নাগরিক বলে উল্লেখ করেছেন ফেডারেল ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস প্রয়োগকারী অফিসের মুখপাত্র জন মোহন।
মনির লিচফিল্ড সিটগো গ্যাস স্টেশন/কনভিনিয়েন্স স্টোরে কাজ করাকালীন সময় গত জানুয়ারি মাসে তিনজন ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে ভিন্ন ভিন্ন সময় চুমু দিয়েছেন, আলিঙ্গন করেছেন এবং তাদেরকে দোকানে আটকে রেখেছেন। রাজ্য পুলিশ জানিয়েছে, নিউ ইয়র্ক সিটির বাসিন্দা উদ্দিনের বিরুদ্ধে শিশুর যৌন নির্যাতন, অবৈধ যৌন সম্পর্ক, শিশুকে আহত করার ঝুঁকি, দ্বিতীয় ডিগ্রি অবৈধ শ্বাসরোধ এবং চতুর্থ ডিগ্রি যৌন নির্যাতনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিমুভাল অফিস ( ইআরও) এর পরিচালক টড এম. লায়নস বলেন, এই অবৈধভাবে বসবাসকারী ব্যক্তি আমাদের কানেকটিকাট সম্প্রদায়কে শিশুদের যৌন নির্যাতন করে ক্ষতি করেছে। ইআরও বোস্টন শাখা আমাদের স্থানীয় সঙ্গীদের সঙ্গে কাজ করতে থাকবে, যাতে আমাদের নিউ ইংল্যান্ড সম্প্রদায়ের সদস্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা যায়।
ইআরও জানিয়েছে যে, ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে মার্কিন কাস্টমস ও বর্ডার প্রটেকশন মনির উদ্দিনকে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পরিবহনকাজের উদ্দেশ্যে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু তিনি নভেম্বরে ৯ তারিখের পর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করতে শুরু করেন, যা তার প্রবেশের শর্তের বিরুদ্ধে ছিল।
রাজ্য পুলিশ ২০ এপ্রিল উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে এবং একই দিনে ইমিগ্রেশন এবং কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)র কাছে এক অভিবাসী আটকাদেশের আবেদন করা হয়। ফেডারেল কর্মকর্তারা ২২ এপ্রিল তাকে গ্রেপ্তার করে এবং তাকে আইসিই’র হেফাজতে রাখা হয়। যেখানে একটি অভিবাসী বিচারক-এর সামনে শুনানি করা হবে।
রাজ্য পুলিশের গ্রেপ্তার পরোয়ানায় বলা হয়েছে, ১৪ জানুয়ারি একটি অভিযোগ পাওয়ার পর টহল পুলিশ ‘মুন’ নামের একজন কিশোরীকে স্টোর কর্মীর কাছে পাঠিয়ে তার দিকে নজর দেয় পুলিশ। যাকে পরে মনির উদ্দিন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়।
পুলিশের তদন্তে জানা যায়, মনির উদ্দিন তিনজন ১৪ বছর বয়সী মেয়েকে স্টোরের পেছনে নিয়ে যান এবং যখন তারা আবার দোকানে প্রবেশ করতে চায়, তখন উদ্দিন তাদেরকে বাধা দেন। তারা অভিযোগ করেন যে মনির উদ্দিন তাদেরকে চুমু দেন, আলিঙ্গন করেন এবং তাদেরকে স্পর্শ করেন।
মেয়েরা জানায় যে, তারা ‘ফাঁস হয়ে গেছে’ বলে অনুভব করছিল। একজন মেয়ে বলেছিল যে, সে মনিররের কাছ থেকে মুক্তি পেতে চেয়েছিল, কিন্তু উদ্দিন তাকে আরো কাছে টেনে নেন। পুলিশের অভিযোগ অনুসারে মনির মেয়েদেরকে ঘটনা কাউকে না বলার প্রতিশ্রুতি দিতে বলেন এবং পরে তাদেরকে বিনামূল্যে নিকোটিন ভেপস দেন।
তারা বলেছিল, তারা অধিকাংশ সময় হাসছিল, কারণ তারা অস্বস্তি অনুভব করছিল। পরে তারা জানান, ওই ঘটনার পর তারা তীব্র অসুস্থ বোধ করেছিল।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানায় বলা হয়েছে, মনির তিনজন কিশোরী ভুক্তভোগীর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, তাদেরকে আটক করেছেন এবং যৌন আচরণের জন্য তামাক পণ্য দিয়েছেন।
পুলিশের সাথে ফেব্রুয়ারি মাসে একটি সাক্ষাৎকারে মনির উদ্দিন অভিযোগ করেন যে, মেয়েরা তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে এবং তারা তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে, কারণ তিনি তাদেরকে সিবিডি পণ্য বিক্রি করতে রাজি হননি। এছাড়াও, তার বিরুদ্ধে অপ্রাপ্তবয়স্কদের তামাক বিক্রির অভিযোগ রয়েছে বলে উল্লেখ করেন পুলিশ।
বাংলাদেশি একটি সূত্র জানায়, মনির উদ্দিন ৮ মাস ধরে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে আটক থাকলেও বাংলাদেশি কোন সংগঠন কিংবা কমিউনিটির কেউ তার কোন খোঁজ নেয়নি।

বিপি।এসএম

 

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী