সুলতানা মাসুমা, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরে যুবদল নেতা মো. মিজান ওরফে বোমা মিজান হত্যা মামলায় সব আসামিকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।
এদিকে, রায় শুনে আদালতে উপস্থিত মামলার বাদী শিউলি আক্তার ভেঙে পড়েছেন। এসময় বক্তব্য জানতে চাইলে কোনো কিছু না বলেই চলে যান তিনি।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে হত্যার ঘটনার অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। এতে আদালত তাদের বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
খালাসপ্রাপ্তরা হলেন, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের সাবেক স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মনির হোসেন, জামাল হোসেন, ইসমাইল হোসেন, আবু সিদ্দিক মিশু, ফয়সাল, মোরশেদ আলম ও বেলাল হোসেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মিজান মান্দারী ইউনিয়নের মোহাম্মদনগর গ্রামের আবদুল হামিদ মুন্সির ছেলে। তিনি ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে ডাকাতি, ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধের অভিযোগ ছিল।
মামলার এজাহার সূত্র জানায়, ২০১৪ সালের ১৩ অক্টোবর রাতে অভিযুক্তরা ঘর থেকে মিজানকে ডেকে নিয়ে যান। দরজা খুলে মামলার বাদী ও মিজানের স্ত্রী শিউলি আক্তার অভিযুক্তদের দেখতে পান। এরপর থেকে মিজান ঘরে ফেরেননি। এতে শিউলি অভিযুক্ত মনিরসহ কয়েকজনের বাড়িতে গিয়ে স্বামীর খোঁজ করেন। কিন্তু কেউই কোনো কিছু বলেননি। ১৬ অক্টোবর সকালে মোহাম্মদনগর গ্রামে মনিরদের বাড়ির পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ওই বছরের ১৯ অক্টোবর সাতজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও আটজনকে আসামি করে সদর মডেল থানায় মামলা করেন শিউলি। পরবর্তীকালে মামলাটি একাধিকবার তদন্ত হয়। তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন লক্ষ্মীপুর মডেল থানার এসআই হিমেল রায়, পুষ্প বরণ চাকমা ও জেলা সিআইডির এসআই মো. শাহজাহান। ২০১৮ সালের ২৯ এপ্রিল সাতজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। দীর্ঘ শুনানি ও ১১ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত আজ এ রায় দেন।
খালাসপ্রাপ্ত আসামি ইসমাইল হোসেন বলেন, আমাদের ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে। আদালতে আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। আমরা নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছি।
লক্ষ্মীপুর জেলা যুবদলের সভাপতি রেজাউল করিম লিটন বলেন, আসামিরা যদি খালাস হয়ে যায়, তাহলে মিজানকে হত্যা করেছে কে? আমরা এ রায়ে নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা এ রায় মানি না।
বিপি/কেজে