১৪ অক্টোবর ২০২৫

উপদেষ্টাদের অনেকেই নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন : নাহিদ

Logo
বাংলা প্রেস প্রকাশ: ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:২৯ পিএম
উপদেষ্টাদের অনেকেই নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন : নাহিদ

 

বাংলা প্রেস ডেস্ক: জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘উপদেষ্টা পরিষদের অনেককেই বিশ্বাস করাটা ছিল বড় ভুল। তাদের প্রতি আস্থা রেখে প্রতারিত হতে হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টারা অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন, তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন।’

সম্প্রতি বেসরকারি একাত্তর টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এ সময় তিনি সেসব উপদেষ্টাদের নাম প্রকাশেরও হুঁশিয়ারি দেন।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যারা উপদেষ্টা হয়েছেন— তাদের অনেককেই বিশ্বাস করাটা আমাদের ভুল হয়েছিল। আমাদের উচিত ছিল ছাত্র নেতৃত্বকেই শক্তিশালী করা, সরকারে গেলে সম্মিলিতভাবে যাওয়া। নাগরিক সমাজ বা রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর যে আস্থা আমরা রাখছিলাম, সে জায়গায় আসলে আমরা প্রতারিত হয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘অনেক উপদেষ্টা নিজেদের আখের গুছিয়েছেন, অথবা গণঅভ্যুত্থানের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছেন। সময় আসলে তাদের নামও আমরা উন্মুক্ত করবো।’

উপদেষ্টার আসনে ছাত্রনেতারা বসার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে নাহিদ বলেন, ‘আমরা কেউই সরকারের উপদেষ্টা পদে যেতে চাইনি। জাতীয় সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। তাহলে কিন্তু ছাত্রদের এই দায়িত্ব পালন করা লাগতো না। যদি অভ্যুত্থানের শক্তি সরকারে না থাকতো, তাহলে এই সরকার তিন মাসও টিকতো না।’

তিনি বলেন, ‘এ সরকারকে উৎখাত করার, প্রতিবিপ্লব করার চেষ্টা চলমান ছিল প্রথম ছয় মাস। এখনও আছে কিছুটা। যদি রাজনৈতিক দলগুলো সম্মত হয়ে নাগরিক সরকার করতো, তাহলে কিন্তু ছাত্রদের কাঁধে এ দায়িত্ব আসতো না। সময়ের প্রয়োজনে এ দায়িত্ব আমাদের নিতে হয়েছিল।’

উপদেষ্টাদের অনেকে সেফ এক্সিট নিয়ে এখনই ভেবে রেখেছেন বলেও দাবি করেন নাহিদ। তিনি বলেন, ‘উপদেষ্টারা অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজোঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিটের কথা ভাবছেন। এটা আমাদের অনেক পোহাতে হচ্ছে বা পোহাতে হবে। তারা যদি বিশ্বাস করতেন যে, তাদের নিয়োগ কর্তা গণঅভ্যুত্থানের শক্তি, এ দেশের সাধারণ মানুষ যারা জীবন দিয়েছেন, আহত হয়েছেন— তাদের ওপর ভরসা রাখতেন, তাহলে উপদেষ্টাদের এই বিচ্যুতি হতো না।’

অন্তর্বর্তী সরকারের সাবেক এই উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘৫ আগস্ট ক্যান্টনমেন্টে সেজদা দিয়েছেন রাজনৈতিক নেতারা, ছাত্ররা নয়।’ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের নিয়ে সরকার গঠন না করে, জাতীয় সরকার গঠন করলে আক্ষেপ তৈরি হতো না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। পরে ৮ আগস্ট ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়। সেই সরকারের উপদেষ্টা পরিষদে ছাত্রদের মধ্য থেকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান নাহিদ ইসলাম। এছাড়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়াকে দেওয়া হয় ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। পরবর্তীকালে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করেন মো. নাহিদ ইসলাম।

পদত্যাগের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়কের দায়িত্ব নেন তিনি, এখনও সেই পদ সামলাচ্ছেন।

এদিকে নাহিদের পদত্যাগের পর তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয় আরেক ছাত্র প্রতিনিধি মাহফুজ আলমকে। তিনি এবং আসিফ মাহমুদসহ দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা এখনও ড. ইউনূসের সরকারে রয়েছেন।


বিপি< আর এল 

[বাংলা প্রেস হলো মুক্ত চিন্তার একটি বৈশ্বিক প্রচার মাধ্যম। এটি স্বাধীনচেতা মানুষের জন্য নিরপেক্ষ সংবাদ, বিশ্লেষণ ও মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজকের দিনে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

মন্তব্য (0)

আলোচনায় যোগ দিন

আপনার মতামত শেয়ার করতে এবং অন্যান্য পাঠকদের সাথে যুক্ত হতে দয়া করে লগইন করুন।

এখনো কোন মন্তব্য নেই

Be the first to share your thoughts on this article!

আপনি এগুলোও পছন্দ করতে পারেন