Home আন্তর্জাতিক ঐতিহাসিক সম্মেলনে ট্রাম্প-কিমের নতুন দিনের প্রতিশ্রুতি

ঐতিহাসিক সম্মেলনে ট্রাম্প-কিমের নতুন দিনের প্রতিশ্রুতি

by bnbanglapress
Published: Updated:
A+A-
Reset

বাংলাপ্রেস অনলাইন: সিঙ্গাপুরের ঐতিহাসিক সম্মেলনে উত্তর কোরিয়া সম্পূর্ণরূপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণে রাজি হয়েছে, বিনিময়ে এক সময়ের শত্রু দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
সিঙ্গাপুরের সানতোসা দ্বীপে মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন নজিরবিহীন এক সম্মেলন করেন।
যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রেসিডেন্টের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার কোনো শীর্ষ নেতার এটিই প্রথম সম্মেলন। অথচ, কয়েকমাস আগেও দুই নেতা পরস্পরকে ধ্বংস করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন। কিন্তু পরিস্থিতি এখন পাল্টেছে। সম্মেলনে উভয় নেতা এমন কিছু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা যুক্তরাষ্ট্র-উত্তর কোরিয়া নতুন এক যুগের সূচনা হওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে।
কোরীয় উপদ্বীপ পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এ সম্মেলন শুরু হয়েছিল। সম্মেলনে ট্রাম্প যে কোনো উপায়ে কিমের কাছ থেকে সম্পূর্ণ পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের প্রতিশ্রুতি আদায় করার চেষ্টা করবেন, বিশেষজ্ঞাদের পূর্বাভাস এমনই ছিল।
তবে পুরনো মিত্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়া বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দিনের সবচেয়ে বড় ‘চমক’ দিয়েছেন ট্রাম্প।সম্মেলনের পর দুই নেতা এক যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ডেমোক্রেটিক পিপুলস রিপাবলিক অব কোরিয়ার (উত্তর কোরিয়ার আনুষ্ঠানিক নাম) নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর চেয়ারম্যান কিম জং-উন কোরীয় উপদ্বীপকে সম্পূর্ণরূপে পরমাণু অস্ত্রমুক্ত করার যে দৃঢ় ও অবিচল প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তা পুনর্ব্যক্ত করেছেন।”
ট্রাম্প ও কিম সম্মেলনে অংশ নিতে যখন সানতোসার অভিজাত কাপেলা হোটেলে পৌঁছান, তখন দুই নেতাকেই সতর্ক এবং গুরুগম্ভীর মনে হচ্ছিল। ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’ বিশেষজ্ঞদের মতে, শুরুতে দুই নেতাই অতীতের মত পরস্পরের উপর কর্তৃত্বের ভাব দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। যদিও একই সঙ্গে দুজনকেই ‘নার্ভাস’ দেখাচ্ছিল। করমর্দনের পরপর দুইজনই অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে যান, পরস্পরের দিকে তাকিয়ে হাসেন এবং পরস্পরকে হাত দিয়ে ধরেন।
তারপর ট্রাম্প গোপন বৈঠকের জন্য কিমকে হোটেলের একটি গ্রন্থাগারের দিকে পথ দেখিয়ে নিয়ে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে শুধুমাত্র তাদের দোভাষীরা ছিলেন। গত শনিবার ট্রাম্প বলেছিলেন, কিম আসলেই কোনো চুক্তি করতে চান কি না সেটি তিনি বৈঠক শুরুর কয়েক মিনিটের মধ্যেই বুঝে যাবেন। বৈঠকের পর ট্রাম্প কিমকে ‘প্রতিভাবান’ বলে বর্ণনা করেন।
উত্তর কোরিয়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া ‘খুব খুব দ্রুত শুরু করবে’বলেও সংবাদ সম্মেলনে আশা ব্যক্ত করেন ট্রাম্প। ‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব’ মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এবং উত্তর কোরিয়ার কর্মকর্তারা আলোচনার ফলোআপ জানাবেন বলেও ওই বিবৃতিতে বলা হয়।
কোরীয় উপদ্বীপে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক মহড়া বন্ধের ঘোষণা দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের জন্য কিছুটা দুঃশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। ওই অঞ্চলের মিত্র দুই দেশকে যুক্তরাষ্ট্র সবসময়ই নিরাপত্তা দিয়ে এসেছে।
ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে সামরিক মহড়াকে ‘উস্কানিমূলক’ এবং ‘অত্যন্ত ব্যয়বহুল’ বলে বর্ণনা করেছেন। উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে পরবর্তী আলোচনা ‘যেভাবে এগুনো উচিত যদি আলোচনার অগ্রগতি সেভাবেই হয় তবে সামরিক মহড়া আর হবে না,’ বলেছেন তিনি।
সম্মেলন শেষে কিম বলেন, “আমরা একটি ঐতিহাসিক বৈঠকে মিলিত হয়েছি এবং অতীতকে পেছনে ফেলে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”
এই বৈঠক হওয়ার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি।
ট্রাম্প-কিম সম্মেলন আপাতত ইতিবাচক বলেও মনে হলেও বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ কিছু আশঙ্কার কথাও বলেছেন। তাদের মতে, এ সম্মেলনে উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে নিজেদের পরমাণু অস্ত্র সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করার দৃঢ় কোনো প্রতিশ্রুতি আদায় করা সম্ভব হয়নি। এমনকি বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় দেশটির জনগণের মানবাধিকার বিষয়েও বিবৃতিতে কিছু বলা হয়নি।

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী