১৪ অক্টোবর ২০২৫

সৈয়দপুরে সুদ খোরের বেড়াজালে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৮ পিএম
সৈয়দপুরে সুদ খোরের বেড়াজালে সর্বশান্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ

রমজান আলী টুটুল, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি : নীলফামারীর সৈয়দপুরে সুদারুর অত্যাচারে সাধারণ মানুষ নিঃস্ব হয়ে পড়েছে। সুদখোররা অবৈধভাবে এ সুদের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাম কিংবা শহরে অসহায় পরিবার ও নিম্ন শ্রেণির ব্যবসায়ীরা তাদের প্রয়োজনে ওই সুদখোরদের পাল্লায় পড়ে অনেকে সর্বশান্ত হয়ে পড়েছে।

অনেকে বাড়ী ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। সুদখোররা টাকা দেওয়ার আগে তাদের কাছ থেকে ফাঁকা চেক ও ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে টাকা দিচ্ছেন। অনেকে টাকা পরিশোধ করলেও চেক ও ষ্ট্যাম্প ফেরত না দিয়ে হয়রানী করছে। পরবর্তীতে ওই চেক ও ষ্ট্যাম্প দিয়ে নিজের ইচ্ছামত টাকা বসিয়ে মামলা দিচ্ছে। এতে করে সুদখোররা আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হলেও প্রতারিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সুদারুর ফাঁদে পড়ে অনেক পরিবার বসবাস করার ভিটেমাটি গরু, ছাগল বিক্রি করে দিয়েও রেহাই পাচ্ছেন না। এরকম একটি ঘটনা ঘটেছে উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর পুকুরপাড়া গ্রামে। ঘটনাস্থলে গিয়ে ও প্রতারণার শিকার পরিবারটির সাথে কথা হলে এসব অভিযোগ করেন।

অভিযোগ থেকে জানা যায়, পুকুরপাড়া গ্রামে আজিজার রহমানের ছেলে লোকমান হাকিম তার নিকটতম আতœীয় হুগলিপাড়া গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে রতনের কাছ থেকে ২০১৩ সালে ৪০ হাজার টাকা সুদে নিয়ে জামানত হিসাবে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক হাজারী হাট শাখার সঞ্চয়ী হিসাবের একটি ফাঁকা চেক দেন। যার একাউন্ট নং ৮৩৫৪। ওই সালেই সুদ সহ ৬০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন লোকমান। টাকা পরিশোধ করার পর চেক ফেরত না দিয়ে উল্টো মামলার হুমকি দেয় রতন। পরে লোকমান পারিবারিক ঝামেলায় ব্যস্ত ও বাহিরে ছিলো।

এর মধ্যে লোকমান ১৯/২/২০১৮ইং সালে তার হিসাব নম্বরটি বন্ধের জন্য ব্যাংকে আবেদন করেন। আবেদনের ভিত্তিতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার একাউন্টে জমাকৃত ৫১৮ টাকা ফেরত দিয়ে একটি রশিদ দিয়ে তার একাউন্টটি বন্ধ করে দেন। কিন্তু ব্যাংক কর্তৃপক্ষ একাউন্ট বন্ধ থাকার পরও ১৭/০১/২০১৯ ইং তারিখে লোকমানের সাথে যোগাযোগ না করে চেকটি ডিসঅনার করে দেন। ওই চেক দিয়ে রতনের ভাই ইউপি সদস্য আজাদ রহমান ৮ লক্ষ টাকা বসিয়ে উকিল নোটিশ করেন। উকিল নোটিশে ৩০ দিনের মধ্যে টাকা না দিলে মামলার হুমকি দেয়া হয়েছে। উকিল নোটিশ পেয়ে লোকমান দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। তিনি বিভিন্ন জনের কাছে ওই মিথ্যা প্রতারণা মামলার বিচারের দাবী করেছেন। এদিকে সুদারুর ফাঁদে পড়ে লোকমানসহ তার পরিবারটি সর্বশান্ত হয়ে পড়েছেন। সুদের কারনে অনেক আত্মহত্যার ঘটনাও ঘটেছে। অভিযোগকারী সুদারুসহ জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে বিচারের দাবী জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে কথা হয় রতনের সাথে তিনি জানান, এক বছর আগে সুদের ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছি। তবে তার স্ত্রী সাথী জানান, ৫/৬ মাস আগে লোকমানকে ৫ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়েছেন সুদে। এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আজাদ রহমান জানান, টাকা যার কাছে নিক এখন আমার টাকা। আমি উকিল নোটিশ দিয়েছি নিদিষ্ট তারিখে মামলা দায়ের করা হবে।

এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে কথা হয় তৎকালীন হাজারী হাট কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সেকেন্ড অফিসার তৈয়বুর রহমানের সাথে তিনি দমভোক্তির সাথে বলেন, লোকমান হাকিম একাউন্ট বন্ধের আবেদন করেছিলেন এবং তার জমাকৃত টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। পরে আজাদ রহমান উল্লেখিত টাকার চেক নিয়ে আসলে আমরা ডিসঅনার করে দিই।

বিপি/আর এল

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন