
সৌদি জোট যুদ্ধাপরাধ করছে : জাতিসংঘ


বাংলাপ্রেস অনলাইন : ইয়েমেনে সৌদি জোটের বিমান হামলায় বহু বেসামরিক মানুষ হতাহত হচ্ছে। তারা বাজার, বিয়েবাড়ি এমনকি মাছ ধরার নৌকায়ও বোমা ফেলছে; এ সবই যুদ্ধাপরাধের সামিল বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা। সুন্নি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ ইয়েমেনে পশ্চিমা সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আব্দু-রাব্বু মনসুর হাদি সরকারকে ক্ষমতায় পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তাদের পক্ষে যুদ্ধ করছে সৌদি আরব নেতৃত্বাধীন জোট।
২০১৫ সালে হুতি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানার দখল নিয়ে হাদিকে গৃহবন্দি করেছিল। পরে হাদি গৃহবন্দিত্ব থেকে পালিয়ে যান এবং মিত্র দেশগুলোর সহায়তায় ক্ষমতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টা নেন। মানবাধিকার বিষয়ক স্বাধীন বিশেষজ্ঞ প্যানেল বলছে, সৌদি জোট ‘রেড সি’র বিভিন্ন বন্দর এবং সানা বিমানবন্দরে অত্যন্ত কড়াকড়ি ব্যবস্থা আরোপ করায় ইয়েমেন জুড়ে জরুরি ত্রাণ সরবরাহে বিঘ্ন ঘটেছে। এটিও আন্তর্জাতিক অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।
মঙ্গলবার বিশেষজ্ঞরা জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে তাদের প্রথম প্রতিবেদন জমা দেন। এতে বলা হয়, “বেসামরিক নাগরিক হতাহতের যেসব ঘটনা নথিভুক্ত করা হয়েছে তার বেশিরভাগই জোটের বিমান হামলার কারণে হয়েছে। গত তিন বছরে আবাসিক এলাকা, বাজার, শেষকৃত্যানুষ্ঠান, বিয়ের অনুষ্ঠান, কারাগার, বেসামরিক নাগরিকদের বহনকারী নৌকা এমনকি হাসপাতালেও বিমান হামলা চালানো হয়েছে।” ওই প্যানেল ১১টি ‘অত্যন্ত গুরুতর এবং উদ্বেগজনক হামলার’ ঘটনা নিয়ে তদন্ত করেছে যেগুলোর ক্ষেত্রে জোটের হামলার লক্ষ্যবস্তু ঠিক করার প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, “কখনও ইয়েমেনের সরকারি বাহিনী এবং কখনো সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ কোয়ালিশন বাহিনী থেকে এমন সব হামলা চালানো হয়েছে যেখানে হামলার ক্ষেত্রে বেসামরিক মানুষদের অবস্থানের মধ্যে পার্থক্য, অনুপাতিক অবস্থা ও সতর্কতার মূলনীতির গুরুতর লঙ্ঘন দেখা গেছে, যা যুদ্ধাপরাধ হিসেবে গণ্য হতে পারে।” জাতিসংঘের পক্ষ থেকে এ প্রতিবেদনের একটি অনুলিপি ইয়েমেন সরকারের কাছে পাঠানো হলেও তাৎক্ষণিকভাবে তারা কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
প্রতিবেদনে হুতি বিদ্রোহীরাও বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলা করেছে বলে জানানো হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, হুতি বিদ্রোহীরাও সৌদি আরবকে লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিমের নগরী তাইজে রসদ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে এবং কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এ নগরীতে গোলাবর্ষণ করেছে। তারা স্থানীয় বাসিন্দাদের নির্যাতন করেছে, যা যুদ্ধাপরাধ বলে জানায় ওই কমিটি।
ইয়েমেনে গৃহযু্দ্ধ অবসানের পথ খুঁজতে আগামী ৬ সেপ্টেম্বর জেনেভায় সরকার ও হুতি বিদ্রোহী প্রতিনিধিদের আলোচনায় বসার কথা রয়েছে। তার আগে দিয়ে ৪১ পাতার এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হল।
বাংলাপ্রেস/এফএস
আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





গাজা শান্তি সম্মেলনে ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে ‘সুন্দরী’ বললেন ট্রাম্প
