১৪ অক্টোবর ২০২৫

নেপালে তিন সংস্কারপন্থির শপথ

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৪২ পিএম
নেপালে তিন সংস্কারপন্থির শপথ

বাংলাপ্রেস ডেস্ক: নেপালের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি তাঁর মন্ত্রিসভা গঠন শুরু করেছেন। গতকাল সোমবার তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্র, অর্থ ও জ্বালানি এ তিন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী নিয়োগ দেওয়া হয়। সুশীলা ও তাঁর মন্ত্রীরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছেন। এদিন কাঠমান্ডুতে বিক্ষোভকারীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যাওয়া প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের বাইরে একটি ছাউনির নিচে এ শপথগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। শপথ পড়ান প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউদেল।

এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়, সামাজিক মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা ও দীর্ঘ দিনের অর্থনৈতিক দুর্দশাকে কেন্দ্র করে গত ৮ সেপ্টেম্বরে নেপালে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। এ সময় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭২ জন নিহত হন। আহত হন সহস্রাধিক। এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ১৯১ জন। বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে এক দশকের গৃহযুদ্ধের অবসান ও রাজতন্ত্রের বিলুপ্তির পর এটি ছিল দেশটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ অস্থিরতা।

এ প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব পান ৭৩ বছর বয়সী সাবেক প্রধান বিচারপতি প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কি। তিনি আগামী ৫ মার্চের নতুন নির্বাচনের আগে দুর্নীতিমুক্ত ভবিষ্যৎ গড়তে বিক্ষোভকারীদের দাবি পূরণের আশ্বাস দেন।

সুশীলার মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পেয়েছেন দুর্নীতি, শাসন ব্যবস্থা ও মানবাধিকার মোকাবিলায় মামলা লড়ে পরিচিতি পাওয়া আইনজীবী ওম প্রকাশ আরিয়াল। তিনি আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ও দেখবেন।

জ্বালানি, অবকাঠামো, পরিবহন ও নগর উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন নেপাল বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের সাবেক পরিচালক কুলমান ঘিসিং। দেশটির দীর্ঘস্থায়ী লোডশেডিং সমস্যা সমাধানের জন্য তাঁকে ব্যাপক কৃতিত্ব দেওয়া হয়। সাবেক অর্থ সচিব ও নেপালের খ্যাতিমান অর্থনীতিবিদ রামেশ্বর খানালকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বেকারত্ব ও অর্থনৈতিক মন্দা নেপালের জন্য বড় সমস্যা। এ কারণে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জে পড়তে যাচ্ছেন তিনি। বিশ্বব্যাংকের মতে, নেপালের ১৫-২৪ বছর বয়সী এক-পঞ্চমাংশ মানুষ বেকার, যাদের মাথাপিছু জিডিপি মাত্র এক হাজার ৪৪৭ ডলার।

নেপালে ভিডিও গেমারদের মধ্যে জনপ্রিয় একটি সামাজিক মাধ্যম অ্যাপ ব্যবহার করে বিশাল বিক্ষোভের সূচনা হয়। রয়টার্স জানায়, অপ্রত্যাশিতভাবে দেশের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গঠনেও অ্যাপটির ব্যবহার হয়েছেবিক্ষোভে অংশ নেওয়া অন্তত এক ডজন ব্যক্তি জানান, ‘হামি নেপাল’ (আমরাই নেপাল) নামের সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা ৩৬ বছর বয়সী সুদান গুরুংতিনি মেসেজ আদান-প্রদানের অ্যাপ ডিসকর্ডইনস্টাগ্রাম ব্যবহার করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকে সংগঠিত করেন

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ওই ব্যক্তিরা আরও বলেন, সংগঠনটি নিষিদ্ধ প্ল্যাটফর্মে প্রবেশের জন্য ভিপিএন ব্যবহার করেছে। তাদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভের ডাক এ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে হাজার হাজার তরুণের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল।

বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র আদিত্য রাওয়াল নেপালের পার্লামেন্টের বাইরে শত শত দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভকারীর সঙ্গে ছিলেন। যখন নিরাপত্তা বাহিনী গুলিবর্ষণ শুরু করে, তখন ১৪ জন তাঁর সামনে পড়ে যান। একজন তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়েরই বন্ধু ছিলেন। যখন তিনি হাত ওপরে তুলে সাহায্যের জন্য এগিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর গায়ে গুলি লাগে।

২২ বছরের ডিজিটাল মার্কেটার রাওয়াল রাজধানী কাঠমান্ডুর সিভিল সার্ভিস হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে এএফপিকে বলেন, ‘আমি কোথাও শুনেছি যদি তুমি উভয় হাত তোলো, তাহলে তারা গুলি চালাবে না। তবুও তারা তাকে লক্ষ্যে পরিণত করেছে।’

[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ]

বিপি/টিআই

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন