সুলতানা মাসুমা, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: ১১ নং হাজিরপাড়া ইউনিয়নের মিরপুর উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচনে ৬ সদস্য প্রার্থীকে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এরমধ্যে তিনজনকে দেশীয় অস্ত্র ঠেকিয়ে
প্রত্যাহার ফরমে স্বাক্ষর নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বুধবার (১৬ মার্চ) সকালে বিদ্যালয়ের বর্তমান সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ বাকীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দাতা সদস্য সহিদ উদ্দিন চন্দ্রগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
এরআগে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) বিকেলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইমরান হোসেন ও উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা নির্বচনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু তালেবের কাছেও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। রাতে জেলা শহরের একটি পত্রিকা কার্যালয়ে দাতা ও অভিভাবক সদস্যদের ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনে একই অভিযোগ আনা হয়। এসময় হাজিরপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) এহতেশাম উদ্দিন মিঠু, জমি দাতা সদস্য অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য পরিদর্শক শহিদ উদ্দিন, স্থানীয় জসিম উদ্দিন ও সুলতান সালাউদ্দিন ফাহাদ।ফিরোজ মাহমুদ বাকী সদর উপজেলার উত্তর জয়পুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বহিস্কৃত সভাপতি। অন্য অভিযুক্তরা হলেন চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন টিটু ও হাজিরপাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-আহবায়ক মো. জাবেদ।
অভিযোগ সূত্র জানা যায়, ৩০ মার্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচন। সোমবার (১৪ মার্চ) প্রার্থীদের তথ্যাবলি যাচাইবাছাই করা হয়। দাতা সদস্যসহ ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার জন্য বৈধতা পায়। এরমধ্যে ফিরোজ মাহমুদ বাকী ও তার অনুসারী সালাউদ্দিন টিটু, আনোয়ার হোসেন ৩ জন প্রার্থীকে দেশীয় অস্ত্রের মুখে জিম্মি করেন। একপর্যায়ে তিন প্রার্থী মো. লিটন, মো. সবুজ ও আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে জোরপূর্বক প্রত্যাহার ফরমে সই নেয় তারা। এসব ঘটনায় আইনের আশ্রয় নিলে হত্যা করে লাশ গুম করে দেওয়া হবে বলে বাকীসহ তার অনুসারীরা হুমকি দেয়। এ ভয়ে তারা বাড়ি ছাড়া রয়েছেন। এছাড়া আবদুর রহিম বাদশা, ইকবাল হোসেন, মিজানকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে।
হাজিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) এহতেশাম উদ্দিন মিঠু বলেন, বাকী গত ১০ বছর নির্বাচন দিচ্ছেন না। তিনি কৌশলে সিলেকশানের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেন। বর্তমান কমিটির অধিকাংশই অশিক্ষিত। তারা বিদ্যালয়ের উন্নয়নে কোন কাজ করছেন না। শিক্ষিত কয়েকজন প্রার্থী হওয়ায় এখন বাকী বাধা সৃষ্টি করছেন।
জমি দাতা সদস্য শহিদ উদ্দিন বলেন, বাকী জোরপূর্বক সদস্য প্রার্থীদের কাছ থেকে প্রত্যাহার ফরমে সাক্ষর নিয়েছেন। তার লোকজন ওই প্রার্থীদের হত্যাসহ বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে। তারা এখন ভয়ে বাড়ি ছাড়া। সকল প্রার্থীদের অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ বাকী বলেন, কাউকে হুমকি দেওয়া হয়নি। অভিযোগটি মিথ্যে। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, ঘটনাটি আমাকে জানানো হয়েছে। ভূক্তভোগীদের আসতে বলেছি। তারা অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
চন্দ্রগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোসলেহ উদ্দিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। যাদের হুমকি দেওয়া হয়েছে তাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিপি/কেজে