গাজীপুর প্রতিনিধি: গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। তিনি সাবেক মেয়র ও আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা জাহাঙ্গীর আলমের মা। বেসরকারি ফলাফলে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন পেয়েছেন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খান নৌকা প্রতীকে পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট।
এই নির্বাচনে মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী টেবিল ঘড়ি প্রতীকের জায়েদা খাতুনের সঙ্গে নৌকা প্রতীকের আজমত উল্লা খানের ভোটের লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। ভোট গণনার প্রথমদিকে দুই প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান ছিল কম। ফলে উভয় প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে রুদ্ধশ্বাস অবস্থা সৃষ্টি হয়। মোট ৪৮০টি কেন্দ্রের ফলাফলে শেষ পর্যন্ত স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন বেসরকারিভাবে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট পেয়ে জয়ী হন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত সিটি করপোরেশনের ৪৮০টি কেন্দ্রে ইভিএমে একযোগে চলে ভোটগ্রহণ। অধিকাংশ ভোটার এ পদ্বতিতে ভোট দিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। ভোট নিয়ে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার খবর পাওয়া যায়নি।
নিরাপত্তা জোরদার করায় ভোটারদের আগ্রহ লক্ষ্য করা গেছে। সকালের দিকে ভোটারের উপস্থিতি একটু কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। ভোটকেন্দ্রের নির্দিষ্ট সীমানার বাইরেও ছিল উৎসুক মানুষের উপস্থিতি। মহানগরের ভোট পর্যবেক্ষণ করতে অনেক বাড়িতে ভোটের আগের দিন এমনকি ভোটের দিন আত্মীয়-স্বজনও বেড়াতে আসেন।
কেন্দ্রে কেন্দ্রে পুলিশ মোতায়েনসহ বিজিবি, র্যাব, স্ট্রাইকিং ফোর্স কেন্দ্র থেকে কেন্দ্রে টহল দিতে দেখা গেছে। নির্বাচন উপলক্ষে পুলিশ, এপিবিএন এবং আনসার ভিডিপি সদস্য মিলিয়ে প্রায় ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়। নির্বাচন উপলক্ষে সিটি করপোরেশন এলাকায় সাধারণ ছুটি ছিল।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এটা তৃতীয় নির্বাচন। এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আট প্রার্থী। তাদের মধ্যে হেভিওয়েট তিন প্রাথী আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান ভোট দিয়েছেন টঙ্গীর দারুস সালাম মাদরাসা কেন্দ্রে, সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীরের মা স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন ভোট দেন মহানগরের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এবং অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহনূর ইসলাম রনি ভোট দেন টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল কেন্দ্রে।
অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে টঙ্গীর ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের দারুস সালাম মাদরাসা কেন্দ্রে ভোট দেন। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম শহীদ আহসান মাস্টার জেনারেল হাসপাতাল কেন্দ্রে ভোট দেন। আরেক হেভিওয়েট প্রার্থী জায়েদা খাতুন সকাল ১০টার দিকে মহানগরের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভোট দেন। তার ছেলে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম একই কেন্দ্রে ভোট দেন। ভোট দেওয়ার পরে তারা ভোট সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং জয়ের ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নির্বাচনে আট মেয়র প্রার্থী, ২৪৬ জন সাধারণ কাউন্সিলর এবং ৭৯ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এদের মধ্যে একজন মেয়র, ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৫৭ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৯ জন নারী কাউন্সিলর নির্বাচিত হবেন। অবশ্য একজন সাধারণ কাউন্সিলর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
বিপি>আর এল