নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসি) থেকে একটি ই-ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামে। সেখানে তিনি রাজধানীর আফতাব নগরে কাঁকড়ার ব্যবসা করবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
লাইসেন্সটি ইস্যু করা হয়েছে গত ১১ মার্চ। লাইসেন্স অনুযায়ী, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নাম ট্রাম্প অ্যাসোসিয়েশন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালিকের নাম ডোনাল্ড ট্রাম্প। বাবার নাম ফ্রেড ট্রাম্প। মায়ের নাম ম্যারি অ্যান ম্যাকলিওড ট্রাম্প। লাইসেন্সে মালিক হিসেবে রয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি ছবিও।
বিষয়টি জানতে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ব্যবসা করার জন্য ট্রেড লাইসেন্স বাধ্যতামূলক, যেটা প্রদান করে সিটি কর্পোরেশন। আগের পদ্ধতিতে কোনো ট্রেড লাইসেন্স নিতে হলে, আবেদনকারীর আবেদনের পর সিটি কর্পোরেশনের রাজস্ব বিভাগের এক কর্মকর্তা মাঠপর্যায়ে গিয়ে আবেদনপত্রের যাচাই বাছাই করতো। যা করা হতো সরেজমিনে গিয়ে। এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স পেতে আগে বিভিন্ন সংস্থা কিংবা অধিদপ্তর থেকে প্রয়োজনীয় অনুমতি বা ছাড়পত্রও নিতে হতো। তখন ট্রেড লাইসেন্স কেবল পাওয়া যেত বৈধ এবং সব কিছু ঠিক থাকলে।
বিষয়টি নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামানের সঙ্গে কথা বলতে চেষ্টা করা হয়। কিন্তু একাধিকবার কল করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে বেশ কিছু গণমাধ্যমে তিনি এ বিষয়ে বলেছেন, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামেও যে ই-ট্রেড লাইসেন্স হতে পারে, তা ডিএনসিসির কর্মীরা করে দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের কর্মীরা ট্রায়াল করার জন্য ট্রাম্পের নামে ই-ট্রেড লাইসেন্স করেছেন। তারা ট্রায়াল করে দেখিয়েছেন, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নামেও ট্রেড লাইসেন্স হয়ে যাচ্ছে। বোঝানো চেষ্টা করা হয়েছে, স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যে ভুয়া ই-ট্রেড লাইসেন্স বের করা যায়। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতি চালুর পরে অনেকে ইচ্ছেমতো লাইসেন্স নিচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে। বিষয়টি আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে।
জানা গেছে, হোটেল, রেস্তোরাঁ, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও দাহ্য পদার্থ ব্যবহৃত হয় এসব প্রতিষ্ঠান ব্যতীত অন্য ব্যাবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আবেদনের পর স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছিল ডিএনসিসির। পরবর্তী সময়ে ভুয়া লাইসেন্স তৈরির প্রবণতা দেখে এক চিঠিতে নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
পরে সেখানে বলা হয়, কোন কোন ব্যবসার জন্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইসেন্স ইস্যু হবে না, যাচাইয়ের প্রয়োজন হবে, সেটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইস্যু হওয়া লাইসেন্সে লেখা থাকবে, এটি একটি সিস্টেম জেনারেটেড ই-ট্রেড লাইসেন্স। সেখানে কোনো কর্মকর্তার স্বাক্ষর থাকবে না। আবেদনকারী কোনো ভুল কিংবা মিথ্যা তথ্য দিলে লাইসেন্সটি বাতিল হবে। এছাড়া আবাসিক এলাকার ঠিকানায় ই-ট্রেড লাইসেন্স করলেও তা বাতিল হবে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম