ইমা এলিস: দক্ষিণ সুদানের সব পাসপোর্টধারীদের ভিসা বাতিল ও নতুন আগমনকারীদের আটকে দিচ্ছে ওয়াশিংটন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও শনিবার অভিযোগ করেছেন, আফ্রিকান দেশটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত হওয়া নাগরিকদের গ্রহণ করছে না।
রুবিও এক বিবৃতিতে বলেন, ‘পররাষ্ট্র দফতর দক্ষিণ সুদানের সব পাসপোর্টধারীদের ভিসা বাতিল ও প্রবেশ বন্ধে ভিসা ইস্যু রোধ করার পদক্ষেপ নিচ্ছে।’
অভিবাসন বিরোধী প্রচারণা চালিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০ জানুয়ারি হোয়াইট হাউসে ফিরে আসার পর এটিই ছিল প্রথম কোনো নির্দিষ্ট দেশের সব পাসপোর্টধারীদের আলাদা করে রাখার পদক্ষেপ।
রুবিও দক্ষিণ সুদানের অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের থেকে সুযোগ নেয়ার’ অভিযোগ করে বলেন, যখন কোনো দেশ কাউকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চায়, তখন সেই দেশের উচিত তাদের নাগরিকদের যথাসময়ে গ্রহণ করা।
রুবিও আরো বলেন, ‘দক্ষিণ সুদান পূর্ণ সহযোগিতা করলে ওয়াশিংটন এই পদক্ষেপগুলো পর্যালোচনা করতে প্রস্তুত থাকবে।’
এই পদক্ষেপ এমন এক সময় নেয়া হয়েছে যখন পর্যবেক্ষকরা আশঙ্কা করছেন, ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে গৃহযুদ্ধের মতো করে দক্ষিণ সুদান পুনরায় গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পরতে পারে। ওই যুদ্ধে চার লাখ মানুষ নিহত হয়। বিশ্বের নবীনতম ও দরিদ্রতম দেশগুলোর অন্যতম এই দেশটি বর্তমানে রাজনৈতিক উত্তেজনার শিকার।
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন দক্ষিণ সুদানের নাগরিকদের ‘টেম্পোরারি প্রোটেক্টেড স্ট্যাটাস (টিপিএস)’ দেয়। এর মেয়াদ ২০২৫ সালের ৩ মে শেষ হওয়ার কথা ছিল। যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্যান্য অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির কারণে নিরাপদে দেশে ফিরতে না পারা বিদেশী নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্র টিপিএস দেয়, যা মানুষকে নির্বাসন থেকে রক্ষা করে।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে জানায়, টিপিএস প্রোগ্রামের আওতায় যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ সুদানের নাগরিক ছিলেন প্রায় ১৩৩ জন ও আরো ১৪০ জন আবেদন করার যোগ্য ছিলেন।
কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন টিপিএস পদবী বাতিল করতে শুরু করেছে। জানুয়ারিতে ছয় লক্ষাধিক ভেনিজুয়েলার নাগরিকের সুরক্ষা প্রত্যাহার করা হয়। ট্রাম্প ক্ষমতায় ফিরে আসার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র অন্য দেশগুলোর সাথে তাদের নাগরিকদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে।
দক্ষিণ সুদান থেকে আফ্রিকানদের ক্রমবর্ধমান সংখ্যক লোকের প্রবেশের চেষ্টার পর ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ সুদানকে আলাদা করে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এসব অভিবাসী ইউরোপে ঝুঁকিপূর্ণ পথের বিকল্প হিসেবে দক্ষিণ সীমান্ত দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করছে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম