
তৃতীয়বারের মতো এমি অ্যাওয়ার্ড জিতলেন বারাক ওবামা


ইমা এলিস: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা তৃতীয়বারের মতো এমি অ্যাওয়ার্ড জিতেছেন। ২০২৫ সালের ৭ সেপ্টেম্বর লস অ্যাঞ্জেলেসের পিকক থিয়েটারে অনুষ্ঠিত ৭৭তম ক্রিয়েটিভ আর্টস এমি অ্যাওয়ার্ডসে নেটফ্লিক্সের আমাদের মহাসাগর (Our Oceans)–এর জন্য তিনি আউটস্ট্যান্ডিং ন্যারেটর বিভাগে সম্মাননা অর্জন করেন। এ বিভাগে অন্য মনোনীত ছিলেন টম হ্যাঙ্কস, ডেভিড অ্যাটেনবরো ও ইদ্রিস এলবা। তবে আমাদের মহাসাগর –এ ওবামার কণ্ঠস্বর ও বর্ণনা এতটাই অসাধারণ ছিল যে তিনি প্রতিযোগীদের হারিয়ে সেরা নির্বাচিত হন।
এই মুহূর্তটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঝড় তোলে। তাঁর শান্ত অথচ দৃঢ় কণ্ঠের ক্লিপ ও ভক্তদের শ্রদ্ধা নিবেদনে প্লাবিত হয় প্ল্যাটফর্মগুলো। ভক্তরা তাঁকে আখ্যা দেন 'এক প্রজন্মের কণ্ঠস্বর' হিসেবে। এটি শুধু একটি এমি জয় নয়, বরং এক রাজনৈতিক শক্তিমান নেতার অসাধারণ গল্পকার হয়ে ওঠার যাত্রাকেও তুলে ধরে।
নভেম্বর ২০২৪-এ মুক্তি পাওয়া পাঁচ পর্বের নেটফ্লিক্স সিরিজ আমাদের মহাসাগর –এ ওবামার বর্ণনা ছিল আবেগঘন। বিশেষ করে ভারত মহাসাগর কেন্দ্রিক পর্বে তিনি প্রবালপ্রাচীর সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়াবহ প্রভাব নিয়ে যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা দর্শকদের গভীরভাবে নাড়া দেয় এবং বৈশ্বিক আলোচনার জন্ম দেয়। দুর্দান্ত আন্ডারওয়াটার ডকুমেন্টারি শৈলীতে নির্মিত এ সিরিজে দর্শকরা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য—রঙিন প্রবাল উদ্যান থেকে শুরু করে আর্কটিক ওয়ালরাস কলোনি পর্যন্ত—ঘনিষ্ঠভাবে দেখতে পান। ওবামা বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলোকে শান্ত অথচ প্রভাবশালী ভঙ্গিতে উপস্থাপন করেন।
এর আগে তিনি আমাদের মহান জাতীয় উদ্যানগুলি (Our Great National Parks, ২০২২) এবং কাজ: আমরা সারাদিন কী করি (Working: What We Do All Day, ২০২৩)–এর জন্যও এমি জিতেছিলেন। এবার আমাদের মহাসাগরসহ টানা তিনটি প্রাইমটাইম এমি জয় প্রমাণ করছে, ডকুমেন্টারির বর্ণনায় ওবামার কণ্ঠ এক নিরবচ্ছিন্ন শক্তি হয়ে উঠেছে।
২০২৫ সালের ক্রিয়েটিভ আর্টস এমিতে ওবামা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন ইদ্রিস এলবা (Erased: WW2’s Heroes of Colour), ফোবি ওয়ালার-ব্রিজ (Octopus!), টম হ্যাঙ্কস (The Americas) ও ডেভিড অ্যাটেনবরো (Planet Earth: Asia)–এর মতো তারকাদের সঙ্গে। উপস্থাপক জর্ডান ক্লেপারের হাতে পুরস্কার গ্রহণের মুহূর্ত থেকেই এটি ভাইরাল হয়ে ওঠে। ক্লেপার রসিকতা করে বলেন, “মনে হচ্ছে, আজ রাতে বারাক ওবামা আসতে পারেননি।” এরপরই এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্ম ভরে যায় ওবামার ২০১৬ সালের বিখ্যাত মাইক্রোফোন ছুঁড়ে ফেলার (mic-drop) জিআইএফ-এ। ভক্তরা লিখতে থাকেন— “ওবামা এমি জিতছেন, যেমনটা তিনি প্রচারাভিযানে জয় পেয়েছিলেন।” কয়েক হাজার রিটুইট ও প্রশংসার বন্যা প্রমাণ করে, রাজনীতি, বিনোদন ও সামাজিক আন্দোলনের সেতুবন্ধন গড়তে তাঁর অনন্য দক্ষতা রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট থাকার পর নিজের নতুন পথচলায় ওবামা গড়ে তুলেছেন Higher Ground নামের প্রযোজনা সংস্থা, মিশেল ওবামার সঙ্গে মিলে। এর মাধ্যমে তিনি নানা শিক্ষামূলক ও অনুপ্রেরণামূলক গল্প বিশ্ববাসীর সামনে এনেছেন। Our Oceans–এর নির্বাহী প্রযোজক জেমস হানিবর্নের নেতৃত্বে এই প্রকল্প ওবামার পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যকে আরও শক্তিশালী করেছে।
এছাড়া ওবামা দুইবার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডও জিতেছেন— Dreams from My Father (২০০৬) এবং The Audacity of Hope (২০০৮)–এর জন্য সেরা স্পোকেন ওয়ার্ড অ্যালবাম বিভাগে। নীতিনির্ধারক থেকে শুরু করে নেটফ্লিক্স দর্শক পর্যন্ত সবার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ক্ষমতা তাঁকে রূপ দিয়েছে এক সাংস্কৃতিক শক্তিতে।
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।] বিপি। সিএসআপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন





গাজা শান্তি সম্মেলনে ইতালির প্রধানমন্ত্রীকে ‘সুন্দরী’ বললেন ট্রাম্প
