বাংলাপ্রেস ডেস্ক: করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় সকল ক্লাসেরই পরীক্ষার সময় উত্তীর্ণ হয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে অনলাইনভিত্তিক ক্লাস-পরীক্ষাকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।
অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষার জন্য ইন্টারনেট বাধ্যতামূলক। এজন্য শিক্ষার্থীদের বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে। আবার অনেকে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগও পাচ্ছে না। এজন্য শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ দেয়ার জন্য আলোচনা করছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শিক্ষা কার্যক্রমকে চালিয়ে নিতে আমরা অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের ওপর গুরুত্বারোপ করছি। ইতোমধ্যে অসংখ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তবে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার ক্ষেত্রে অনেক শিক্ষার্থীর পক্ষেই ইন্টারনেটের ব্যয় বহন করা সম্ভব হচ্ছে না। তাই শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের জন্য বিনামূল্যে ইন্টারনেট প্রদান অথবা স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেয়া যায় কি না সে বিষয়ে মোবাইল অপারেটর কোম্পানি সমূহের সাথে আলোচনা চলছে।
সোমবার (০৬ জুলাই) বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক উপকমিটির আয়োজনে বর্তমান বৈশ্বিক সংকটকালে শিক্ষা বিষয়ে আমাদের করণীয়’ শীর্ষক এক অনলাইন সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রতিটি সংকটই আমাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করে দেয়। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চাহিদা অনুযায়ী আমাদের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে রূপান্তর করতে হলে তথ্য ও প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুলতে হবে। তাই আমাদের হয়তো কিছুদিনের মধ্যে ডিজিটাল শিক্ষা কার্যক্রমে যেতে হতো। করোনা আমাদেরকে এক্ষেত্রে এগিয়ে দিয়েছে। আমরা এখন অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমসহ অফিস-আদালতে বিভিন্ন মিটিং এবং দৈনন্দিন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। আমাদের কিছু সীমাবদ্ধতা আছে, সীমাবদ্ধ থাকবে। অল্প সময়ের মধ্যে আমরা সেই সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠে নতুন এই বাস্তবতার সাথে অভ্যস্ত হয়ে উঠব। করোনা পরবর্তী সময়েও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের সাথে অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম চলমান থাকবে।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, শিক্ষার বিস্তার এবং মেধাবি জাতি তৈরিতে ইন্টারনেটকে ব্যয় নয়, এটিকে রাষ্ট্রের বড় বিনিয়োগ হিসেবে দেখতে হবে। ভবিষ্যত শিক্ষার ক্ষেত্র কেবলমাত্র ক্লাসরুম কেন্দ্রিক হবে না। প্রচিলিত চক-ডাস্টার পদ্ধতির সাথে ক্লাসরুম ব্যবস্থা ডিজিটাল করতে হবে। অন্যথায় চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য মানব সম্পদ তৈরি করতে পারব না।
এদিকে করোনা পরিস্থিতি কত দিনে স্বাভাবিক হতে পারে তা এখনো নিশ্চিত নয় সংশ্লিষ্টরা। ফলে স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়েও উদ্বেগে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও অন্যান্যরা। ফলে পরীক্ষা ছাড়াই স্কুল ও কলেজ শিক্ষার্থীদের পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণের চিন্তা করছে সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, আগামী মাসের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে পরীক্ষা ছাড়া স্কুল পর্যায়ের ছাত্রছাত্রীদের পরবর্তী ক্লাসে উন্নীত করা হতে পারে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী, ১৫ থেকে ২৩ এপ্রিলের মধ্যে প্রথম সাময়িক, ৯ থেকে ২০ আগস্টের মধ্যে দ্বিতীয় সাময়িক এবং ২ থেকে ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যে বার্ষিক পরীক্ষা হওয়ার কথা।
বিপি/কেজে