
সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গরিব মানুষ ঢুকতে পারে না: ফরহাদ মজহার


বাংলাপ্রেস ডেস্ক: কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার বলেছেন, মাজার মানেই মিলন মেলা। গণতন্ত্রের আরেক নামও মিলন মেলা। যখন শেখ হাসিনাকে তাড়ানো হয়, তখনো মিলন মেলা হয়েছিল। কিন্তু আজ যা ঘটছে, তা ভিন্ন। রাজধানীর মিরপুরে হযরত শাহ আলী (রহ.) মাজারে শতবর্ষী বটগাছ কাটা এবং সারাদেশে মাজারে হামলার প্রতিবাদে শনিবার সংবাদ সম্মেলন ও সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
মাজারে থাকা ভক্তরা জানান, গত বুধবার মাজার প্রশাসনের পক্ষ থেকে শতবর্ষী বটগাছের অনেকগুলো ডালপালা কেটে ফেলা হয়েছে। স্থানীয় কয়েকজন ফেসবুকে গাছ কাটার ছবি প্রকাশ করলে প্রতিবাদ শুরু হয়।
শাহ আলী (রহ.) মাজারে সংবাদ সম্মেলনে ফরহাদ মজহার বলেন, শতবর্ষী গাছ কেটে দেওয়া মারাত্মক অপরাধ। এটি কেবল একটি গাছ নয়— বহু পাখি, প্রাণী এবং মানুষের সাধনা ও স্মৃতিচারণার আশ্রয় ছিল। মাজারের ইতিহাস, ভক্তি ও সাধনার সঙ্গে এটি জড়িয়ে আছে। দেশের বহু প্রাণী বিলুপ্তির ঝুঁকিতে। এই গাছ কেটে প্রাণীদের আশ্রয় ধ্বংস করা হয়েছে।
সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে উদ্দেশ করে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নাই। সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে গরিব মানুষ ঢুকতে পারে না। আপনার সেই শিল্পকলা একাডেমিতে আমার পাগলদের জায়গা নেই। যেহেতু ওখানে জায়গা নেই, ওটাকে আমি সংস্কৃতি মানি না। শিল্পকলা একাডেমিকে বদলাতে হবে।’
ফরহাদ মজহার আরও বলেন, গাছ যারা কেটেছে, তারা ফৌজদারি অপরাধ করেছে। এরা কিছুদিন পরে মাজারও ভেঙে ফেলতে পারে। মাজারের অভ্যন্তরীণ পরিবেশ এবং ব্যবস্থাপনা কমিটি পরিবর্তন প্রয়োজন।
মাজার কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কী সাহসে এই গাছ কেটেছেন? এখানে অনুষ্ঠান চলছিল, সরকারের তিনজন উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন। তাদের অসম্মান করা হয়েছে। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন এবং বিস্মিত হয়েছিলেন, কীভাবে গান ও সাধনা বন্ধ করা হলো। এটার জবাব আপনাদের দিতে হবে।’
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা মোহাম্মদ রোমেল বলেন, মাজার মানেই পীর- মুর্শিদ, দরবেশ ও সাধুদের ভক্তি প্রকাশের স্থান। এটি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর দেশ জুড়ে গণপরিসরগুলো ধ্বংস করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে এছাড়া বক্তব্য দেন বাউলশিল্পী মহারাজ আবুল সরকার, গণসংহতি আন্দোলনের লুৎফুন্নাহার সুমনা, জাতীয় নাগরিক পার্টির রাফিউল ইসলাম, বাংলাদেশ তরিকত পরিষদের দ্বীন মোহাম্মদ চিশতী, মাজারে অবস্থানকারী ভক্ত তানভীর সুমন, নাসির হোসেন প্রমুখ।
বিপি/টিআই
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





