১৪ অক্টোবর ২০২৫

দক্ষ ব্যাংক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ: গভর্নর

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৮:৩৬ পিএম
দক্ষ ব্যাংক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা বড় চ্যালেঞ্জ: গভর্নর

বাংলাপ্রেস ডেস্ক: দেশে দক্ষ ব্যাংক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুরআজ শনিবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলের বলরুমে ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্স লিমিটেডের ১৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, দেশে দক্ষ ব্যাংক ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। এখন ভালো ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের ব্যাংকগুলোর ‘কোর ব্যাংকিং সিস্টেম’ বেশিরভাগ ভারতের। এ ক্ষেত্রে আমাদের নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে হবে।

তিনি আরও বলেন, দেশে যদিও ব্যাংকারদের জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে সবচেয়ে কার্যকর প্রশিক্ষণ হয় কর্মক্ষেত্রে। কিন্তু বাস্তবতা হলো ব্যাংকখাতে প্রশিক্ষণ ও জনবল উন্নয়নে যে বড় ধরনের বিনিয়োগ দরকার আমাদের সেই সক্ষমতা নেই।

রাজনৈতিক প্রভাবও ব্যাংক খাতের সুশাসনে বড় বাধা মন্তব্য করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, ব্যাংকগুলো প্রায়শই ঝুঁকি আগে ভাগে মূল্যায়ন না করে একই ধরনের ব্যবসায় একসঙ্গে সবাই ঋণ দেয়। এতে করে অনেক সময় ব্যাংকগুলো ঝুঁকিতে পড়ে।

গভর্নর আরও বলেন, দেশের আর্থিক খাতের আকার জিডিপির মাত্র ৫২ থেকে ৫৩ শতাংশ। চীনে যেখানে এটি ২০০ শতাংশের বেশি এবং ভারতে প্রায় ১০০ শতাংশ। সেখানে বাংলাদেশের এই অবস্থান গ্রহণযোগ্য নয়।

এ সময় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ব্যাংক খাতের কর্মকর্তাদের শুধু প্রশিক্ষণ যথেষ্ট নয়তাদের মনের প্রশিক্ষণও খুব গুরুত্বপূর্ণকারণ প্রশিক্ষিত কিন্তু অসমানুষ অনেক সময় অপ্রশিক্ষিত মানুষের চেয়ে বেশি ক্ষতি করতে পারে

সালেহউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, আগামী তিন-চার মাসের মধ্যে আমাদের জন্য আরও চ্যালেঞ্জ আসবে। আমাদের অন্তত চেষ্টা করতে হবে যাতে পরবর্তী সরকারের জন্য একটি কার্যকর পদচিহ্ন রেখে যাওয়া যায়। যদি আপনারা নিজেরাই পদচিহ্ন অনুসরণ না করেন তাহলে জনগণই আপনাদের রাস্তায় নামিয়ে আনবে। ইতিহাস আবারও পুনরাবৃত্তি হতে পারে। কারণ জনগণ খুব সচেতন।

আমরা স্বীকার করি নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও নীতিনির্ধারণে কিছু ঘাটতি আছে মন্তব্য করে সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মাত্র ১৪ মাসে আগের সব ভুল শুধরে ফেলা কঠিন। তাই জনগণের ধৈর্য দরকার। আমরা চেষ্টা করছি আগামী কয়েক মাসে কিছু মৌলিক সংস্কার কার্যকর করতে।

অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্স লিমিটেড চেয়ারম্যান মামুন রশীদ বলেন, বর্তমানে ব্যাংকিং খাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর সমাধান, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, আলোচনার কৌশল ও সম্পর্ক ব্যবস্থাপনাসহ নানা বিষয়ে একশোর বেশি প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সিলেন্স লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ আবু নাসের বখতিয়ার আহমেদ অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন বহুজাতিক ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশ (এসসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নাসের এজাজ বিজয়, অনন্ত গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের (ইউসিবি) চেয়ারম্যান শরীফ জহির, মাস্টারকার্ড বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজার সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নূরুন নাহার ও হাবিবুর রহমান, গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুনসহ প্রমুখ।

বিপি/টিআই

 

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন