বাংলাপ্রেস ডেস্ক: মদনীতি কেলেঙ্কারির মামলায় গ্রেফতার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী ও আম আদমি পার্টির (এএপি) প্রধান অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
শুক্রবার (২২ মার্চ) রাউস এভিনিউ আদালতে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে ১০ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নেয়ার আবেদন জানায় কেন্দ্রীয় সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। আবেদনের শুনানি শেষে বিচারক ২৮ মার্চ পর্যন্ত তাকে হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।
ইডি আদালতে জানায়, আইনের নির্দিষ্ট ধারা মেনেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এএপি প্রধানের জামিনের বিরোধিতা করে ইডি আরও জানায়, অপরাধে সরাসরি যুক্ত ছিলেন কেজরিওয়াল। কিছু ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার জন্যই ওই আবগারি নীতি আপ প্রণয়ন করেছিল বলে দাবি করা হয়।
দিল্লিতে মদের দোকানের লাইসেন্স দেয়ার নীতি বদল করে কেজরিওয়াল এবং কয়েকজন মন্ত্রী ও নেতা মদ ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছেন, এই অভিযোগের তদন্ত করছে ইডি। এ মামলায় সার্চ ওয়ারেন্ট নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় কেজরিওয়ালের বাসভবনে অভিযান চালায় ইডি। সেখান থেকেই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়।
ভারতের ইতিহাসে কেজরিওয়ালই প্রথম মুখ্যমন্ত্রী, যিনি পদে থাকাকালে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন। কিছুদিন আগে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকেও গ্রেফতার করেছে ইডি। তবে তিনি কেজরিওয়ালের মত মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকাকালীন গ্রেফতার হননি।
এদিকে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ায় দিল্লির প্রশাসন কীভাবে পরিচালিত হবে সেই প্রশ্ন সামনে এসেছে। যদিও এএপি পার্টি স্পষ্ট করে বলেছে গ্রেফতার হওয়া সত্ত্বেও অরবিন্দ কেজরিওয়ালই দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী থাকবেন। কারাগার থেকে এএপি নেতার রাজ্য পরিচালনা করতে কোনো আইনি বাধা না থাকলেও কারাগারের নিয়ম অনুযায়ী কেজরিওয়ালের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে যাওয়া বেশ কঠিনই হওয়ার কথা।
দিল্লির তিহার জেলের সাবেক আইন কর্মকর্তা সুনীল গুপ্ত বলেন, একজন বন্দী এক সপ্তাহে মাত্র দুটি মিটিং করতে পারেন। তাই কেজরিওয়ালের পক্ষে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা কঠিন হবে।
তিনি বলেন, কারাগারে থেকে সরকার চালানো সহজ নয়। জেলের নির্দেশিকা বলে যে, আপনি সপ্তাহে মাত্র দুবার আপনার পরিবার, বন্ধুবান্ধব বা সহযোগীদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। তাই এই বিধিনিষেধ অনুসারে, শাসনকার্য চালিয়ে যাওয়া তার (কেজরিওয়াল) পক্ষে সহজ হবে না।
তবে ওই কর্মকর্তা বলেন, কেজরিওয়ালের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের একটি উপায় আছে। যেকোনো একটি ভবনকে কারাগারে রূপান্তরিত করার ক্ষমতা আছে লেফটেন্যান্ট গভর্নরের। আর কেজরিওয়াল যদি তাকে গৃহবন্দি করতে রাজি করাতে পারেন, তাহলে সেটিই কেবল তাকে দিল্লি সরকারের দৈনন্দিন কাজের অংশ হতে সহায়তা করবে।
অতীতেও আদালত ভবনকে অস্থায়ী কারাগার হিসেবে ব্যবহার করার নজির আছে ভারতে। সেই উদাহরণ টেনে সুনীল গুপ্ত বলেন,
প্রশাসকের কাছে যেকোন ভবনকে কারাগার হিসেবে ঘোষণা করার ক্ষমতা আছে। এই ধরনের পদক্ষেপ বন্দিদশায় থেকেও অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার পরিচালনাকে সহজ করতে পারে।
বিপি/টিআই