
বাংলাদেশে যে সরকারই আসুক, তার সঙ্গে কাজ করবে ভারত: বিক্রম মিশ্রি


বাংলাপ্রেস ডেস্ক: দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি জানিয়েছেন, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনে যে সরকারই ক্ষমতায় আসবে, তার সঙ্গে ভারত সরকার কাজ করবে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশের (ডিক্যাব) প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়ে তিনি এ কথা বলেন।
মত বিনিময়ের সময় অন্যদের মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রাণধীর জয়সওয়াল এবং বাংলাদেশ ও মিয়ানমার বিষয়ক যুগ্ম সচিব বি শ্যাম, ডিক্যাব সভাপতি এ কে এম মঈনুদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান মামুন উপস্থিত ছিলেন।
এসময় বিক্রম মিশ্রি বলেন, খুবই স্পষ্টভাবে বলতে চাই, বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে ভারত এবং যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পক্ষে। নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার যে বক্তব্য দিয়েছে, আমরা তাতে উৎসাহিত এবং আমরা প্রতীক্ষায় আছি, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবং আমরা আশা করি কোন বিলম্ব না ছাড়াই তা হবে। সে নির্বাচনের মাধ্যমে যে সরকারই আসুক না কেন, আমরা তার সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার প্রতীক্ষা আছি।
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকার মধ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন সম্ভব কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বিক্রম মিশ্রি বলেন, বাংলাদেশ সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা তার মধ্যে যেতে চাই না। আমি মনে করি, বাংলাদেশ সরকার, বাংলাদেশের জনগণ, বাংলাদেশের নাগরিক সমাজই দেখবে, এই নির্বাচনকে কীভাবে তারা মূল্যায়ন করবে এবং বাইরের লোকজনও দেখবে। আমি শুধু এভাবে বলতে পারি, এটা কেবল অভ্যন্তরীণ বৈধতার প্রশ্ন নয়, বহির্বিশ্বের বৈধতার প্রশ্নও।
তিনি আরও বলেন, সুতরাং, সেদিক থেকে এটাও একটা দিক এবং নির্বাচনটা নিয়ে কী ভাবা হয়, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। কেবল আক্ষরিক অর্থ বিবেচনায় নিয়ে বলছি— অবাধ, নিরপেক্ষ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ওই প্রক্রিয়ার অংশ, যেই প্রক্রিয়া এটাকে বৈধতা দেয়।
ভোটের বৈধতার প্রশ্নও জনগণের উপর ছেড়ে দেয়ার দাবি করে তিনি বলেন, দিনশেষে বাংলাদেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে, কীভাবে নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নেবে এবং সেটাকে কীভাবে অনুষ্ঠিত হয়। কেননা, এই সিদ্ধান্তগুলো কেবল এই বছর ও এখনকার জন্য না, বরং মধ্যম ও দীর্ঘ মেয়াদে অনেক দূর যাবে। এবং সবশেষে বাংলাদেশের মানুষকেই এটা দেখতে হবে।
আওয়ামী লীগের মত বড় দলকে বাদ দিয়ে ভোট হলে— সেই ভোটে আসা সরকারের সঙ্গেও ভারত কাজ করবে কি না, এমন প্রশ্নও করা হয় বিক্রম মিশ্রিকে।
উত্তরে তিনি বলেন, আমি বলতে পারি, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যে সরকারই আসুক, আমরা তার সঙ্গে কাজ করব। এই নির্বাচনে যে কিছু ম্যান্ডেটের প্রকাশ পাবে, তাতে কোনো সন্দেহ নাই। যেসব শর্তে ম্যান্ডেট গঠিত হয়, তার ভেতরে ভারত যাবে না। এটা এমন বিষয়, আমি মনে করি সেই সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে এবং সেই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের জনগণেরই বেশি নজর থাকা উচিত। যে সরকারই শপথ নেবে এবং নির্বাচনের পর দায়িত্ব নেবে, আমরা তার সঙ্গে কাজ করব।
এ প্রসঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে নেয়ার কথা তুলে ধরে বিক্রিম মিশি বলেন, সরকারের এই গঠন কাঠামো বাংলাদেশের সংবিধানে না থাকার মধ্যেও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানানো ব্যক্তিদের মধ্যে শুরুর দিকে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর বিষয় যে- দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বাধা হিসাবে রয়েছে, সে বিষয়েও জানতে চাওয়া বিক্রম মিশ্রির কাছে।
উত্তরে তিনি বলেন, এটা বিচারিক ও আইনি প্রক্রিয়া। এক্ষেত্রে দু’দেশের সরকারের মধ্যে আলোচনা ও মতবিনিময় প্রয়োজন। এটা আমরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছি। বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে এই বিষয়ে কাজ করার প্রতীক্ষায় আছি। এই মুহূর্তে এই বিষয়ে আর কিছু বলা গঠনমূলক হবে বলে আমি মনে করছি না।
আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে রাজনীতিতে পুনর্বাসনে ভারত চেষ্টা করছে, বাংলাদেশের মানুষের এমন ‘ধারণার’ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির কাছে।
উত্তরে তিনি বলেন, আমরা কেবল বাংলাদেশে খুব দ্রুত একটা নির্বাচন, ম্যান্ডেট দেয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের জনগণের মতপ্রকাশের এবং তাদের সরকার নির্বাচনের পক্ষে।
বিপি/কেজে
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





