বাংলাপ্রেস ডেস্ক: দীর্ঘ প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে নিয়মিত ট্রেন চলাচলে নবনির্মিত যমুনা রেলসেতু আজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়েছে। এর মধ্যে দিয়ে রেল যোগাযোগে নতুন মাত্রা যোগ করলো। আগে যেখানে যমুনা সেতু দিয়ে ট্রেন পাড় হতে ২০ মিনিট সময় লাগতো এখন সেখানে লাগছে মাত্র ৩ মিনিট ২১ সেকেন্ড।
মঙ্গলবার দুপুরের দিকে অতিথিরদের নিয়ে ছয় বগির বিশেষ ট্রেনটি সেতুর পূর্ব পাড় ইব্রাহিমাবাদ স্টেশন থেকে পশ্চিমপাড় সৈদাবাদ স্টেশনে এসে পৌঁছায়।
এর আগে মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে টাঙ্গাইল প্রান্তে ইব্রাহিমাবাদ রেলস্টেশনের উদ্বোধন করেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ফাহিমুল ইসলাম জানান, নতুন এই রেল সেতুটি চালুর মধ্যে দিয়ে উত্তর দক্ষিণ অঞ্চলের সাথে সারাদেশের প্রেম যোগাযোগে ঝুঁকি ও বিরম্বনা কমবে। পাশাপাশি আগামীতে ঈশ্বরদী থেকে ঢাকার জয়দেবপুর পর্যন্ত ডুয়েল গ্রেজ রেলপথ তৈরি করে এই দুই লেনের রেল সেতু দিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ করবে সরকার।
সেতুর পশ্চিম পাড়ে সিরাজগঞ্জের ছয়দাবাদ রেল স্টেশনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে রেল সচিব জানান, শুধু দেশেই নয়, এশিয়ার আঞ্চলিক ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসার ও কানেক্টিভিটি তৈরিতে চালু হওয়া সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ নিযুক্ত জাপানি রাষ্ট্রদূত সাইদা সিনচি ও জাইকার দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের মহাপরিচালক মি. ইতো তেরুয়াকি।
সেতুটি নির্মাণে সরকারের বিভিন্ন স্তরের সার্বিক সহযোগিতাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে জাপান বাংলাদেশের আরও বড় উন্নয়ন অংশীদারের সহযোগিতা করতে চায় বলে জানান যাইকার প্রতিনিধি ও জাপানের রাষ্ট্রদূত।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, সাড়ে তিন মিনিটের মধ্যেই যমুনা রেল সেতু অতিক্রম করবে ট্রেন। এর ফলে ঢাকার সঙ্গে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ আরও সহজ হবে।
ঢাকার সঙ্গে সরাসরি রেলপথে উত্তর-দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সেতুবন্ধন ডাবল লেনের এই সেতু উদ্বোধনে খুশি রেলযাত্রীরাও। তবে ডাবল লেনের হলেও বর্তমানে সিঙ্গেল লেন চালু হওয়ায় সেতুটির পুরোপুরি সুফল সহসাই মিলবে না যাত্রীদের।
রেলসেতু নির্মাণ প্রকল্পের পিডি আবু ফাত্তাহ মো. মাসুদুর রহমান বলেন, নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ডাবল লেনের রেললাইন তৈরি করা হবে। এর ফলে যোগাযোগ, বাণিজ্য ও অর্থনীতির নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
রেলওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) আল ফাত্তাহ মাসুদুর রহমান বলেন, যমুনা রেলসেতু দিয়ে ট্রেন পারাপারে আগের তুলনায় কম সময় লাগবে। এতে দুই পাড়েই সময় সাশ্রয় হবে। ডাবল লেনের সুবিধা পেতে হলে আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সেতুটি ৫০টি পিলার ও ৪৯টি স্প্যানের ওপর নির্মিত। নতুন রেলওয়ে সেতুটি যমুনা বহুমুখী সেতুর ৩০০ মিটার উজানে অবস্থিত। দেশের দীর্ঘতম ও আধুনিক এ সেতুর ওপর দিয়ে ৮৮টি ট্রেন দ্রুতগতিতে চলাচল করতে পারবে। ১৯৯৮ সালে যমুনা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের পর থেকে প্রায় ৩৮টি ট্রেন প্রতিদিন তুলনামূলকভাবে ধীর গতিতে যাতায়াত করে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি/কেজে