নরসিংদী প্রতিনিধি : নরসিংদীতে চাঞ্চল্যকর সুজিত সুত্রধর হত্যার মূল হোতাসহ ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত ২২ জুন বুধবার অনুমান রাত ৭.৪৫ ঘটিকার সময় নরসিংদী মডেল থানাধীন হাজীপুর কাঠ বাজারে “সুজন টিম্বার ট্রের্ডাস এন্ড ফার্নিচার মার্ট” নামীয় দোকানে চাঞ্চল্যকর একটি হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটে।
২৩ জুন বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার, নরসিংদী কাজী আশরাফুল আজীম পিপিএম জানান, ভিকটিম নরসিংদী মডেল থানাধীন হাজীপুর কাঠ বাজারে “সুজন টিম্বার ট্রের্ডাস এন্ড ফার্নিচার মার্ট” নামীয় দোকানের মালিক। তিনি দীর্ঘদিন যাবত ফার্নিচারের ব্যবসায় পরিচালনা করিয়া আসিতেছে।
গত এক সপ্তাহ আগে ভিকটিমের দোকানে কর্মরত বার্নিশ মিস্ত্রী মাসুম এর সাথে তাহার ছেলে সুজন সূত্রধর (৩০) এর কথা কাটাকাটি হয়। সুজন সূত্রধর বার্নিশ মিস্ত্রি মাসুমকে চর থাপ্পর মারে। এই ঘটনার ব্যাপারে বার্নিশ মিস্ত্রি মাসুম দোকানের মালিকের নিকট বিচার প্রার্থী হয়। দোকানের মালিক সুজিত সূত্রধর মাসুম-কে আশস্ত করে বিষয়টি মিমাংসা করিয়া দিবে।
পরবর্তী ঘটনাক্রমে ২২ জুন বুধবার সন্ধ্যার পর সুজিত সূত্রধরের দোকানে বসিয়া ঘটনার বিষয়ে মিমাংসা করার কথা ছিল। পূর্বের কথা অনুযায়ী ভিকটিম সুজিত সূত্রধর ও তাহার ছেলে সুজন সূত্রধর এদিন অনুমান ৭.৪৫ ঘটিকার সময় “সুজন টিম্বার ট্রের্ডাস এন্ড ফার্নিচার মার্ট দোকানে অবস্থান করতেছিল। তখন বার্নিশ মিস্ত্রি মাসুম এর নেতৃত্বে অজ্ঞাতনামা ১০/১২ জন আসামী “সুজন টিম্বার ট্রের্ডাস এন্ড ফার্নিচার মার্ট দোকানে প্রবেশ করে অতর্কিত হামলা করিয়া ভিকটিম সুজিত সূত্রধরকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে ডান কানের নিচ হতে ডান চোয়াল হয়ে গলার বাম পার্শ্ব পর্যন্ত সাত ইঞ্চি পরিমান গভীর কাটা রক্তাক্ত জখম সহ শরীরের অন্যান্য অংশে জখম করে।
এসময় তাহার ছেলে সুজন সূত্রধরকেও এলোপাথারী মারপিট করিয়া জখম করে। দোকানে থাকা এক কর্মচারী দিনা (৫৫) কে মারপিট করিয়া গুরুতর আঘাত করে আসামীরা ঘটনাস্থল হইতে দ্রুত পালিয়ে যায়। স্থানীয় লোকজন তাদেরকে হাসপাতালে নিয়া গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিম সূজিত সূত্রধরকে মৃত বলিয়া ঘোষনা করেন।
এদিকে প্রাথমিক ভাবে আরো জানা যায় যে, ভিকটিম সুুজিত সুত্রধর হাজীপুর ইউনিয়নের একজন সাবেক মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলেন। তাহার সাথে ব্যবসা প্রতিষ্টান এর জায়গা নিয়ে, নিবার্চন সংক্রান্তে ও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পূর্ব হইতেই অনেকের সাথে বিরোধ চলে আসতেছিল। এইসব ঘটনায় জের ধরিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে বলিয়া প্রাথমিকভাবে জানা যায়।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে নরসিংদী মডেল থানার একটি টিম তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং আশেপাশের লোকজনকে ঘটনার বিষয়ে নিবিরভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। তথ্য প্রযুক্তি ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঘটনার পর পরই ঘটনার সাথে জড়িত মূল আসামী ১। মাসুম (২৬), পিতা-হযরত আলী, সাং-বুদিয়ামারা (দড়ি নবীপুর), থানা ও জেলা-নরসিংদী, ২। শিমুল মাহমুদ (২২), পিতা-ফজলুর রহমান, সাং-বুদিয়ামারা(দড়ি নবীপুর), থানা ও জেলা-নরসিংদী, ৩। সোহাগ মিয়া(২৩), পিতা-রহিম মিয়া, সাং-নবীপুর (বালুয়াকান্দি বাজার সংলগ্ন), থানা ও জেলা- নরসিংদীদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সুত্র আরো জানান, ঘটনায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি ও রক্তমাখা কাঠ উদ্ধার করা হয়। বাদীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
বিপি/কেজে