রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহী মহানগরীর রুয়েট ও রা:বি সংলগ্ন ফ্লাইওভারের রাস্তায় পুলিশ অফিসার পরিচয় ব্যবহার করে তাহসিনুন আমীন রাহী (১৬) নামের এক স্কুল ছাত্রের কাছ থেকে নগদ প্রায় আড়াই হাজার টাকা-সহ একটি নোকিয়া বাটুম মোবাইল ফোন ছিনতাই করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম ইমদাদুল হক। গত বুধবার (২৪ মে) বিকাল ৪টায় এ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। ওইদিন সন্ধ্যায় ক্ষতিগ্রস্থ রাহী বাদী হয়ে মতিহার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি মহানগরীর চন্দ্রিমা থানাধীন চকপাড়া (পদ্মা আবাসিক) এলাকার রুহুল আমীনের ছেলে। সে দশম শ্রেণীর ছাত্র। অভিযুক্ত ভুয়া পুলিশ অফিসার ইমদাদুল হক দূর্গাপুর থানার চককৃষ্ণপুর গ্রামের ইব্রাহিম সরদারের ওরফে ইব্রার ছেলে। পরবর্তীতে উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে রবিবার (২৮ মে) নগরীর মতিহার থানায় পেনাল কোডের ১৭০/৩৯২ ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা রুজু হয়েছে। মামলা নং ২৯৩৬।
থানায় করা অভিযোগ, মামলা ও ক্ষতিগ্রস্থ কিশোর রাহীর দেয়া তথ্য থেকে জানা গেছে, গত বুধবার (২৪ মে) বিকাল ৪ টার দিকে রা:বি ও রুয়েটের মধ্যস্থানের নতুন ফ্লাইওভারে পাশে দাঁড়িয়ে রাহী সিগারেট খাচ্ছিল। ওই সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি পালসার ব্রান্ডের একটি মোটরসাইকেল নিয়ে রাহীর কাছে এসে থামে। বাইক থামিয়েই সে নিজেকে পুলিশ অফিসার পরিচয় দিয়ে রাহীকে নানাাবধি অযৌতিক প্রশ্নের বেড়াজালে ফেলে বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি মাধ্যমে কিশোর রাহীর ভেতর ভয়ভীতি সঞ্চারের অপচেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে পুলিশ দাবিদার অভিযুক্ত ওই ব্যক্তি রাহীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দোয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে রাহীর পকেট সার্চ করে মানিব্যাগে থাকা নগদ ২,৬০০/- (ছাব্বিশ শত টাকা) ও একটি নোকিয়া মোবাইল ফোন জোরপূর্বক কেড়ে নিয়ে তৎক্ষণাৎ ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ভুয়া পুলিশ অফিসার স্থান ত্যাগ করা মাত্রই রাহীর সামনে দিয়ে তার প্রতিবেশি রা:বি শিক্ষার্থী দূর্জয় বাইক নিয়ে যাচ্ছিল। রাহী সময় ক্ষেপন না করে দূর্জয়কে অভিযুক্ত ব্যক্তির বাইক অনুসরণ করতে বলে। বিষয়টি বুঝতে পেরে ওই ব্যক্তি কেড়ে নেওয়া অপর একটি এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ছুড়ে ফেলে পালিয়ে যাবার চেষ্ঠা করে। একপর্যায়ে পুলিশ অফিসার পরিচয়দানকারী ছিনতাইকারী মোটরসাইকেল নিয়ে রাবি’র অভ্যান্তরে কাজলা গেইট সংলগ্ন সিয়ামুন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের নিচে মোটরসাইকেল রেখে ভেতরে প্রবেশ করে। রাহী ও দূর্জয় সিয়ামুন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টে প্রবেশের চেষ্টা করলে ওই রেস্টুরেন্টের মালিক ইব্রাহিম হোসেন মুন তাদেরকে প্রবেশে বাঁধা দেন। ভূক্তভোগী ও ক্ষতিগ্রস্থ স্কুল ছাত্র রাহী রেস্টুরেন্টের মালিককে পুরো ঘটনা খুলে বলেন। তার কথা শুনে মুন বলেন, তোমার সাথে অন্যায় হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করো। আমি সহযোগীতা করবো। কিন্তু, আমার রেস্টুরেন্টের ভেতরে কোন প্রকার ঝামেলা করা যাবে না বলে রাহী ও দূর্জয়কে রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করতে না দিয়ে কৌশলে ওই ছিনতাইকারীকে মুন রক্ষা করেন বলে অভিযোগ রাহীর। সিয়ামুন চাইনিজ রেস্টুরেন্টের মালিক ইব্রাহিম হোসেন মুনের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি সুকৌশলে অন্যদিকে মোড় নেবার চেষ্টা করেন।
এদিকে, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের ও পরবর্তীতে মামলা হবার ভয়ে তিনি ঘটনার পরেরদিনই সিলেটের উদ্দেশ্যে রাজশাহী ত্যাগ করেন বলে জানান, ক্ষতিগ্রস্থ স্কুল ছাত্র ও (হাফেজ) রাহী। উল্লেখ্য যে, অভিযুক্ত এই ইমদাদ নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে থাকেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিচয় সাপেক্ষে বিভিন্ন স্থানে প্রশ্নবিদ্ধ নানা ধরনের কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করে থাকেন বলেও অভিযোগ আছে। পুলিশ অফিসার পরিচয়দানকারি’র বিরুদ্ধে মতিহার ও চন্দ্রিমা থানায় রয়েছে শ্লিলতাহানী ও পর্ণগ্রাফি আইনে মামলা। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় রয়েছে বেশকিছু মামলাসহ ভুক্তভোগীদের নানামুখি অভিযোগ। তাদের অবস্থান রা:বি অভ্যান্তরে সিয়ামুন চাইনিজ রেষ্টুরেন্টের নিচ তলায় একটি ঘরে। তাদের আশ্রয় প্রশ্রয় দাতা ইব্রাহিম হোসেন মুন। তবে তিনি বলেন, ইমদাদ আমার ভাড়াটিয়া।
বিপি/কেজে