মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী: রাজশাহী নগরীতে মৃত রুহানী খাতুনের (১৫) লাশ ময়নাতদন্ত শেষে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) দুপুর ২টায় তার লাশ হস্তান্তর করা হয়। এর আগে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে নগরীর কাটাখালি থানার মোহনপুর গ্রামে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে ওই কিশোরীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয়রা। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরী বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে থাকা কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
মৃত (গৃহবধূ) কিশোরী ওই গ্রামের মোঃ রাব্বিল হোসেনের স্ত্রী। তার শ্বশুরের নাম মোঃ ইয়াদ আলী। সে একই গ্রামের মোঃ হায়দার আলীর মেয়ে। গৃহবধূর কিশোরীর পিতা হায়দার আলী জানান, আমার মেয়ে এসএসসি পরিক্ষার্থী ছিলো। গত ৫মাস পূর্বে প্রেমের সম্পর্কের জেরে মৃত রুহানী খাতুনকে নিয়ে কোর্টে বিয়ে করে মোঃ রাব্বিল হোসেন।
বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের দাবিতে তাকে নির্যাতন করতো তার স্বামী মোঃ রাব্বিল হোসেন ও তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার বিকালে রুহানী গলায় ফাঁস দিয়েছে বলে স্থানীয়দের মুখে জানতে পারি। কিন্তু পুলিশে খবর না দিয়ে তারা নিজেরাই রুহানীকে রামেকে নিয়ে যায়। রামেকের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
কিশোরীর চাচা মোঃ কাউসার আলী জানায়, জোর করে রুহানীকে তুলে নিয়ে গিয়ে কোর্টে বিয়ে করেছিলো রাব্বিল হোসেন। বিয়ের ৫ মাসের মধ্যে মারধর করে ৭/৮বার তাড়িয়ে দেয় রুহানীকে। তিনি আরও বলেন, ঠিক মতো খেতে দিতো না তাকে। প্রায় দিনই রাতে না খেয়ে থাকতে হতো রুহানীকে। গোপনে তার কাছে খাবার দিয়ে আসতে হতো।
তার দাবি পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিশোধ নিতে রাব্বিল তার পরিবারের সহযোগীতায় রুহানীকে জোর পূর্বক বিয়ে করে। পরে ধারাবাহিক ভাবে নির্যাতনের কারনেই রুহানীর মৃত হয়েছে।
তিনি তার ভাতিজি রুহানীর মৃত্যুর সঠিক কারন তদন্ত করে দোষিদের গ্রেফতার ও শাস্তির দাবি জানান।
এ ব্যপারে জানতে চাইলে কাটাখালী থানার অফিসার ইনচাজ (ওসি) মোঃ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, মোহনপুর গ্রামে এক গৃহবধূ গলায় ফাঁস দিয়েছে। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেছে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার দুপুরে মৃত কিশোরীর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ব্যপারে কাটাখালি থানায় মৃত্যের পরিবার থেকে একটি মামলা দায়ের করেছেন বলেও জানান ওসি।
বিপি> আর এল