মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: শোকাবহ আগস্টের কর্মসূচীর অংশ হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের উদ্যোগে শোক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার (২৮ আগস্ট) সকাল ১০টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজের অন্তর্গত ডাঃ কাইছার রহমান চৌধুরী অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয় শোক সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন।
প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস. এম কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল। বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সদস্য বেগম আখতার জাহান, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ডাবলু সরকার, যুগ্ম সম্পাদক আহ্সানুল হক পিন্টু ও সাংগঠনিক সম্পাদক মীর ইসতিয়াক আহমেদ লিমন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জিয়াউর রহমান জড়িত এতে কোন সন্দেহ নাই, তিনিই খুনীদের বিদেশ পাঠান ও পুর্নবাসন করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি তার দোসরদের নিয়ে টাকা পয়সা দিয়ে রাজপথ দখলের চেষ্টা করছে; দেশে বিশৃংখলা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। বিএনপি জানে নির্বাচন করে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানো যাবে না। সে জন্য তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারকে উত্থাত করে ক্ষমতায় যাওয়ার সংক্ষিপ্ত শটকাট রাস্তা খুঁজছে।
বিএনপিকে উদেশ্য করে ওবায়দুল কাদের বলেন, এদেশে আর ক্ষমতার পরিবর্তন অলিগলি দিয়ে; পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না। নির্বাচন করেই জনগণ যাকে যাইবে তাকেই ক্ষমতায় যেতে হবে। নির্বাচন করবে ফাইসালা কে ক্ষমতায় যাবে। গণতন্ত্রের ডাক দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যাবে না।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জননেতা এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, যথাযথ মর্যাদায় ও ভাব-গাম্ভীর্যের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদতের মাসটি পালিত হচ্ছে। তখন এই মাসের পবিত্রতা নষ্ট করে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্যে জনগণকে বিভ্রান্ত করার জন্যে বিএনপি অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপি নামক দলটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে না। সেই বিএনপির সাথে যুক্ত হয়ে নামস্বর্বস বিভিন্ন দল রাজপথ দখলের নামে অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কখনো পালিয়ে যাবে না। আমরা দেশ স্বাধীন করেছি, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে এদেশের মানুষ হাতে অস্ত্র তুলে নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে। জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুশাসনের সঙ্গে উন্নয়ন দিচ্ছেন, সর্বক্ষেত্রে উন্নয়ন দৃশ্যমান। আমরা কেন পালিয়ে যাব? পালিয়ে যাবে ওরা, যারা নির্বাচনের আগে শর্ত দেয়, নির্বাচনে আসে না এবং নির্বাচনের পরে আগুন সন্ত্রাস করে। তারাই পালিয়ে যাবে।
খায়রুজ্জামান লিটন আরো বলেন, বিএনপি ও তাদের সহযোগীরা বলছে, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। এই প্রসঙ্গে আমাদের দল পরিস্কারভাবে বলে দিয়েছে, নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের আর কোন সুযোগ নেই। বর্তমান ক্ষমতাশীন দল ক্ষমতায় থেকে, শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই নির্বাচন কমিশনের মাধমে নির্বাচন হবে। তাতে বিএনপি নির্বাচনে আসুক আর না আসুক। আর যদি বিএনপি নির্বাচনে না আসে এইবার নির্বাচনের পর তারা যদি আগুন সন্ত্রাস বা অরাজক পরিবেশ তৈরি করতে চায়, তাহলে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদেরকে গণধোলাই দিয়ে এদেশ থেকে বের করে দেওয়ার ব্যবস্থা করবে।আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন দেশ গড়তে লাগলেন, আমরা তাঁকে সময় দিলাম না। বঙ্গবন্ধু যে জিয়াউর রহমানকে চারটি প্রমোশন দিয়ে মেজর থেকে মেজর জেনারেল করেছিলেন, সেই জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্যের কাজটি সুচারুরূপে করতে লাগলেন। এই পটভূমি তৈরি করবার জন্যে তৎকালীন বিভিন্নভাবে একাত্তরের পরাজিত শক্তিদের অস্ত্র দিয়ে, অর্থ দিয়ে, বৈদেশিক সমর্থন দিয়ে চক্রান্তকারীরা প্রস্তুতি গ্রহণ করে। বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করার ক্ষেত্রে আরো একটি দল ভুমিকা রেখেছে, সেটি হচ্ছে তৎকালীন জাসদ।
কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে রাসিক মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, কারা কারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যার সাথে জড়িত এবং কারা কারা এই হত্যাকা-ে বেনিফিশিয়ারি-এটা খুঁজে বের করতে হবে। কারণ এক জিয়াউর রহমান এদেশীয় এজেন্টদের মধ্যে প্রধান ভুমিকা পালন করেছে, শিখন্ডী খন্দকার মোস্তাক আর ভাড়াটিয়া খুনি হিসেবে ফারুক, রশীদ, ডালিম, হুদা ইত্যাদি। কিন্তু এই বাইরেও আরো অনেকে ছিল, তারা কারা তাদের খুঁজে বের করা এখন সময়ের দাবি। তারা জীবত থাকুক আর ইহকাল ত্যাগ করুক, তাদের পরিচয় জানার অধিকার জাতির সবার আছে।
প্রধান বক্তা জননেতা এস. এম কামাল বলেন, বিএনপি হলো একটি ভুঁইফোড় সংগঠন। বিএনপি’র যাত্রা শুরু হয়েছে মিথ্যাচারের রাজনীতি দিয়ে। তারা অপপ্রচারের রাজনীতিতে মগ্ন। জনগণের ভালোমন্দতে তাদের কোন যায় আসে না। এমনিভাবে তারা রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়।
তিনি আরো বলেন, রাষ্ট্র ও জনগণের সেবায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনও পিছু হটবে না। বাংলাদেশ ও বাঙালির স্বাধীকার আন্দোলন থেকে শুরু সকল অর্জন এই সংগঠনের হাত ধরেই হয়েছে। বর্তমানের বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে উন্নয়নের রোল মডেল।
শোক সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী জেলার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, রাজশাহী মহানগরের সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, মাহ্ফুজুল আলম লোটন, রেজাউল ইসলাম বাবুল, ডাঃ তবিবুর রহমান শেখ, নাঈমুল হুদা রানা, যুগ্ম সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, আসাদুজ্জামান আজাদ, নগর যুবলীগ সভাপতি রমজান আলী, নগর কৃষক লীগ সভাপতি রহমতউল্লাহ সেলিম, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আব্দুল মোমিন, সাধারণ সম্পাদক জেডু সরকার সহ সকল নেতা-কর্মীরা।
বিপি<> আর এল