১৪ অক্টোবর ২০২৫

উন্নয়ন চাইলে আবারো ‘নৌকা মার্কায়’ ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২:৩৭ পিএম
উন্নয়ন চাইলে আবারো ‘নৌকা মার্কায়’ ভোট দিন: প্রধানমন্ত্রী
সাবেদ সাথী, নিউ ইয়র্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করছেন তাদের চাওয়া পাওয়ার কিছুই থাকতে পারে না।আপনি কি পেয়েছেন সেটার চেয়ে আপনি দলকে কী দিয়েছেন সেটাই হচ্ছে বড় কথা ? আমি তো কখনোই কারো কাছে কিছু চাইনি।আমি যা পেয়েছে এসব দল আমাকে দিয়েছে।তাই দেশের সার্বিক উন্নয়নকে অব্যাহত রাখতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আওয়ামীলীগকে জয়যুক্ত করতে হবে।স্থানীয় সময় রবিবার রাতে নিউ ইয়র্কের ম্যানহাটনের হিলটন হোটেলে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত প্রবাসী নাগরিকদের দেওয়া এক সংবর্ধনায় এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির দুঃশাসন এবং দুর্নীতির কারণে দেশে জরুরি সরকার আসে।খালেদা জিয়ার পছন্দের সেই ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনরা ক্ষমতায় এসেই প্রথমে আমাকেই জেলে নিয়েছিল।সেই জেলখানায় বসেই আমি দিন বদলের সনদ তৈরি করেছিলাম। আমরা ক্ষমতায় এলে কোন সালে কী করবো।সেই মোতাবেক আমরা দিনবদল করেছি, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করেছি। এবার ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি।সবার হাতেই এখন মোবাইল ফোন।তবে দেশকে ডিজিটাল করে সুবিধার পাশাপাশি অসুবিধাও দেখা দিয়েছে।অনেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়েছে। সেই অপপ্রচার বন্ধে এবং সামাজিক নিরাপত্তায় আমরা ডিজিটাল আইন পাস করেছি। কিন্তু সমস্যা তৈরি করছে সাংবাদিকরা।সাংবাদিকরা নিজের স্বার্থ ছাড়া অন্য কিছু বোঝে না। এর আগে তো এত পত্রিকা আর চ্যানেল ছিল না।এত পত্রিকা আর প্রাইভেট চ্যানেল সব আমিই করে দিয়েছি।আমরা সাংবাদিকদের স্বাধীনতায় তো কোন হস্তক্ষেপ করছি না।রাত জেগে ছোট ছোট ছেলেমেয়ারা সময় নষ্ট করছে। অনেকেই সরকার বিরোধী অপপ্রচার করে বেড়াচ্ছেন এসব বন্ধের জন্যই আমরা এ আইন করেছি। এটা সাংবাদিকদের বুঝতে হবে। তারা শুধু নিজেদের স্বার্থ দেখবেন তা হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনের সময় অনেকেই স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা করেছে। তিন দিনের মাথায় আমরা দেখলাম বিভিন্ন লেবাসে বুড়া খোকাদের।এক বেহায়া বেশরম মেয়ে নিজের গায়ের ওড়না, কাপড় খুলে বলেছে তাকে নাকি ধর্ষন করা হয়েছে।পরে আমরা কি জানলাম এটাও একটি সাজানো নাটক ছিল। একজন ফটো সাংবাদিক সরকারের বিরোধিতায় নেমে পড়লেন।পুলিশ তাকে বুঝানো চেষ্টা করলেন, তিনি পুলিশকেও ধমক দিয়ে বললেন, আমি বলে দেবো আপনারা আমাকে নির্যাতন করছেন। তখন পুলিশ উনাকে চালান করে দেয়।এখন তা নিয়ে দেশে বিদেশে নানা সোরগোল পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিনরা আমাকে জেলে আটক করেছিল এবং আমার সকল দুঃসময়ে প্রবাসীরা সোচ্চার ভুমিকা পালন করেছেন, আন্দোলন করেছেন।এজন্য আমি আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ।শুধু তাই নয় দেশের দুঃসময়েও আপনারা সবসময় পাশে দাঁড়িয়েছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার সময় প্রবাসীরা সোচ্চার ছিলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ও আন্দোলন করেছেন সর্বোপরি বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট অবদান রেখে চলেছেন। শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা-নিউ ইয়র্ক বিমান চলাচলের প্রক্রিয়া চলছে।এদেশের আইন অনুযায়ী শ্লট পেলেই ঢাকা-নিউ ইয়র্ক বিমান পুনঃরায় চলাচল করবে।তখন আপনারা অনায়েসে ও নিশ্চিন্তে দেশে যাতায়াত করতে পারবেন। বর্তমান সরকার মানুষের কল্যাণেই কাজ করে থাকেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে আমেরিকায় হয়তো আর আসার সুযোগ হবে না।তাই আমি আজই আপনাদের কাছে বলে যাচ্ছি দেশের উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে নৌকায় ভোট দিয়ে আবার আওয়ামী লীগকে জয়যুক্ত করতে হবে।দেশে থাকা আপনাদের আত্মীয়-স্বজনদের নৌকায় ভোট দিতে বলবেন। তিনি বলেন,আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন হয়, আর অন্য দল ক্ষমতায় এলেই শুরু হয় দুর্নীতি আর লুটপাট।দেশের মানুষ শান্তিতে আছে।শুধু শান্তিতে নেই বিএনপি।আর নতুন করে যোগ হয়েছে যুক্তফ্রন্ট। তিনি আরো বলেন, বিএনপিসহ খুনি, দুর্নীতিবাজ, সুদখোর, বাড়ি দখলকারী-সুবিধাভোগীরা যুক্তফ্রন্ট করেছে। তারা সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র করছে।এদের বিরুদ্ধে্ প্রবাসীদেরকেও সজাগ থাকার আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, আমার চাচা কামাল হোসেন, তারেকের বদু কাকা (বি. চৌধুরী), এরশাদ-জিয়ার সুনজরে থেকে ডাকসুর নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না, সুদখোর ড. ইউনূস, কাকরাইলে বাড়ি দখলকারী ব্যারিস্টার মঈনুল, মৃত ব্যক্তির জাল সাটির্ফিকেট তৈরি করে গুলশানে বাড়ি দখলকারী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদরা যুক্তফ্রন্ট করেছেন। ড. ইউনুস হিলারির সহযোগিতায় বর্তমান সরকারকে দূর্নীতিবাজ প্রমাণ করার চেষ্টা করেছিল। আমি চ্যালেঞ্জ করেছিলাম। পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোন দুর্নীতি হয়নি। বলেছিলাম আপনারা প্রমাণ দেখান। তারা ব্যর্থ হয়েছে।কানাডার আদালত বিশ্ব ব্যাংকের সেই অভিযোগ খারিজ করে দেয়। তিনি বলেন, বিএনপি এত দুর্নীতি করেছে যে তারা এফবিআই’র অফিসার ক্রয় করেছিল সজিব ওয়াজেদ জয়কে হত্যা এবং অপহরণ করতে। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া সাজাপ্রাপ্ত আসামি তাই জেলে রয়েছে, তারেক রহমান ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার সাজাপ্রাপ্ত আসামী। এসব মামলা আমার সরকার করেনি। তার পছন্দের লোকজনই করেছিলো। তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে এসেছি। জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় থাকবো, না দিলে থাকবো না। আমার চাওয়া-পাওয়ার কিছু নেই। https://www.facebook.com/sabedsathee/videos/2099412256738501/ তিনি আরো বলেন, আমরা ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। আমার বোন রেহানা আমাকে বলেছে ১৬ কোটি মানুষকে খাওয়াতে পারলে ১১ লাখ রোহিঙ্গাকেও খাওয়াতে পারবে না কেন? তাই আমরা ১১ লাখ ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে তাদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঞ্চে আগমনের আগে ও পরে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মিরা বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুরের বিরুদ্ধে ‘নো মোর সিদ্দিক, নো মোর সিদ্দিক’ বলে শ্লোগান দিতে থাকেন।সভাপতির বিরুদ্ধে এসব শ্লোগান প্রধানমন্ত্রীর কানেও পৌঁছান। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের সঞ্চালনায় সংবর্ধনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম এমপি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির দপ্তর সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ প্রমুখ। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক এলাহী চৌধুরী, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এমপি, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ফজলুর রহমান, আক্তার হোসেন, সৈয়দ বসারত আলী, লুত্ফুল করিম, শামসুদ্দীন আজাদ, আবুল কাশেম ও মাহবুবুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক নিজাম চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক আইরীন পারভীন ও মোহাম্মদ আলী মানিক মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন। বিভিন্ন অঙ্গরাজের আওয়ামীলীগের নেতাকর্মিদের প্রতিবাদে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবারে প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে নেতাকর্মিদের আসন সীমিত করা হয়।বেশ কয়েক বছর ধরেই নেতাকর্মিরা অভিযোগ করে আসছে যে প্রতি বছর প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে বসার জন্য চেয়ারপ্রতি মোটা অংকের অর্থ আদায় করেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতিসহ কতিপয় নেতা।ফলে জামাত শিবির ও রাজাকারের দোষরাও মঞ্চে উঠার সুযোগ পেয়েছিলেন। এবারো একজন রাজাকারের ভাইকে মঞ্চে বসে থাকতে দেখা গেছে। এ নিয়ে অনেকেই  ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এবারেই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রবেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ কর্তৃক প্রবেশ পাশ চালু করেছেন। পাশ ছাড়া মিডিয়া কর্মিদেরও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি।এজন্য যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদকের উপর গণমাধ্যমকর্মিসহ স্থানীয় নেতাকর্মিদের অনেকেই ক্ষুব্ধ।
[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন