নোমান সাবিত: কিউবায় গুয়ানতানামো বে নৌ ঘাঁটিতে অভিবাসীদের আটক রাখার পরিকল্পনা এই সপ্তাহে আরেকটি বাধার সম্মুখীন হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সেখানে আটক থাকা ৪০ জন অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্রে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং দ্বীপে কোনো ভবিষ্যৎ নির্বাসন ফ্লাইট নির্ধারিত নেই।
বৃহস্পতিবার একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা নিশ্চিত করেছেন যে গুয়ানতানামো বে নৌ ঘাঁটিতে এখন কোনো অভিবাসী নেই। ঘাঁটির আটক কেন্দ্রে থাকা ২৩ জন ‘উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ ব্যক্তি এবং অভিবাসী পরিচালনা কেন্দ্রের আরও ১৭ জন অন্তর্ভুক্ত ছিল।
ওই কর্মকর্তা জানাননি যে পুরুষদের কোথায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে একাধিক সূত্র জানিয়েছে যে মঙ্গলবার মার্কিন অভিবাসন ও শুল্ক প্রয়োগ (আইসিই) সংস্থার বিমানে তাদের লুইজিয়ানার এক বা একাধিক কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়েছে।
এই বিষয়ে আইসিই-কে প্রশ্ন পাঠানো হলে তারা অনুরোধে সাড়া দেয়নি। দেশীয় নিরাপত্তা বিভাগ (ডিএইচএস) ও কোনো মন্তব্য করেনি। এটি দ্বিতীয়বার হলো যখন প্রশাসন হঠাৎ করে গুয়ানতানামোর আটক কেন্দ্র খালি করেছে। এর আগে ২০ ফেব্রুয়ারি, ১৭৭ জন ভেনেজুয়েলানকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে গুয়ানতানামো পাঠানোর পর তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়।
ওয়াশিংটন পোস্ট জানিয়েছে দুই সপ্তাহ আগে ডিএইচএস আরও ৪৮ জন অভিবাসীকে গুয়ানতানামো থেকে লুইজিয়ানায় পাঠিয়েছে।
এখনও অজানা যে মার্কিন সরকার গুয়ানতানামোতে অভিবাসীদের আটক রাখা অব্যাহত রাখবে কি না, কারণ কিউবায় নৌ ঘাঁটিতে অভিবাসীদের পাঠানোর এই ব্যয়বহুল সামরিক ফ্লাইটের পরিকল্পনাটি জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই প্রতিরক্ষা বিভাগ ও ডিএইচএস-কে নির্দেশ দিয়েছিলেন ৩০,০০০ অভিবাসী রাখার জন্য নৌ ঘাঁটিতে তাঁবু স্থাপন করতে।
তৎকালীন প্রতিরক্ষা সচিব পিট হেগসেথ এটিকে প্রশাসনের নির্বাসন পরিকল্পনার জন্য ‘পারফেক্ট স্পট’ বলে অভিহিত করেছিলেন এবং নিশ্চিত করেছিলেন যে গুয়ানতানামো ‘খুব দ্রুত’ ৩০,০০০ মানুষ রাখতে সক্ষম। কিন্তু ট্রাম্পের মেয়াদে মাত্র ৩০০-এর কম অভিবাসী গুয়ানতানামোতে আটক রাখা হয়েছে, যা তার ঘোষিত লক্ষ্যের তুলনায় অনেক কম। এই পরিকল্পনা শীঘ্রই নানা লজিস্টিক ও আইনি জটিলতায় আটকে যায়।যার মধ্যে ছিল প্রশাসনের মধ্যে সমন্বয়হীনতা ও অভিবাসীদের পরবর্তী পদক্ষেপ কী হবে তা নিয়ে বিভ্রান্তি।
শেষ পর্যন্ত ঘাঁটিতে ১৯৫টি তাঁবু স্থাপন করা হলেও সেগুলো আইসিই-এর মানদণ্ড-যেমন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ও বিদ্যুৎ সুবিধা-পূরণ না করায় কখনোই ব্যবহার করা হয়নি এবং ফেব্রুয়ারিতে নির্মাণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ট্রাম্প প্রশাসন একাধিক আইনি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়। যার মধ্যে আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (এসিএলইউ) একটি মামলা ছিল যেখানে অভিবাসীদের আইনি সহায়তা না দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। এছাড়া, ডিসি ফেডারেল কোর্টে শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে আটক ১০ জন অভিবাসীকে গুয়ানতানামোতে স্থানান্তর বন্ধের একটি আলাদা মামলার শুনানি নির্ধারিত রয়েছে।
[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]
বিপি।এসএম