
জামায়াতসহ চার দলের ১২ দিনের গণমিছিল কর্মসূচি


বাংলাপ্রেস ডেস্ক: জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয়বার ১২ দিনের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামীসহ চারটি দল।
অন্য দলগুলো হলো- ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)। বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ভিন্ন ভিন্ন গণসংযোগ, গণমিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করবে দলগুলো।
মঙ্গলবার পৃথক সংবাদ সম্মেলনে এ কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- ১ থেকে ৯ অক্টোবর ৫ দফা গণদাবির পক্ষে জনমত গঠনে গণসংযোগ। ১০ অক্টোবর ঢাকা ও বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান। এছাড়াও মতবিনিময় সভা, গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনারের আয়োজন করছে দলগুলো। এর আগেও ৫ দফা দাবিতে গত মাসে ৩ দিনের কর্মসূচি পালন করেছিলেন দলগুলোর নেতারা।
রাজধানীর মগবাজারের আল ফালাহ মিলনায়তনে মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি’ হিসাবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান বারবার ব্যক্ত করা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়ার জন্য আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াত ইতোমধ্যে সরকারের কাছে দুটি প্রস্তাব করেছে। প্রথমত, জুলাই জাতীয় সনদের জন্য ‘সংবিধান আদেশ’ জারি করা এবং দ্বিতীয়ত, এই সনদের অধিকতর আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা। সেটা না হলে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান ব্যতীত ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থ হতে পারে বলে আমরা মনে করি।
গোলাম পরওয়ার বলেন, ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। আমরা ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও ভয়ভীতিমুক্ত গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়ে আসছি। জনগণের দাবিগুলো কার্যকর করতে সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে জানিয়েছে জামায়াত। জামায়াতের এর আগে ঘোষণা করা পাঁচ দফা জনগণের কাছে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়েরের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন, নূরুল ইসলাম বুলবুল, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আবদুর রহমান মূসা প্রমুখ।
রাজধানীর পুরোনো পল্টনের দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পাঁচ দফা দাবিতে দ্বিতীয় ধাপে ১২ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ধারাবাহিক কর্মসূচি ও সংলাপ সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়নি বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘জনতার রক্তে গঠিত সরকার জনগণের দাবি উপেক্ষা করলে তার নৈতিক ও আইনগত বৈধতা ক্ষুণ্ন হবে।’
ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর সংস্কার, বিচার ও নির্বাচনের ইস্যুতে দলটি সরকারকে সর্বাত্মক সহায়তা করেছে; কিন্তু স্বৈরতন্ত্রের স্থায়ী বিলোপের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করে বাংলাদেশে খেলাফত মজলিস। বিবৃতিতে দলটির আমির মাওলানা মামুনুল হক ও মহাসচিব জালালুদ্দীন আহমদ বলেন, ‘দেশ আজ ভয়াবহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত। জনগণের ন্যায্য দাবি উপেক্ষা করে পুরোনো স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। জুলাই সনদের বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করায় জাতি আজ রাজনৈতিক সংকট, অর্থনৈতিক অস্থিরতা ও বিপর্যয়ের গভীর খাদে পতিত হচ্ছে।’ অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা করলেও খেলাফত মজলিসের ৫ দফার পিআর ইস্যুতে মতভিন্নতা রয়েছে। ৭ দফা দাবিতে একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জাগপা। মঙ্গলবার পল্টনে দলটির ঢাকা মহানগর কার্যালয়ে দুপুর ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে কর্মসূচি ঘোষণা করেন জাগপার সহসভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।৪ অক্টোবর খেলাফত মজলিস দ্বিতীয় ধাপে নতুন কর্মসূচি ঘোষণার কথা রয়েছে। অন্য আরও ২টি দলের অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণার কথা রয়েছে।
পাঁচ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে। গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান হতে হবে। বিশেষ ট্রাইব্যুনালে ভারতীয় তাঁবেদার ও ফ্যাসিবাদের দোসর জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের বিচার করতে হবে এবং বিচার চলাকালীন তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
বিপি>টিডি
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন


পদ স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের বাকি ৪৩ দিন, বিএনপিতে থাকছেন কি ফজলুর?

ফখরুলের মতোই কবিতা আবৃত্তি করে উজ্জীবিত করলেন ছোট ভাই মির্জা ফয়সল


