-68eba6bfe183f.jpg)
কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় দুই বছরের চালু হয়নি সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র


বিপ্লব আহমেদ, ফরিদপুর থেকে: ১৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যায়ে নির্মিত ভবনগুলো বুঝিয়ে দেয়ার পর পৌনে দুই বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি ফরিদপুরের সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র। এদিকে ৫০ শয্যার হাসপাতালের এ স্থাপনাগুলো অরক্ষিত অবস্থায় থাকায় সেখানে সংগঠিত হচ্ছে নানা ধরণের অপরাধ। লুটপাট হয়ে যাচ্ছে ভবনের আসবাব। এ অবস্থায় অবিলম্বে হাসপাতালের কার্যক্রম চালুর দাবী জানিয়েছে স্থানীয়রা। জানা গেছে, ২০০৫ সালের মার্চ মাসে নগরকান্দা উপজেলা থেকে আটটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠন করা হয় সালথা থানা।
২০০৬ সালে সালথা থানাকে উপজেলায় উন্নীত করার পর ২০০৮ সালে সম্পুর্ণরুপে উপজেলার কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে উপজেলা হিসেবে প্রায় সব ধরনের সুবিধা পেলেও স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছেননা স্থানীয়রা। সালথা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ওমা. ওয়াদুদ মাতুব্বর জানান, সালথা উপজেলা চার লক্ষাধিক লোকের বসবাস,যাদের স্বাস্থ্য সেবায় আজো চালু করা সম্ভব হয়নি উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্র। তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে জেলার সমন্বয় সভাসহ বিভিন্ন দপ্তরে ধরনা দিয়েও কোন লাভ হয়নি। তিনি আরও দাবী করেন, হাসপাতালের এ উপজেলার মানুষের স্বাস্থ্য সেবা চরমভাবে বিগ্ন হচ্ছে। স্থানীয়দের দাবী, সালথা উপজেলার চারলাখ মানুষকে স্থান ভেদে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দুরের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়, ডা রীতিমত দু:সাধ্য নিন্ম আয়ের ও মধ্য বিত্তের মানুষের জন্যে। উপজেলার বালিয়া গোট্রি গ্রামের ৬৫ বছর বয়স্ক শমসের মোল্লা জানান, র্দীর্ঘ দিন ধরে তিনি হাপানী রোগে ভুগছেন।
২৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তাকে জেলা সদরের ফমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়, যা তার জন্যে কষ্টসাধ্য। উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের মানুষের দাবী, অবিলম্বে সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চালু করা হলে স্বাস্থ্য সেবার ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে কয়েক লাখ মানুষ। তাই শিঘ্রই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি চালু করা দাবী তাদের। ফরিদপুরের স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাহাবুল আলম জানান, উপজেলার বালিয়া গোট্রি এলাকায় এ একর জায়গার উপরে তিনটি প্যাকেজে ১৮ কোটি ৮০লাখ টাকা ব্যায়ে সালথা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্মাণ কাজ ২০১৭ সালের জুন মাসে শেষ হচ্ছে। ৫০ শয্যার বেডের এ কমপ্লেক্সের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০১৫ সাথে। তিনি জানান, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করে কমপ্লেক্সের মোট পাঁচটি ভবন বৈদ্যুতিক সাবষ্টেশনসহ অন্যান্য স্থাপনা ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে স্বাস্থ্য বিভাগকে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। প্রথম পর্যায়ের নির্মাণ করা ভবনগুলো বুঝে পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন বলেন কমপ্লেক্সের সীমানা প্রাচীর ও আরও একটি কোয়ার্টার প্রয়োজন।
তিনি জানান, জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্টসহ কার্যক্রম অনুমোদনের জন্যে কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেয়া হয়েছে, কিন্তু কোন ধরণের প্রতিউত্তর অদ্যবদি পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, অনুমোদন ও কাঠামো অনুযায়ী জনবল ও লজিস্টিক সাপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব নয়। উল্লেখ্য, ভবনগুলো অব্যাবহৃত থাকায় সেখানে সংগঠিক হচ্ছে নানা ধরণের অপরাধ। স্থানীয়রা জানান, বাউন্ডারী ওয়াল এবং নিরাপত্তা প্রহরী না থাকায় প্রতিনিয়ত সন্ধ্যার পর সেখানে উশৃঙ্খল যুবকদের আড্ডা বসে। মাদকদ্রব্য সেবনসহ অনৈতিক কাজ সংগঠিত হয়। এছাড়া ভবনের জানালার গ্লাস ভাংচুর, বৈদ্যুতিক সুইচ বোর্ড, ও ছাদ দিয়ে দরজা ভেঙ্গে ভবনের মধ্যে প্রবেশ করে বৈদ্যুতিক ফ্যানসহ সরঞ্জামাদি চুরি করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এমনবি ভবনের স্যানিটেশনের পয়নিস্কাশনের পাইপও খুলে নিয়ে গেছে দূর্বৃত্তরা।
বিপি/কেজে
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন
-68eba6bfe183f.jpg)




নেত্রকোনার পূর্বধলায় ভাষা সৈনিক ইউনুস আলীর রাষ্ট্রীয় মর্যদায় দাফন সম্পন্ন
