বাংলাপ্রেস ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে নির্বাচনকে সামনে রেখে অনুষ্ঠিত বিতর্কে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিপরীতে অনেকটাই নিষ্প্রভ ছিলেন জো বাইডেন। ট্রাম্পের সামনে তাঁর এই বিপর্যয়ের কারণে অনেক ডেমোক্রেটিক সমর্থকের মনে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। তবে বাইডেন নিজে এখনও যথেষ্ট আশাবাদী। শনিবার একটি তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে আগামী নভেম্বরে নিজের জয়ের ব্যাপারে বড় অর্থদাতাদের আশ্বস্ত করেছেন বাইডেন।
নিউইয়র্ক ও নিউজার্সিতে ওই তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন তাঁর সঙ্গে ছিলেন। অনুষ্ঠানে জিল দৃঢ়ভাবে ৮১ বছর বয়সী স্বামীর পক্ষে কথা বলেছেন। এদিন এক সমাবেশে জিল বলেন, জো এই কাজের জন্য শুধু সঠিক ব্যক্তিই নন, তিনি এ দায়িত্বের জন্য একমাত্র ব্যক্তি।
গত বৃহস্পতিবার রাতে জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের আটলান্টায় সিএনএনের স্টুডিওতে ট্রাম্প ও বাইডেনের মধ্যে ওই বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়। বিতর্কে বাইডেন বারবার কথার খেই হারিয়ে ফেলছিলেন। ট্রাম্পের সামনে তাঁর কথা আটকেও যাচ্ছিল। ওই বিতর্কের পর থেকে বাইডেনের বয়স এবং তাঁর মানসিক সক্ষমতা নিয়ে থাকা সংশয় ও গুঞ্জন আরও জোরালো হয়েছে।
ওই বিতর্কের পর বাইডেনের নির্বাচনী প্রতিযোগিতা থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত কিনা বা ডেমোক্রেটিক পার্টি তাঁর বিকল্প প্রার্থী খুঁজবে কিনা– সে বিষয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। নিউইয়র্ক টাইমসের সম্পাদকীয় বোর্ডসহ অনেক রাজনৈতিক ধারাভাষ্যকার ওই বিতর্কের পর বাইডেনকে সরে দাঁড়াতে বলেছেন।
তবে এখন পর্যন্ত নির্বাচিত কোনো শীর্ষ পর্যায়ের ডেমোক্রেটিক নেতা বাইডেনকে এমন কথা বলেননি। বরং সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এবং বিল ক্লিনটন শুক্রবার প্রকাশ্যে বাইডেনের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন।
সেদিন নর্থ ক্যারোলিনায় বাইডেন নিজেও জ্বালাময়ী এক বক্তৃতায় বলেন, আমি আগের মতো সহজে হাঁটতে পারছি না। আমি আগের মতো সাবলীলভাবে কথা বলতে পারছি না। আমি আগের মতো বিতর্কেও ভালো করতে পারছি না। কিন্তু আমি জানি কীভাবে সত্য বলতে হয়। আমি জানি কীভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। পড়ে গেলও ফের উঠে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। শনিবার এক সমাবেশে বাইডেন আরও বলেন, ওই রাতটা আমার জন্য দারুণ কিছু ছিল না, ট্রাম্পের জন্যও না। আমি আপনাদের বলছি, এই নির্বাচনে আমরাই জিততে চলেছি।
নিউইয়র্কে সমাবেশ শেষ করে স্ত্রীকে নিয়ে নিউজার্সিতে যান বাইডেন। সেখানে তিনি রাজ্যের ডেমোক্রেটিক গভর্নর ফিল মুরফির সঙ্গে একটি তহবিল সংগ্রহের সমাবেশে যোগ দেন। সেখানে বাইডেন বলেন, বিতর্কের পর যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, আমি সেটা বুঝতে পারছি। ওই রাতটা আমার ভালো যায়নি; কিন্তু আমি আরও কঠোর লড়াই করতে চলেছি।
এদিকে রিপাবলিকান দলীয় প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প বর্তমানে নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। আগামী নভেম্বরের নির্বাচনে ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে সম্ভবত তাঁর স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্পকে কাজের সময় খুব বেশি পাশে পাবেন না। এ নিয়ে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মেলানিয়া ট্রাম্প চুক্তি করেছেন বলে পেইজ সিক্স জানিয়েছে।
মার্কিন একটি সূত্রের বরাতে বলা হয়েছে, মেলানিয়া তাঁর স্বামীর সঙ্গে একটি চুক্তি করেছেন। চুক্তি অনুযায়ী, ট্রাম্প যদি প্রেসিডেন্ট পদে বিজয়ী হন, তাহলে তাঁকে সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘণ্টার জন্য ফার্স্ট লেডির দায়িত্বে থাকতে হবে না। ছেলে ব্যারন ট্রাম্পের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে চান সাবেক ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। এ নিয়ে চুক্তি হয়েছে তাদের মধ্যে। ১৮ বছর বয়সী ব্যারন শিগগির নিউইয়র্কের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করবেন। নতুন জীবন মানিয়ে নিতে ছেলেকে সহায়তা করতে চান মেলানিয়া ট্রাম্প। সূত্রটি বলেছে, তিনি একজন মা এবং ইতোমধ্যেই প্রতি মাসের কিছু অংশ ও সম্ভবত প্রতি সপ্তাহ নিউইয়র্কে কাটানোর পরিকল্পনা করছেন। খবর বিবিসি ও এনডিটিভির
বিপি/টিআই