বাংলাপ্রেস ডেস্ক: উত্তর-পূর্ব ভারতের আসামে বাঙালি মুসলমানদের বাংলাদেশি মুসলিম বলে তকমা দিয়েছেন রাজ্যের বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা। গত শনিবার (২৩ মার্চ) তিনি রাজ্যের ‘মিয়া’ মুসলমানদের উদ্দেশে কড়া বার্তা দেন। আসামে থাকতে হলে তাদের ওপর কিছু শর্ত আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এগুলোর মধ্যে অন্যতম বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ বাদ দিতে হবে। তাদেরকে নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করতে হবে। সেই সঙ্গে দুটির বেশি সন্তান নেয়া যাবে না বলে উল্লেখ করেন তিনি। খবর লাইভ মিন্ট।
বিজেপিদলীয় এই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ারা (মুসলমানরা) আসামের মূল নিবাসী কি না, তা ভিন্ন বিষয়। আমরা বলছি, তারা যদি মূল নিবাসী হওয়ার চেষ্টা করেন, তাতে কোনো সমস্যা নেই। তবে এ জন্য তাদের বাল্যবিবাহ এবং বহুবিবাহ ত্যাগ করতে হবে এবং নারীশিক্ষাকে উৎসাহিত করতে হবে। সেই সঙ্গে দুটির বেশি সন্তান নেয়া যাবে না।’
বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যের হিমন্তর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ২০২৩ সালে দুটি পর্যায়ে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে মধ্যবয়সী মুসলমান পুরুষদের গ্রেপ্তার করে। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, বেশ কয়েকজন একাধিক বিয়ে করেছেন এবং তাঁদের স্ত্রীরা সমাজের দরিদ্র অংশ থেকে আসা নারী। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই এ অভিযোগ করেছিলেন।
যদিও ওই ঘটনার পর বাল্যবিবাহ রোধের অজুহাতে মুসলমান সমাজের পুরুষদের হেনস্তা করার অভিযোগ তোলে আসাম ও ভারতের বিভিন্ন সংখ্যালঘু ও মানবাধিকার সংগঠন। বেশ কয়েক হাজার পুরুষকে গত বছরের গোড়ায় গ্রেপ্তার করা হয়েছিল, যাঁদের অনেকের বিরুদ্ধে এখনো মামলা চলছে। ফলে ওই ব্যক্তিদের পরিবার প্রবল আর্থিক সংকটে পড়ে বলে স্থানীয় মানুষ সাংবাদিক দের জানিয়েছিলেন। নির্বাচনের আগে মার্চের গোড়ার দিকে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বাস্তবায়নের পর হিমন্ত বিশ্বশর্মার এ মন্তব্য আসামে নতুন করে বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রতিবারই আসাম রাজ্যে বাঙালি মুসলমানদের বিরুদ্ধে কথা বলতে শুরু করেন বিজেপিদলীয় এই মুখ্যমন্ত্রী। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
বিপি/টিআই