বাংলাপ্রেস অনলাইন: লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনার কাছে মঙ্গলবার সেন্ট পিটার্সবার্গে ২-১ গোলে পরাজিত হয়ে রাশিয়া বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিয়েছে নাইজেরিয়া। কিন্তু আগামী বিশ্বকাপের জন্য দারুন এক অভিজ্ঞতা পুঁজি করে, মাথা উঁচু করেই দেশে ফিরে যাচ্ছে তারুণ্যনির্ভর সুপার ঈগলসরা। রাশিয়া বিশ্বকাপের জন্য ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই তরুণ একটি দল গঠন করেছিলেন কোচ গার্নট রোহর। আত্মবিশ্বাসী পারফরমেন্সের মাধ্যমে রোহরের তরুনরাই প্রমান করেছে আগামীতে তাদের কথাও সকলকে বিবেচনা করতে হবে।
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে পরাজয় দিয়ে নাইজেরিয়া এবারের বিশ্বকাপ আসর শুরু করেছিল। গ্রুপ-ডি’র হতাশাজনক ঐ ম্যাচের আগে দলটির জার্মান কোচ বলেছিলেন, ‘আমাদের দলটি বেশ তরুণ, সম্ভবত তাদের জন্য বিশ্বকাপটা একটু আগে ভাগেই চলে এসেছে। কিন্তু আমি মনে করি ২০২২’র বিশ্বকাপের জন্য তারা প্রস্তুত হয়ে যাবে।’
ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে প্রথমার্ধটা ভাল না কাটলেও দ্বিতীয়ার্ধে সমান তালে লড়াই করেছে এই তরুনরাই। তবে সেট পিস থেকে দুই গোল হজম করার পিছনে খেলোয়াড়দের অভিজ্ঞতার অভাবকেই দায়ী করেছেন রোহর। এরপর আইসল্যান্ডের বিপক্ষেও প্রথমার্ধে সুপার ঈগলসরা একটিও ভাল শট নিতে পারেনি। বিরতিতে কোচ তাদের যাই বলুক না কেন বিশ্রাম থেকে ফিরে এসে লিস্টার সিটি স্ট্রাইকার আহমেদ মুসার দুই গোলে ২-০ ব্যবধানে জয়ী হয়ে আবারো লড়াইয়ে ফিরে আসে নাইজেরিয়া।
প্রিমিয়ার লীগে ক্লডে পুয়েলের দলের হয়ে মুসা নিজেকে প্রমানে ব্যর্থ হলেও সিএসকেএ মস্কোর সাথে আলোচনায় থাকা মুসা রাশিয়ায় বেশ জনপ্রিয়। আর এক ম্যাচে দুই গোল করার সুবাদে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে মেসির পাশাপাশি মুসার দক্ষতা নিয়েও সর্বত্র আলোচনা চলতে থাকে। বিষয়টি নিজেও বেশ উপভোগ করেছেন মুসা।
শেষ ম্যাচটি গতবারের রানার্স-আপ আর্জেন্টিনার জন্য ছিল বাঁচা মরার লড়াই। পরের রাউন্ডে যেতে হলে জয় ভিন্ন বিকল্প নেই এমন চাপ মাথায় নিয়ে মাঠে নামে মেসি বাহিনী। কিন্তু নাইজেরিয়ার গতি ও শারিকির দক্ষতার সাথে অনেক সময়ই পেরে উঠেনি মেসি, রোহো, মাসচেরানোরা। মেসির গোলে এগিয়ে যাওয়া নাইজেরিয়াকে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই পেনাল্টি থেকে সমতায় ফিরিয়েছিলেন ভিক্টর মোসেস। কিন্তু ম্যাচ শেষের চার মিনিট আগে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ডিফেন্ডার মার্কোস রোহোর ভলিতে আর্জেন্টাইনদের জয় নিশ্চিত হয়।
ফুটবল পাগল নাইজেরিয়ার জন্য এই ফলাফলটা ছিল দারুন হতাশার। আরো একবার বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব থেকে তাদের বিদায় নিশ্চিত হলো। বিশ্বকাপে এ পর্যন্ত শেষ ১৪টি ম্যাচে মাত্র দুটিতে জয়ী হয়েছে সুপার আফ্রিকান জায়ান্টরা।
তারপরেও রোহর বিশ্বাস করেন ভবিষ্যতের জন্য আশাবাদী হবার সব কারনই আছে নাইজেরিয়ার সামনে। যে দলে আর্সেনালের এলেক্স ইয়োবি ও লিস্টার সিটির তিন তারকা উইলফ্রিড এনডিডি, কেলেচি ইয়েনাচো ও মুসার মত তরুনরা রয়েছে তাদের নিয়ে ২০২২ সালের কাতার বিশ্বকাপের আগে আশাবাদী হওয়াই যায় বলে বিশ্বাস রোহরের। তিনি বলেন, ‘নাইজেরিয়াও বিষয়টি বুঝতে পারছে। ফলাফলই সব কিছু নয়, খেলোয়াড়দের মানসিকতা, ফেয়ার প্লে এসবও বিশ্বকাপের একটা অংশ।’ খবর: বাসস।
বাংলবপ্রেস/এফএস