Home আন্তর্জাতিক যুক্তরাষ্ট্রের অনথিভুক্ত অভিবাসী সবাই ‘অপরাধী’: হোয়াইট হাউস

যুক্তরাষ্ট্রের অনথিভুক্ত অভিবাসী সবাই ‘অপরাধী’: হোয়াইট হাউস

by bnbanglapress
A+A-
Reset

 

আবু সাবেত: যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকারী সমস্ত অনথিভুক্ত অভিবাসীদের ‘অপরাধী’ বলে মনে করছেন ট্রাম্প প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিট। তিনি বলেন ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন দমনকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তাদের দৃষ্টিতে সকল অনথিভুক্ত অভিবাসীই ‘অপরাধী।
তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই ব্যাখ্যাটি জটিলতার অভাবযুক্ত এবং সম্ভবত সংবিধানের লঙ্ঘন।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লেভিটকে প্রশ্ন করা হয় এখন পর্যন্ত কতজন অবৈধ অভিবাসীকে বহিষ্কার করা হয়েছে? যাদের অপরাধমূলক রেকর্ড রয়েছে।
এর জবাবে তিনি বলেন,তাদের সবাই কারণ তারা অবৈধভাবে এসে আমাদের দেশের আইন ভঙ্গ করেছেন। আইসিইর তথ্যমতে ট্রাম্প প্রশাসন মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রায় ৩,১০৪ অনথিভুক্ত অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে।
অবিভাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) জানিয়েছে যে ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে প্রায় ৩,১০৪ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে যাদেরকে অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকার সন্দেহে আটক করা হয়েছে।
এই বিবৃতি এমন এক সময়ে এসেছে যখন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ‘লেকেন রাইলি আইন’-এ স্বাক্ষর করতে চলেছেন। এই নতুন আইন অনুসারে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এখন এমন অনথিভুক্ত অভিবাসীদের আটক করতে পারবে। যারা বাড়িঘর ভাঙচুর, চুরি, ছিনতাই বা দোকান থেকে মালামাল চুরির মতো অপরাধে গ্রেফতার হয়েছে।
তবে অভিবাসন আইনজীবী অ্যারন রাইখলিন-মেলনিক ব্যাখ্যা করেছেন যে যুক্তরাষ্ট্রে অনুমতি ছাড়া থাকা একটি নাগরিক আইন লঙ্ঘন হলেও এটি কোনো অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড নয়।
তিনি ২০১২ সালের সুপ্রিম কোর্টের ‘অ্যারিজোনা বনাম ইউনাইটেড স্টেটস’ মামলার রায়ের উল্লেখ করেন। সেখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে:
‘সাধারণত একজন অপসারণযোগ্য অভিবাসীর যুক্তরাষ্ট্রে থাকা কোনো অপরাধ নয়।
যদি কোনো অনথিভুক্ত অভিবাসী তার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন তবে তাকে নির্বাসনের (ডিপোর্টেশন) মুখোমুখি হতে হতে পারে। তবে তাকে অপরাধমূলকভাবে অভিযুক্ত করা হবে না।
অভিবাসন আইনজীবী অ্যারন রাইখলিন-মেলনিক আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে, অপরাধমূলক রেকর্ড’ বলতে আইনগতভাবে এমন কাউকে বোঝানো হয়, যিনি গ্রেফতার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে এবং আদালতে দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।
এর মানে হলো যে কেউ অপরাধের জন্য তাত্ত্বিকভাবে গ্রেফতার হতে পারেন কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের আইনের দৃষ্টিতে তিনি তখন পর্যন্ত অপরাধমূলক রেকর্ডধারী নন। যতক্ষণ না তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। এই নীতি অবৈধ অভিবাসীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
৮ ইউ.এস. কোড § ১৩২৫ অনুযায়ী, সীমান্ত অবৈধভাবে অতিক্রম করা একটি ফেডারেল অপরাধ। যার জন্য জরিমানা এবং কারাদণ্ডের শাস্তি হতে পারে। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সকল অনথিভুক্ত অভিবাসী অবৈধভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আসেননি।
অনেকেই আইনগতভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন কিন্তু তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও দেশটি না ছাড়ার কারণে অবৈধ অভিবাসীতে পরিণত হয়েছেন।
২০১৭ সালের একটি মাইগ্রেশন স্টাডিজ সেন্টারের প্রধান গবেষণায় দেখা গেছে ২০০৭ সাল থেকে অবৈধভাবে সীমান্ত পার হওয়া ব্যক্তিদের চেয়ে ভিসার মেয়াদ শেষ করেও যুক্তরাষ্ট্রে থাকা ব্যক্তিদের সংখ্যা বেশি।
গবেষণা অনুযায়ী, প্রায় পাঁচ লাখের বেশি মানুষ ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেছেন, যা সীমান্ত অবৈধভাবে পার হওয়া ব্যক্তিদের সংখ্যার চেয়েও বেশি।
একটি ২০২৩ সালের ইমিগ্রেশন স্টাডিজ সেন্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে ২০২২ সালে মোট ভিসা ওভারস্টে রেট ছিল ৩.৬৪%, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। এই গবেষণাটি হোমল্যান্ড সিকিউরিটির তথ্যের উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয়েছে।

বিপি।এসএম

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী