Home আন্তর্জাতিক যুক্তরাষ্ট্রে সমকামী ও বর্ণবাদ বিষয়বস্তু সম্বলিত শতাধিক বই নিষিদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রে সমকামী ও বর্ণবাদ বিষয়বস্তু সম্বলিত শতাধিক বই নিষিদ্ধ

by bnbanglapress
A+A-
Reset

নোমান সাবিত: সমকামী, ট্রান্সজেন্ডার ও বর্ণবাদীদের বিষয়বস্তু উল্লেখ থাকায় যুক্তরাষ্ট্রের স্কুল ও লাইব্রেরিগুলোতে বিপুসংখ্যক বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) আমেরিকান লাইব্রেরি অ্যাসোসিয়েশন (এএলএ) বলেছে, এলজিবিটিকিউ জনগোষ্ঠী ও বর্ণবাদসহ নানা কারণে এসব বই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। লর্ড অব দ্য ফ্লাইস এবং টু কিল অ্যা মকিংবার্ডের মতো সাধারণ পাঠ্য উপন্যাসগুলোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে ১৭টি অঙ্গরাজ্যে ১০০টিরও বেশি বই নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করা হয়েছে। এ অঙ্গরাজ্যগুলো হলো কলোরাডো, কানেকটিকাট, ফ্লোরিডা, ইডাহো, ইলিনয়, আইওয়া, কেনটাকি, ম্যারিল্যান্ড, মিজৌরি, নর্থ ক্যারোলিনা, ওহাইও, পেনসিলভানিয়া, টেনেসি, টেক্সাস, ইউটাহ, ভার্জিনিয়া ও উইসকনসিন।
ট্রান্সজেন্ডার একটি সাধারণ শব্দ যা এমন লোকদের বর্ণনা করে যাদের লিঙ্গ পরিচয়, বা পুরুষ, মহিলা বা অন্য কিছু হওয়ার তাদের অভ্যন্তরীণ অনুভূতি, জন্মের সময় তাদের নির্ধারিত লিঙ্গের সাথে মেলে না। বিপরীতে, সিসজেন্ডার শব্দটি এমন লোকদের বর্ণনা করে যাদের লিঙ্গ পরিচয় তাদের জন্মের সময় নির্ধারিত লিঙ্গের সাথে সারিবদ্ধ করে। ন্যাশনাল সেন্টার ফর ট্রান্সজেন্ডার ইকুয়ালিটি অনুসারে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় ১৪ লাখ (১.৪ মিলিয়ন)ট্রান্সজেন্ডার রয়েছে, যারা বিভিন্ন বিভাগে পড়াশোনা করেন।
এএলএ অনুসারে, ২০২৩ সালে সেন্সরশিপের জন্য ৪ হাজার ২৪০টি আলাদা বই তালিকাভুক্ত করা হয়, যা এর আগের দুই বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। ২০২২ সালে ২ হাজার ৫৭১টি বই এবং ২০২১ সালে ১ হাজার ৬৫১টি বই সেন্সরশিপের আওতায় আনা হয়েছিল। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ৬৫ শতাংশ বেশি বই সেন্সর করা হয়েছে।
এ ছাড়া গত বছর লাইব্রেরির বিভিন্ন বই, শিক্ষা উপকরণ ও অন্যান্য জিনিস নিষিদ্ধ করার বিষয়ে ১ হাজার ২৪৭টি দাবি নথিভুক্ত করেছে সংস্থাটি।
বই নিষিদ্ধকরণকে পড়ার স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ বলে অভিহিত করেছেন এএলএ সভাপতি এমিলি দ্রাবিনস্কি। তিনি বলেন, ‘যেসব বই নিষিদ্ধ করা হচ্ছে, এগুলো এলজিবিটিকিউ জনগোষ্ঠী ও বিভিন্ন বর্ণের মানুষের ওপর গুরুত্বারোপ করে। (সাংস্কৃতিক ও জাতিগত) বৈচিত্র্যের কারণেই আমাদের সম্প্রদায় ও দেশ শক্তিশালী। বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করে এমন লাইব্রেরিগুলো জ্ঞান এবং সহানুভূতি প্রচার করে, যা কিছু মানুষ গোপন করতে চায় বা নির্মূল করতে চায়।’
সেন্সরশিপের আওতায় থাকা বইয়ের শিরোনামের সংখ্যাও বেড়েছে। পাবলিক লাইব্রেরিতে এই হার বেড়েছে ৯২ শতাংশ এবং স্কুলে বেড়েছে ১১ শতাংশ।
এএলএ বলছে, তারা আগামী এপ্রিলে সেন্সরশিপের আওতায় থাকা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বইয়ের তালিকা প্রকাশ করবে। তবে ২০২২ সালে সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়া বই ছিল মাইয়া কোবাবের লেখা ‘জেন্ডার কুইয়ার: এ মেমোয়ের’, জর্জ এম জনসনের লেখা ‘অল বয়েজ আর নট ব্লু’, টনি মরিসনের লেখা ‘দ্য ব্লুয়েস্ট আই’ এবং স্টিফেন চবোস্কির লেখা ‘দ্য পার্কস অব বিইং অ্যা ওয়ালফ্লাওয়ার’।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে, বিশেষ করে রিপাবলিকান পার্টি নিয়ন্ত্রিত অঙ্গরাজ্যগুলোতে ধর্মীয়-রাজনৈতিক সক্রিয়তা জোরদার হওয়ায় বই নিষিদ্ধ আন্দোলন জোরদার হয়েছে।
দ্রাবিনস্কি বলেন, ‘এ দেশের প্রত্যেকটি সম্প্রদায়ের জন্যই লাইব্রেরি একটি অত্যাবশ্যকীয় প্রতিষ্ঠান। লাইব্রেরি পেশাজীবীরা, যারা আমাদের পড়ার অধিকার রক্ষায় তাঁদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের কর্মসংস্থান এবং সুস্থতার জন্য হুমকির সম্মুখীন হচ্ছেন।’

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী