আবু সাবেত: বাংলাদেশে ক্ষমতার পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো গোপন নেটওয়ার্ক (ডিপ স্টেট) বা ভূমিকা নেই বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ওয়াশিংটন ডিসিতে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের আগে এক ভারতীয় সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও প্রচার করেছে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন টিভি। তাতে দেখা যায়, ভারতীয় এক সাংবাদিক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের উদ্দেশে বাংলাদেশ ইস্যুতে প্রশ্ন করছেন। ওই সাংবাদিক বলেছেন, আপনি (ট্রাম্প) বাংলাদেশ ইস্যুতে কী বলবেন। আমরা দেখেছি এবং এটা স্পষ্ট যে, সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সময় মার্কিন গোপন নেটওয়ার্ক বা ডিপ স্টেট বাংলাদেশের ক্ষমতা পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত ছিল। এছাড়া মুহাম্মদ ইউনূসও (প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস) জুনিয়র সরোসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সুতরাং বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কী?
জবাবে ট্রাম্প বলেন, এতে আমাদের ডিপ স্টেটের কোনো ভূমিকা ছিল না। এটি এমন একটি বিষয় যা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী (মোদি) দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। শত শত বছর তারা কাছ করছে। সত্যি বলতে এ বিষয়ে পড়েছি তবে বাংলাদেশ ইস্যুটি আমি প্রধানমন্ত্রীর (মোদি) ওপর ছেড়ে দেব।
তবে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ ইস্যুতে কোনো জবাব দেননি। তিনি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কথা শুরু করেন।
প্রসঙ্গত, দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমবারের মতো ওয়াশিংটন সফরে গেছেন মোদি। সেখানে দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনায় অংশ নেন। বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে কথা বলেন ট্রাম্প।
ট্রাম্পের ভাষায় ‘ডিপ স্টেট’ বলতে একটি অনুমিত গোপন নেটওয়ার্ককে বোঝানো হয়। যেখানে প্রভাবশালী সরকারী কর্মকর্তা, গোয়েন্দা সংস্থা, সামরিক নেতৃবৃন্দ এবং আমলারা নির্বাচিত নেতাদের প্রভাবের বাইরে থেকে নীতিনির্ধারণ ও ক্ষমতা বজায় রাখার জন্য কার্যক্রম চালিয়ে যান।
এই শব্দটি প্রায়ই ষড়যন্ত্র তত্ত্বের মধ্যে ব্যবহৃত হয়, যেখানে বলা হয় যে একটি অনির্বাচিত, গোপন গোষ্ঠী সরকারী সিদ্ধান্তগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিচ্ছে এবং কখনও কখনও জনগণ বা নির্বাচিত কর্মকর্তাদের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে। কিছু মানুষ এটিকে রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিরুদ্ধে প্রকৃত আমলাতান্ত্রিক প্রতিরোধ বোঝাতে ব্যবহার করেন, আবার অন্যরা এটিকে অতিরঞ্জিত বা ভিত্তিহীন ধারণা হিসেবে দেখেন।
এই ধারণার উৎস তুরস্কের ‘ডেরিন ডেভলেট’ (ডিপ স্টেট) থেকে। যা বিভিন্ন দেশে গোপন সরকারী প্রভাব বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে, এটি রাজনৈতিক আলোচনায় জনপ্রিয়তা পায়, বিশেষ করে গোয়েন্দা সংস্থা, আইন প্রয়োগকারী বিভাগ এবং রাজনৈতিক অভ্যন্তরীণদের নিয়ে বিতর্কের মধ্যে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম