রওশন আলম পাপুল, গাইবান্ধা থেকে : করোনা ভাইরাসরোধের সরকারি সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইসলামিক রিলিফ বাংলাদেশের অর্থায়নে এসকেএস ফাউÐেশনের উদ্যোগে কোরবানি কর্মসূচিতে গাইবান্ধার দুই উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের করোনা ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত ২ হাজার ১০০ পরিবারের মধ্যে কোরবানির মাংস বিতরণ করা হয়েছে।
রবিবার (২ আগষ্ট) সকালে কোরবানি কর্মসূচির উদ্বোধন করেন সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন সুইট। এসময় উপস্থিত ছিলেন মুক্তিনগর ইউপি সদস্য মো. সামসুজ্জোহা সরকার। সাঘাটা উপজেলার মুক্তিনগর ইউনিয়নের হাট ভরতখালী নূতনকুঁড়ি নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় চত্ত¡রে সাঘাটা উপজেলার সাঘাটা ইউনিয়ন, মুক্তিনগর, ভরতখালী, কামালেরপাড়া ও ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের হতদরিদ্র, অসহায়, প্রতিবন্ধী, স্বামী পরিত্যক্তা ও বিধবা পরিবারের মধ্যে দুই কেজি করে মাংস বিতরণ করা হয়।
কোরবানির মাংস পেয়ে মুক্তিনগর ইউনিয়নের পুটিমারী খাঁ পাড়া গ্রামের খলিল খান (৬০) নিজের ভাষায় বললেন, “হামার কোনো সম্পদ-ট্যাকা পোস্যা নাইও বাবা। কোরবানী দেমো কুনটি থাকি। গতবার কোরবানির ঈদের পর দু-অ্যাকবার খাচি। গ্রামের মানষের কোরবানির অলপো অ্যানা গোশত পাচিনু। সেট্যা বউ-ছোল
নিয়্যা খাচি। এসকেএসোত থাকি এখন যে দুই কেজি গোশত পানু, সেটা বেটি-জামাইয়োক খাওয়ামো”। কোরবানির মাংস পেয়ে ভরতখালী ইউনিয়নের ভরতখালী গ্রামের তহমিনা বেগম (৫০) বললেন, “করোনার জন্নে সোয়ামীর কামাই-ওজগার তেমন নাই, এবারক্যার ঈদোত গরুর গোশত ও মুরগি কিনব্যার পাই ন্যাই। এবারক্যা গ্রামোত একট্যা গরু ও একটা খাসি কোরবানি হচে।
সেই গোশত একবেলা খাচি। এসকেএসের দেওয়া গোশত পায়য়্যা খুবি উপোকার হলো গো বাবা”। একই রকম অনুভূতি জানালেন কোরবানি কর্মসূচির মাংস নিতে আসা আরও অনেকে। ইসলামিক রিলিফের হিউম্যানিটারিয়ান ও রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মঈন উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ইসলামিক রিলিফের অর্থায়নে বিশ্বব্যাপী ৩০টি দেশে এই কোরবানী কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশের ২৮টি জেলায় ১০ হাজার ২০০ কোরবানী করা হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পও যুক্ত আছে। আগের বছরগুলোর মতোই এ বছরও গাইবান্ধায় এসকেএসের মাধ্যমে কোরবানি কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে। এবার ৪২০টি কোরবানি করা হয়েছে।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামিক রিলিফ এর হিউম্যানিটারিয়ান ও রেজিলিয়েন্স প্রোগ্রামের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মঈন উদ্দিন আহম্মেদ, এসকেএস ফাউÐেশনের সহকারি পরিচালক খন্দকার জাহিদ সরওয়ার, সোশ্যাল এন্টারপ্রাইজের সমন্বয়কারী আবু সাঈদ সুমন, সমন্বয়কারী মো. জাহিদুল ইসলাম, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. আবু সোহেল, মো. আশরাফুল আলম, মো. ইউনুস আলী, মো. আব্দুস সামাদ, মো. বাহারাম খান, মো. উজ্জ্বল মিয়া, মো. মশিউর রহমান প্রধানসহ অন্যান্যরা। উল্লেখ্য, দারিদ্র ও দুর্ভোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা ইসলামিক রিলিফ ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সদর দপ্তর যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অবস্থিত। ইসলামিক রিলিফের কার্যক্রম ছড়িয়েছে বিশ্বের ৪৫টি দেশে।
বিপি/আর এল