১৪ অক্টোবর ২০২৫

ঝিনাইদহে পিতা হত্যার বিচার দাবিতে তিন বোন রাস্তায়

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
ঝিনাইদহে পিতা হত্যার বিচার দাবিতে তিন বোন রাস্তায়

ঝিনাইদহ থেকে সংবাদদাতা: রজনী, ইভা ও শোভা তিন বোন। এদের মধ্যে রজনী সবার বড়। ৮ম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। বাবা নিহত হওয়ার পর তার পড়ালেখা প্রায় বন্ধের পথে। স্কুলে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীরা তাকে মামলা তুলে নিতে হুমকি দেয়। ইভার বয়স ৬ বছর। আর শোভার বয়স মাত্র ৫ মাস। জন্মের ২ মাস পর বাবাকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। আর তাদের বাবা হত্যার বিচারের দাবিতে গ্রামবাসীর সাথে মায়ের কোলে ৫ মাসের কন্যা শিশু শোভাসহ তিন বোন দাড়িয়েছেন মানববন্ধনে।শুধু হত্যা করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি সন্ত্রাসীরা। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নিহতের পরিবারের সদস্যদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে হত্যাকান্ডে জড়িত সন্ত্রাসীরা।

এমন অভিযোগ নিহতের পরিবারের স্বজনদের।আজ সকালে ১০টায় ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কুবিরখালী গ্রামে জামিরুল হত্যার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করে গ্রামবাসী। গ্রামবাসীর অভিযোগ, জামিরুল হত্যায় জড়িতরা জামিনে বের হয়ে মামলা তুলে নিতে পরিবারের স্বজনদের হুমকি দিচ্ছে। নিহতের মামা মোশারফ হোসেন বাদি হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেক করে মামলা করেন ঝিনাইদহ সদর থানায়। এরমধ্যে তিনজন কারাগারে আটক আছে।মানববন্ধনে নিহত জামিরুলের চাচাতো ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, এপ্রিল মাসের ১৯ তারিখে চুলকনির বাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা ভাইকে গুলি করে হত্যা করে। মামলার আসামিরা আটক হলেও জামিনে বের হয়ে এসে মামলা তুলে নিতে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আমরা এই হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করছি।গ্রামবাসী জাহিরুন নেছা বলেন, জামিরুল অত্যান্ত ভদ্র ছেলে ছিল।

তাকে গুলি করে মেরে ফেলা খুবই খারাপ কাজ। গ্রামের কেউ কোন বিপদে পড়লে জামিরুল সবার আগে এগিয়ে আসতো।নিহতের স্ত্রী রেহেনা বেগম বলেন, আমার তিনটা মেয়ে। কিভাবে তাদের মানুষ করবো ? বড় মেয়ের লেখাপড়া প্রায় বন্ধের পথে। মামলা তুলে নিতে সন্ত্রাসীরা বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে। আমার স্বামী হত্যার সাথে জড়িতদের কঠিন শাস্তি চাই। হত্যার সময় আমার স্বামীর কাছে যে মোটরসাইকেল ছিল, সেটা এখনো উদ্ধার হয়নি।নিহতের বড় মেয়ে রজনী জানায়, বাবা মারা যাওয়ার পর কোচিং বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুলে যাওয়ার পথে সন্ত্রাসীদের লোকজন আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেয়। এইজন্য স্কুলেও যেতে পারছি না।

আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই।মধুহাটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফারুক আহমেদ জুয়েল বলেন, জামিরুল অত্যন্ত  ভদ্র ছেলে ছিল। পূর্ব পরিকল্পিতভাবে জামিরুলকে চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা হত্যা করেছে। এলাকার মানুষের খুব উপকার করতো সে। পুরো ইউনিয়নবাসী এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি মিজানুর রহমান খান বলেন, পুলিশ এই মামলা সকল আসামিকে গ্রেফতার করেছে। মামলা তুলে নেওয়ার হুমকির ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে কোন প্রকারঅভিযোগ করা হয়নি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নিবো।উল্লেখ্য, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ২০১৯ সালের ১৯ এপ্রিল রাত ৮ টার দিকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুবিরখালী গ্রামের মাঠে জামিরুল ইসলাম নামের এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।

বিপি/কেজে

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন