বাংলাপ্রেস ডেস্ক: পাকিস্তানের বোলারদের সামনে রীতিমত বিধ্বস্ত হয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। স্বল্প রানের লক্ষ্য দিয়ে বল হাতেও সুবিধা করতে পারেনি সাকিব আল হাসানের দল। টাইগার বোলারদের তুলোধুনো করে ৭ উইকেটের বড় জয় পেয়েছে পাকিস্তান।
কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টসে জিতে ব্যাটের সিদ্ধান্ত নেন সাকিব আল হাসান। নেমে ৪৫.১ ওভারে ২০৪ রানে থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। জবাবে নেমে ফখর জামান ও আবদুল্লাহ শফিকের দুর্দান্ত ইনিংসে ৩৩তম ওভারের তৃতীয় বলে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে পাকিস্তান।
এ নিয়ে আসরে সাত ম্যাচে তিনটি জয় পেল পাকিস্তান। তিন জয়ে ছয় পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের পাঁচে উঠে আসলো তারা। সেই সঙ্গে টিকিয়ে রাখলো সেমিফাইনালে কোয়ালিফাই করার সম্ভাবনা। অন্যদিকে টানা ষষ্ঠ হার দেখল বাংলাদেশ। একজয়ে অবস্থান টেবিলের নয়ে।
বাংলাদেশের দেয়া স্বল্প রান তাড়ায় নেমে কোনও ভুল করেননি পাকিস্তানের দুই ওপেনার। দেখেশুনেই শতাধিক রানের জুটি গড়েছেন। আঠারোতম ওভারের চতুর্থ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন আবদুল্লাহ শফিক। ৫২ বলে ফিফটি ছোঁয়া ইনিংসে ছিল নয়টি চারের মার।
পরের বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে শফিককে অনুসরণ করেন ফখর জামান। দুটি চার ও পাঁচটি ছক্কায় ৫১ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন পাকিস্তান ওপেনার।
২২তম ওভারের প্রথম বলে দলীয় ১২৮ রানে পাকিস্তানের উদ্বোধনী জুটিতে আঘাত হানেন মেহেদী হাসান মিরাজ। লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলে আবদুল্লাহ শফিককে ফেরান। ৬৯ বলে ৬৮ রান করে ফিরে যান শফিক।
টাইগারদের দ্বিতীয় সফলতাও এনে দেন মিরাজ। ২৬তম ওভারের চতুর্থ বলে দলীয় ১৬০ রানে বাবর আজমকে ফেরান তিনি। ১৬ বলে ৯ রান করে লংঅনে রিয়াদের হাতে ধরা পড়েন পাকিস্তান অধিনায়ক।
২৮তম ওভারের তৃতীয় বলে ফখর জামানকে তৃতীয় শিকার বানিয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে নিজের শততম উইকেট পূর্ণ করেন মিরাজ। শত উইকেটের মাইলফলক ছুঁতে মিরাজের লেগেছে ৮৯টি ম্যাচ।
অফস্ট্যাম্পের বাইরের বল টেনে খেলেন ফখর। মিডঅনের উপর দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে তাওহীদ হৃদয়ের হাতে ধরা দেন। তিনটি চার ও সাতটি ছক্কায় ৭৪ বলে ৮১ রানের ইনিংস খেলেন পাকিস্তান ওপেনার।
এরপর ইফতিখার আহমেদকে সঙ্গী করে পাকিস্তানকে জয়ের বন্দরে পৌঁছান মোহাম্মদ রিজওয়ান। ২১ বলে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন রিজওয়ান, ইফতিখার করেন ১৫ বলে ১৭ রান।
বাংলাদেশের হয়ে তিনটি উইকেটই নিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
এর আগে টসে জিতে ব্যাটে নেমে দিনের প্রথম ওভারেই শাহিন আফ্রিদির বলে লেগ বিফোরে কাটা পড়েন তানজিদ হাসান তামিম। দলীয় রানের খাতা খোলার আগে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নাজমুল হোসেন শান্তর উইকেটও নেন শাহিন। ৪ রান করে বাঁহাতি ব্যাটার ক্লিপ শট খেলে স্কয়ার লেগে থাকা উসামা মীরকে ক্যাচ দেন।
ষষ্ঠ ওভারে হারিস রউফের বলে খোঁচায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ইনিংসের অপমৃত্যু ঘটান ৫ রান করা মুশফিকুর রহিম। ২৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
সেখান থেকে রিয়াদের সঙ্গে ৭৯ রানের দারুণ জুটির পর ২১তম ওভারের পঞ্চম বলে ইফতিখার আহমেদের শিকার হন লিটন। ৬৪ বলে ৪৫ রানের ইনিংস খেলে মিডউইকেটে আঘা সালমানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।
২৬তম ওভারের শেষ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ৫৮ বলে ফিফটি ছোঁয়া ইনিংসে ছিল ৬ চার ও একটি ছক্কার মার। ফিফটির পর কিছুটা মন্থর ছিলেন। শেষ ১২ বলে তোলেন ৬ রান। ৩১তম ওভারের চতুর্থ বলে শাহিন আফ্রিদির তৃতীয় শিকার হন। ৭০ বলে ৫৬ রান করে বোল্ড হয়ে ফিরে যান রিয়াদ।
পরের ওভারেই ফিরে যান তাওহীদ হৃদয়। উসামা মীরের বলে ছক্কা হাঁকান মিডউইকেট অঞ্চল দিয়ে। পরে বলে খোঁচা দিয়ে ধরা পড়েন প্রথম স্লিপে, ইফতিখার আহমেদের হাতে।
পরে মেহেদী হাসান মিরাজকে নিয়ে ৪৫ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান। ৪০তম ওভারের তৃতীয় বলে দলীয় ১৮৫ রানে সাকিবকে ফেরান হারিস রউফ। ৬৪ বলে ৪৩ রান করে আঘা সালমানের হাতে ক্যাচ দেন টাইগার অধিনায়ক।
৪৪তম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন মোহাম্মদ ওয়াসিম। ওভারের প্রথম বলে দলীয় ২০০ রানে মিরাজকে ফেরান। ৩০ বলে ২৫ রান করে বোল্ড হন মিরাজ। তৃতীয় বলে ফেরান তাসকিন আহমেদকে। ৪৬তম ওভারের প্রথম বলে মোস্তাফিজকে ফিরিয়ে টাইগারদের ইনিংস গুটিয়ে দেন ওয়াসিম।
পাকিস্তানের হয়ে শাহিন শাহ আফ্রিদি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম ৩টি করে উইকেট নেন। হারিস রউফ নেন দুটি। উসামা মীর ও ইফতিখার আহমেদ নেন একটি করে উইকেট।
বিপি/কেজে