১৩ অক্টোবর ২০২৫

ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বললেন ট্রাম্প

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৩৭ পিএম
ইসরায়েলকে অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বললেন ট্রাম্প

বাংলাপ্রেস ডেস্ক: ইসরায়েলকে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস নিজেদের কব্জায় থাকা অবশিষ্ট সব ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দিতে রাজি হওয়ার পর ইসরায়েলকে এ নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যশ ট্রুথ সোশ্যালে এ তথ্য জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। শুক্রবার ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করা এক বার্তায় ট্রাম্প বলেন, “হামাসের সর্বশেষ বিবৃতি দেখার পর আমার মধ্যে এই বিশ্বাস জন্মেছে যে তারা দীর্ঘমেয়াদী শান্তির জন্য প্রস্তুত।”

এখন ইসরায়েলকে অবশ্যই অবিলম্বে গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করতে হবেযেন আমরা সব জিম্মিকে দ্রুত ও নিরাপদে সেখান থেকে বের করে আনতে পারি; এই মুহূর্তে এটা অত্যন্ত বিপজ্জনক। আমরা ইতোমধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবের খুঁটিনাটি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করেছি। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য শুধু গাজা নয়, বরং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘ দিন ধরে প্রত্যাশিত শান্তি স্থাপন।”

গত সপ্তাহে গাজায় যুদ্ধের অবসানে ২০টি পয়েন্ট সম্বলিত নতুন যে পরিকল্পনা প্রস্তাব আকারে পেশ করেছেন ট্রাম্প, গত কাল শুক্রবার তা সমর্থন করে নিজেদের হাতে থাকা জীবিত ও মৃত সব ইসরায়েলি জিম্মিকে ছেড়ে দিতে সম্মত হয়েছে হামাস। সেই সঙ্গে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং গাজার প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে আলোচনা শুরুর ব্যাপারেও আগ্রহ জানিয়েছে গোষ্ঠীটি।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে হামাসে সম্মতি গাজা, ফিলিস্তিন এবং ইসরায়েলের জন্য একটি বড় মাইলফলক। কারণ গত দুই বছর ধরে গাজা উপত্যকায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যে ভয়াবহ যুদ্ধ চলছে, তার সমাপ্তির প্রাথমিক ধাপ এই প্রস্তাবইসরায়েল আগেই এই প্রস্তাবে সমর্থন জানিয়েছিল, এখন হামাসও সবুজ সংকেত দেওয়ার পর বলা যায় দুই বছর আগে যুদ্ধ শুরুর পর এই প্রথম দুই পক্ষ শান্তির জন্য সবচেয়ে কাছাকাছি এসেছে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাসের যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৫১ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

হামাসের হামলার জবাব দিতে এবং জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। দুই বছর ধরে চলতে থাকা ভয়াবহ সেই অভিযানে ইতোমধ্যে গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৬৭ হাজার মানুষ, আহত হয়েছেন প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার। নিহত এবং আহতের অধিকাংশই নারী, শিশু এবং বেসামরিক ফিলিস্তিনি।

গত দুই বছরে বিভিন্ন সময়ে কয়েক দফায় নিজেদের কব্জায় থাকা অধিকাংশ জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস। তবে এখনও তাদের কব্জায় ৩৫ জন জিম্মি আছে এবং তাদের মধ্যে অন্তত ২০ জন বেঁচে আছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

ট্রাম্প হামাসকে আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, রোববারের মধ্যে যদি হামাস তার প্রস্তাবের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া না জানায়, তাহলে গোষ্ঠীটির ওপর ‘নরক’ নেমে আসবে। এই আল্টিমেটাম ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে গোষ্ঠীটির হাইকমান্ড।

তবে বিবৃতিতে জিম্মিদের মুক্তি ও গাজার প্রশাসনিক ক্ষমতা হস্তান্তরে সম্মতি প্রদানের পাশাপাশি হামাস বলেছে, চুক্তির অন্যান্য শর্তগুলোর ব্যাপারে ‘একীভূত ফিলিস্তিনি জাতীয় কাঠামো’-এর আলোকে আলোচনা করতে চায় তারা। ‘একীভূত ফিলিস্তিনি জাতীয় কাঠামো’ বলতে স্বাধীন ও সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি গোষ্ঠীটি জানিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

 

বিপি/টিআই

 

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন