১৪ অক্টোবর ২০২৫

লালমনিরহাটে মন্ত্রীর জেলায় বয়স্ক মানুষরা ছুটছে ভাতা কার্ডের জন্য

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
লালমনিরহাটে মন্ত্রীর জেলায় বয়স্ক  মানুষরা ছুটছে ভাতা কার্ডের জন্য

মোঃ মামুনুর রশিদ (মিঠু),লালমনিরহাট প্রতিনিধি: সমাজ কল্যান  প্রতিমন্ত্রীর জেলা লালমনিরহাট। জীবনের শেষ বয়ষে বৃদ্ধরা রয়েছে কষ্টে। পরিবারের বোঝা যেন তারা। ধর্ণা দিয়েও মিলছে না কার্ড। মন্ত্রীর জেলায় বয়স্ক মানুষ গুলো ছুটছে বয়স্ক ভাতা কার্ডের জন্য। সমাজ কল্যান মন্ত্রীর জেলা হলেও অধিকাংশ বয়স্ক মানুষ গুলোর কপালে জুটছে না কার্ড। একটি কার্ডের জন্য ৮০ থেকে ৯০ বছরের বৃদ্ধ মানুষ গুলো ছুটছে। কার্ড না পেয়ে হতাশায় বয়স্করা। নিরব সমাজ কল্যান বিভাগ। জেলার ৪৫টি ইউনিয়নে একই অবস্থা। দারিদ্রতার কষাঘাতে জীবন যুদ্ধে পেরিয়ে এসে শেষ প্রান্তে এসে বৃদ্ধ বয়ষে বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য হণ্য হয়ে ছুটছে লালমনিরহাট জেলার কয়েক হাজার বয়স্ক দরিদ্র পরিবারের বৃদ্ধ মানুষ। বয়স্ক ভাতার কার্ড না পেয়ে পরিবারের কাছে বোঝা হয়ে থাকা বৃদ্ধ মানুষ গুলো জীবন কাটাচ্ছে কষ্টে। কার্ড তালিকায় সরকারী কর্তকতাদের পরিকল্পনার অভাবে প্রকৃত দুস্থ্য মানুষ গুলো বঞ্চিত হয়ে পড়ছে সরকারী এ সাহায্য থেকে। জেলা প্রশাসকের আশ্বাসের বানী সবাই পাবে এ কার্ডের সুবিধা। উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা লালমনিরহাট। এ জেলার সীমানা রেখায় তিন ভাগের ১ ভাগ গ্রাস করেছে নদী। দারিদ্রতার কষা ঘাতে জর্জরিত কয়েক লাখ মানুষ।

কষ্টে জীবনযাপন করছে জীবনের শেষ সময়ের বৃদ্ধ বয়স্ক মানুষ গুলো। সরকারী ভাবে দরিদ্র বয়স্ক মানুষ গুলোর বয়স্ক ভাতার কার্ড চালু করলেও তা সিংহভাগ যাচ্ছে রাজনৈতিক দলের লোক ও মেম্বার চেয়ারম্যানের পছন্দের মানুষের মাঝে। বঞ্চিত হচ্ছে প্রকৃত বয়স্ক দারিদ্র মানুষগুলো। কার্ড বিতরনে অনিয়মের অভিযোগ তো রয়েছেই। বয়স্ক ভাতার কার্ড সোনার হরিণ হয়ে দাড়িয়েছে দারিদ্র পরিবারের বয়স্ক মানুষ গুলো। কার্ডের জন্য হণ্য হয়ে ঘুরচ্ছে কয়েক হাজার বৃদ্ধ নারী-পুরুষ। কার্ড না পেয়ে কষ্টে বসবাস করছে তারা। কারো ১১০ বছর কারো ৯০ বছর হলেও তারা পাচ্ছে না কার্ড। এ বয়ষে কার্ড এর সুযোগ না পেলে কবে পাবেদরিদ্র বয়স্ক মানুষ গুলো। রাজপুরের ৮০ বছরের জগদীশ চন্দ্র জানান, তার একটা কার্ডের জন্য অনেক ছুটাছুটি করনু লাভ হইল না। কাউন্সিল এ গিয়ে ধরর্ণা দিনু তাও কায়েও দিল না মোক বয়স্ক ভাতা কার্ড। খুনিয়াগাছ কালমাটির আব্বাস আলী জানালো বয়স্ক ভার্তা কার্ডের জন্য ১০ দিন ধরণা দিনু কার্ড হইল না টাকা চায় বয়স্ক ভাতা কার্ড এর জন্য। শেষ মেষ মুরগী বিক্রি করে টাকা দিনু তাও দেইল না কার্ড। চন্দ্রপুরের ননী বালা বয়ষ ৮৬ ছুই ছুই সে জানান, বয়স্ক ভাতা কার্ড এর জন্য ঘুরনু কার্ড আর হইল না মেম্বার বেটা ঘড় পাইসা চায় পাইসা না দিবার চায়া মোক আর কার্ড দেয় নাই। ওদিকে অনেকের বয়ষ ৭০ হালেও তার ভোটার আইডি কার্ডে বয়ষ কম থাকার কারনে ফিরে গেছে। বয়স্ক ভাতা না পেয়ে লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলার অনেক বৃদ্ধ পড়েছে হতাশায়।

সরকারীূ বিধি মতে নারী ৬২ বছর আর পুরুষ ৬৫ বছর বৃদ্ধরা সরকারী বয়স্ক ভাতা পাওয়ার কথা থাকলেও অপরিকল্পিত ভাবে বাছাই করায় অনেক যোগ্য ব্যাক্তি কার্ড পাওয়ার কথা থাকলেও বয়স্ক ভাতা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। তিস্তা,ধরলাসহ ৫টি নদী ভাঙ্গনে পরিবার গুলোর বৃদ্ধ মানুষ গুলোর থাকতে হচ্ছে অন্যর উপর নির্ভরশিল হয়ে। অন্যর উপর ধরর্ণা দিয়ে থাকা বয়স্ক মানুষ গুলোর অবহেলায় কাটছে দিন। নদী ভাঙ্গনের কড়াল গ্রাসে সর্বস্ব হারিয়ে তারা এখন নিশ্বঃ। পাটগ্রাম রেলওয়ে ষ্টেশন এলাকার দুলাল ব্যাপারী নামের শেষে ব্যাপারী দেখে অনেকে মনে করেন ব্যাপারী পরিবারের বৃদ্ধ মানুষের আবার কার্ড লাগবে কেন। বয়স ৭০ পেরিয়ে গেলেও পাননি বয়স্ক ভাতার একটি কার্ড । দুই ছেলে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে আলাদা থাকে, ১ মেয়ের বিয়ে দিয়ে দায় সেরেছেন। মেয়ে জামাইয়ের সাথে থাকেন বৃদ্ধ দুলাল ব্যাপারী। ছেলে, ছেলের বউ, মেয়ে, মেয়ে জামাই উঠতে বসতে খোটা দেয় এক বেলা খেতে দিয়ে। মনের দঃখে বৃদ্ধ ষ্টশন এলাকায় চুপ-চাপ বসে থাকে বয়স্ক ভাতার কথা বলতেই চটে যান কারন,তিনি তিক্ত। চেষ্টাও কম করেননি চেয়ারমেন মেম্বার এর কাছে কার্ডের বিষয়ে গেলে তারা বিরক্ত হন বলে তার অভিযোগ। এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা চেয়ারম্যান রুহুল আমিন বাবুল এর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হ্যা আমার কাছে অনেকেই আসে বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য তবে আপনারাও জানেন নিশ্চয় বর্তমান সরকারের বয়স্ক ভাতার কার্ড আমাদের অঞ্চলের চাহিদার তুলনায় একেবারে অপ্রতুল। তবে আমার পরিষদের আওতায় কোন বৃদ্ধ ভাতা পাওয়ার উপযোগী কেউ বাদ পরবেনা। সে লক্ষ্যে যা করনীয় আমার চেষ্টার কোন ত্রুটি থাকবে না।

এদিকে লালমনিরহাট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বলেন, আমি সব সময় আসাবাদী আমার এলাকার ভাতা পাওয়ার উপযুক্ত কোন বয়স্ক, সরকারী এই বয়স্ক ভাতা থেকে বঞ্চিত হবেনা। কারন, বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় সমাজ কল্যান মন্ত্রী আমাদের লালমনিরহাট জেলার সন্তান তাই আমি আসাবাদী, ভাতা বঞ্চিত যারা আছে অচিরেই মন্ত্রী মহাদয়ের হস্তক্ষেপে তাদের যাচাই-বাছাই পূর্বক বয়স্ক ভাতার আওতায় আনতে সক্ষ্যম হবো ইনসআল্লাহ্। লালমনিরহাট জেলায় বৃদ্ধ বয়স্ক ভাতা কার্ড সুবিধা পাওয়ার যোগ্য প্রায় আড়াই ২ লাখ মানুষ হলেও তার মধ্যে সরকারী ভাবে সমাজ সেবা অধিদপ্তরের মতে জেলায় কার্ড পেয়েছে ৫১ হাজার ৭শত ৫৬ জন। বাকী প্রায় ২ লাখ বৃদ্ধ মানুষের কার্ডের সুবিধা পাওয়ার যোগ্য হলেও তারা হয়ে পড়ছে বঞ্চিত। আরো বয়স্ক মানুষ যেন কার্ড এর সুবিধা পায় সে জন্য উপর মহলে জানানো হয়েছে বলে জানালেন লালমনিরহাট সমাজ সেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়। জেলা প্রশাসক মোঃ শফিউল আরিফ জানালেন কোন অনিয়ম হলে ব্যাবস্থা নেওয়া হবে এবং কার্ড পাওয়ার যোগ্য কেউ বাদ পড়লে তার কার্ড এর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে। সরকারী সহায়তা বৃদ্ধিও দাবী ভুক্তভ’গীদের।

বিপি/কেজে

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন