বাংলাপ্রেস ডেস্ক: সিলেটের এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মামলার বিচার তিন বছর আটকে থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ। বুধবার (১৯ মার্চ) সকালে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চে মামলাটি ছিলো।
এসময় অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক আপিল বিভাগকে বলেন, মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নিতে হাইকোর্টে আসেন ভুক্তভোগীর পরিবার। হাইকোর্ট নির্দেশ দিলেও পরে তার বিরুদ্ধে আপিল করে ছাত্রলীগের নেতাদের বিচার আটকে রাখা হয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, এটি কি করে সম্ভব তিন বছর একটি জায়গায় আটকে আছে পুরো মামলা। পরে আপিল বিভাগ মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন এবং বিস্তারিত পূর্ণাঙ্গ আদেশে আসবে বলে জানান।
এর আগে গত ১৭ মার্চ এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে তরুণীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হতে বাধা নেই বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। সেদিন দিন রাষ্ট্রপক্ষ ২ বছর আগে আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্রলীগের নেতাদের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে যাতে না হয় সেজন্য যে আপিল করেছিলেন তা বর্তমান অ্যাটর্নি জেনারেল অফিস প্রত্যাহার করে নেন। সেই সঙ্গে পাঁচ বছর আগের ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। তবে এখনো শুনানি শুরু হয়নি।
২০২০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটকে রেখে ওই তরুণীকে (২০) ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় তার স্বামী বাদী হয়ে সিলেট মহানগর পুলিশের শাহপরান থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং দুজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর আসামিরা পালিয়ে যান। তবে তিন দিনের মধ্যে ছয় আসামি ও সন্দেহভাজন দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ ও র্যাব।
আসামিরা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করেন। আসামিদের ডিএনএ নমুনা পরীক্ষায় আটজন আসামির মধ্যে ছয়জনের ডিএনএর মিল পাওয়া যায়। ২০২০ সালের ৩ ডিসেম্বর মামলার অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেয় পুলিশ।
ওই ঘটনায় ধর্ষণ ও চাঁদাবাজির অভিযোগে করা দুটি মামলা প্রায় এক বছর ধরে বিচার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ২০২২ সালের ১১ মে গণধর্ষণের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা চাঁদাবাজি ও ছিনতাই মামলার অভিযোগ গঠন করা হয়।
এর আগের বছর ২০২১ সালের ১৭ জানুয়ারি একই ট্রাইব্যুনালে অপহরণ, দলবদ্ধ ধর্ষণ ও দলবদ্ধ ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে অভিযোগ গঠন করা হয়। দুটি মামলার অভিযোগ গঠন করা হলেও সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়নি।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি/টিআই