জবি প্রতিনিধিঃ পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক হতে সদরঘাট ফুটওভার ব্রীজ পর্যন্ত শ্রমজীবী হকারদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। হকারদের উপর চলমান জুলুম নির্যাতন বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন।
বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) সংগঠনটির একাধিক নেতা বিষয়টি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির ও সাধারণ সম্পাদক হযরত আলীর স্বাক্ষরিত একটি চিঠি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানান হকার্স ইউনিয়নের নেতারা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক থেকে সদরঘাট ফ্লাইভার পর্যন্ত এলাকায় রাস্তার পাশে ফুটপাতে কিংবা খালি জায়গায় হকারি করে প্রায় শতাধিক লোক জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিদিন বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টায় এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে ৭টায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গ্রুপ এবং সাধারণ সম্পাদক গ্রুপ পরিচয়ে পর্যায়ক্রমে দুইবার দল বেঁধে হকারদের নিকট থেকে অর্থ উত্তোলন করা হয়।
আরও বলা হয়েছে, কোনো হকার দাবিকৃত অংকের টাকা দিতে অপারগ হলে তাদের শারীরিকভাবে নির্যাতন করা হয়। গত চার মাস থেকে এই অত্যাচার শুরু হয়েছে, বহু জায়গায় বলেও হকারদের এই সংকটের সুরাহা করা সম্ভব হয়নি।
ঈদের সময়ে শতাধিক হকারের জীবন জীবিকার সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে বহু বছর ধরে রুটি-রুজি করে আসা পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকার হকারদের ওপর দুইমাস ধরে চলমান জুলুম-নির্যাতন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটি নেতারা।
এ বিষয়ে সংগঠনটির সভাপতি আব্দুল হাশিম কবির জানান, বেশ কিছুদিন আগে সদরঘাট এলাকায় আমরা একটি প্রোগ্রাম করতে যাই। সেখানে ওই এলাকার ভুক্তভোগী হকার্সরা আমাদেরকে বিষয়টি জানান। আমরা বিষয়টি চিঠির মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে জমা দিয়েছি।
হকার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ফিরোজ বলেন, আমরা বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে একটি চিঠি জমা দিয়েছি। পরবর্তীতে আমরা ডিএমপি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েও চিঠি পাঠাবো। এরপর তিন চারদিন অপেক্ষা করে দেখবো কি পদক্ষেপ নেয়া হয়। তা না হলে পরবর্তী কর্মসূচি গ্রহণ করবো।
অভিযোগের বিষয়টি অস্বীকার করে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, কেউ যদি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে চাঁদা তুলে তাহলে এর দায়ভার তো আমরা নিব না। ক্যাম্পাসের আশেপাশে আমাদের কোনো কর্মী চাঁদাবাজি করে না, আর ছাত্রলীগে চাঁদাবাজির কোনো জায়গা নেই।
শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন বলেন, একটা অভিযোগ দিয়ে চিঠি দিয়ে দিলেই তো কোনো কিছু প্রমাণ হয়ে যায় না। চাঁদাবাজির কোনো ভিডিও, রেকর্ডিং তো নাই। এসব মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে শুধু ছাত্রলীগের সুনাম নষ্ট করতে চাচ্ছে। আর তারা যদি আমাদের কারও প্রতি চাঁদাবাজির প্রমাণ দিতে পারে তাহলে আমরা সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিবো।
বিপি>আর এল