নিজস্ব প্রতিবেদক: যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প নিজ নিজ দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা নিশ্চিত করেছেন। ফলে চলতি বছরের নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠেয় ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দ্বিতীয়বারের মতো মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। দেশটির বর্তমান ও সাবেক কোনো প্রেসিডেন্ট বা গভর্নরের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘটনা ৬৮ বছরের মধ্যে এটাই প্রথম।
দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করতে বাইডেনের জন্য প্রয়োজন ছিল ১ হাজার ৯৬৮ প্রতিনিধির সমর্থন। জর্জিয়া রাজ্যে অনুষ্ঠিত দলীয় বাছাইপর্ব প্রাইমারির ফলাফল আসতে শুরু করায় মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাতে যথেষ্টসংখ্যক প্রতিনিধির সমর্থন নিশ্চিত করেন তিনি।
মিসিসিপি ও ওয়াশিংটন রাজ্য, নর্দান মারিয়ানা আইল্যান্ডস এবং বিদেশে অবস্থানরত ডেমোক্রেট প্রতিনিধিরাও মঙ্গলবার প্রাইমারিতে অংশ নিয়েছেন। এসব স্থান থেকে ফলাফল আসার আগেই মনোনয়ন নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটারের সমর্থন অর্জন করেন বাইডেন।
দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর এক বিবৃতিতে বাইডেন বলেছেন, আমেরিকার ধারণাকে হুমকির মুখে ফেলা ট্রাম্পের অসন্তোষ, অপমানজনক ও প্রতিশোধমূলক প্রচারণার মোকাবিলা করতে হবে।
একই দিন জর্জিয়াসহ চারটি রাজ্যে অনুষ্ঠিত প্রাইমারিতে জিতে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থিতা নিশ্চিত করে ফেলছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। প্রার্থিতা নিশ্চিত হওয়ার পর সমাজমাধ্যমে এক পোস্টে ট্রাম্প বলেন, আমাদের উদযাপনের কোনো সময় নেই। বাইডেন বধে আমাদের পূর্ণ মনোযোগ দিতে হবে।
বাইডেন ও ট্রম্পের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা মূলত আগেই নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল। কারণ ৮১ বছর বয়সি বাইডেনকে দলীয় প্রেসিডেন্টপ্রত্যাশীদের সঙ্গে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বীতায় করতে হয়নি। অন্যদিকে ৭৭ বছর বয়সি ট্রাম্পকে কিছুটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলেও তা তেমন একটা জমেনি। তার দলের বাকি প্রেসিডেন্টপ্রত্যাশীরা ট্রাম্পের তুলনায় ছিলেন অনেক নিষ্প্রভ।
২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাইডেন ও ট্রাম্প প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিলেন। সে নির্বাচনে হেরে কারচুপির অভিযোগ আনেন ট্রাম্প, যা এখনও পর্যন্ত প্রমাণ করা যায়নি। কিন্তু তা সত্ত্বেও এখনও ট্রাম্প ২০২০ সালের নির্বাচনে কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করে থাকেন।
হেরে ২০২০ সালের নির্বাচনী ফল বাতিল করতে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস ভবন অঞ্চল ক্যাপিটল হিলে জড়ো হয় ট্রাম্পের সমর্থকেরা। উদ্দেশ্যে ছিল ইলেকটোরাল কলেজের ভোট গণনার কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশন বাতিল করে ট্রাম্পকে ক্ষমতায় রাখা। কিন্তু তা ভণ্ডুল হয়।
কিন্তু ট্রাম্প সমর্থকেরা পুলিশের সঙ্গে দাঙ্গায় জড়িয়ে পড়ে। দেওয়াল টপকে ট্রাম্প সমর্থকেরা কংগ্রেস ভবনে ঢুকে পড়ে। ৩৬ ঘণ্টার দাঙ্গায় এক পুলিশসহ পাঁচজন নিহত হয়।
প্রতিনিধি পরিষদের তদন্তে দেখা গেছে, পরিকল্পিতভাবেই ট্রাম্প এ দাঙ্গা লাগিয়েছিলেন। এ জন্য তিনি সাত ধাপের পরিকল্পনা করেছিলেন। ৬ জানুয়ারির দাঙ্গা ছিল চূড়ান্ত পর্ব।
বাইডেনের আমলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলা চলমান রয়েছে। দেশটির ইতিহাসে আর কোনো সাবেক প্রেসিডেন্ট ফৌজদারি মামলার মুখে পড়েননি।
এ পরিস্থিতিতে দেশটির ৫ নভেম্বরের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোন নাটক মঞ্চস্থ হতে যাচ্ছে সেটা দেখার জন্য উদগ্রীব হয়ে আছে সারা বিশ্ব।
বিপি।এসএম