Home অন্যান্যভ্রমণ থার্পু চুল্লি জয় করলেন দুই বাংলাদেশি তরুণ

থার্পু চুল্লি জয় করলেন দুই বাংলাদেশি তরুণ

by bnbanglapress
A+A-
Reset

বাংলাপ্রেস ডেস্ক: থার্পু চুল্লি, নেপালের হিমালয় ও অন্নপূর্ণা রেঞ্জের একটি পাহাড়। জনপ্রিয় ট্রেক অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্প বা এবিসিতে গেলে দেখা যায় মাথা উঁচু করে বড় বড় পাহাড়ের আদরের ছোট ভাই হয়ে দাঁড়িয়ে আছে থার্পু চুল্লি। যার উচ্চতা ৫ হাজার ৬৬৩ মিটার বা ১৮ হাজার ৫০০ ফুটেরও বেশি। ৬ হাজার মিটারের কম উচ্চতা হলেও এই পাহাড়ে ওঠা অতো সহজ নয়। পাশাপাশি এই পাহাড়ের ওঠার রাস্তায় ভাজে ভাজে মিশে আছে দারুণ অ্যাডভেঞ্চার আর স্বর্গীয় সৌন্দর্য। থার্পু চূল্লির চূড়ার আছে অসাধারণ রূপ। যা পর্বতারোহীদের তীব্রভাবে আকর্ষণ করে।
সেই পাহাড় জয় করেছেন বাংলাদেশের দুই যুবক। সম্প্রতি নেপালের পাহাড়ে এই অভিযানে অংশ নেন অ্যাডভেঞ্জার ট্যুর গ্রুপ অল্টিটিউড হান্টারের উদ্যাক্তা ফজলুর রহমান শামিম ও তৌফিক আহমেদ তমাল। গত ২৪ ডিসেম্বর বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পাহাড়ের উপরে উঠতে সক্ষম হয় এই টিম।
ঢাকা থেকে ১২ ডিসেম্বর কাঠমান্ডুর থামেল গিয়ে রেশন, ইকুইপমেন্ট গুছিয়ে ১৪ ডিসেম্বর পোখরা যান তারা। কাঠমান্ডু থেকে অভিযানে যুক্ত হন দুই প্রধান সহযোগী বা গাইড ফুরসেম্বা শেরপা এবং মিংমা শেরপা। যাদের কেটু, কাঞ্চনজঙ্ঘাসহ বেশ কয়েকবার এভারেস্ট আরোহনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। পোখারা থেকে ১৫ ডিসেম্বর রওনা দিয়ে চারদিন মধ্যে এই দলটি পৌঁছায় অন্নপূর্ণা বেস ক্যাম্পে। ২১ ডিসেম্বর শুরু হয় মূল অভিযান।
প্রথমদিন গ্লেসিয়ার পার হয়ে থার্পু চুল্লি বেস ক্যাম্প করতে সক্ষম হন ৫ জনের দল। পরের দিন ২২ ডিসেম্বর হাইক্যাম্পের উদ্দেশে বের হন তারা। তবে অতিরিক্ত স্নো-ফল থাকায় রুট বা রাস্তা তৈরি করতে সময় বেশি লাগে তাদের। তাই হাইক্যাম্পের নিচে মধ্যবর্তী আরেকটি ক্যাম্পে থাকতে বাধ্য হন বাংলাদেশি অভিযাত্রীরা। সেটা অবশ্য সম্ভব হয় তার পরদিন। অর্থ্যাৎ ২৩ ডিসেম্বর অবশেষে থার্পু চুল্লি পাহাড়ে হাই ক্যাম্প স্থাপন করতে পারেন শেরপারা। যেখানে ক্যাম্প করা হয় তার উচ্চতা ছিল ৫ হাজার ১২৬ মিটার। হাই ক্যাম্প থেকে রাত দুইটায় শুরু হয় সামিট পুশ বা শিখরে ওঠার অভিযান।
অভিযানে অংশ নেওয়া শামীম ও তমাল জানান, উঠতে উঠতে তারা দেখেন এক পাশে দাঁড়িয়ে আছে পৃথিবীর দশম সর্বোচ্চ উচ্চতার ডেডলি অন্নপূর্ণা মেসিভ। তার পাশেই অন্নপূর্ণা সাউথ এবং হিমচুলি। অন্যপাশে আছে এখন পর্যন্ত আরোহন না হওয়া মাউন্ট মাছা পুছারে, গংগাপূর্ণা, গ্লেসিয়ার ডোম আর সিংগু চুল্লি। থার্পু চুল্লি ঘিরে আছে এসব রথী-মহারথী পাহাড়।
শামীম ও তমাল বলেন, পর্বতারোহণের প্রধান প্রধান বিষয়গুলোর মুখোমুখি হওয়া যায় থার্পু চুল্লি অভিযানে। যেমন শুরুতেই ক্রস করতে হবে অন্নপূর্ণা গ্লেসিয়ার, তারপরে পাথুরে বোল্ডার পার হয়ে রকফল জোনের মতো ভয়ঙ্কর কিছুর মুখোমুখি হতে হয়। তারপর রিজলাইন (খাড়া পাহাড়ের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সরু রাস্তা) ধরে থার্পু চুল্লির চুড়ায় আরোহন করতে হবে। কিন্তু শীতকালে এই ব্যাপারগুলো অনেক অসাধ্য হয়ে যায়। লাগাতার বরফ ঝড় আর প্রচণ্ড ঠান্ডায় রুট ওপেন থেকে শুরু করে সামিটে পৌঁছাতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ সামনে থাকে।
সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সফলভাবে থার্পু চুল্লি অভিযান করতে সক্ষম হন বাংলাদেশি যুবকরা। গত ২৪ ডিসেম্বর বেলা ১২টা ২০ মিনিটে বেশ ঝুকিপূর্ণ শীতকালীন থার্পু চুল্লি সামিট করেন তৌফিক আহামেদ তমাল। ঝুঁকি দেখা দেওয়ায় অল্পকিছু উচ্চতা বাকি রেখে সামিট টিমের সঙ্গে নেমে পড়েন ফজলুর রহমান শামীম।
এই অভিযান নিয়ে অভিযাত্রী তৌফিক আহমেদ তমাল বলেন, উচ্চতা শিকারের উদ্দেশে শিখরে যাওয়া। পাহাড়ের কাছে মানুষের সত্তা যে কত ক্ষীণ তা এখানে উঠলেই বুঝতে পারা যায়।
অল্টিটিউড হান্টারের টিম লিডার ফজলুর রহমান শামিম বলেন, এই অভিযানে দল হিসেবে আমরা সফল হয়েছি। আর সবচেয়ে বড় সফলতা হলো সবাই সুস্থভাবে ফিরে আসা। কারণ সম্প্রতি নেপালের বিভিন্ন অভিযানে খারাপ আবহাওয়ার কারণে কয়েকটা দুর্ঘটনা ঘটেছে। আমরাও একটু ভয়ঙ্কর অবস্থায় পড়েছিলাম। ছোট্ট ভুল করলে আমরা ফিরে আসতে পারতাম না।

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

banglapress24

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

১১১ শেলডন রোড # ১৮৮৪, ম্যানচেস্টার, কানেকটিকাট ০৬০৪২

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৫ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী