নিজস্ব প্রতিবেদক: আজ সোমবার শেষ হচ্ছে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জালিয়াতির মামলায় করা জরিমানার ৫০ কোটি ডলার জমা দেবার। আজকের মধ্যেই অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সম্পত্তির একাংশ জব্দ করা হতে পারে। ফলে মরিয়া হয়ে সেই বিশাল অঙ্ক জোগাড় করার চেষ্টা করছেন ট্রাম্প।
গত মাসে ট্রাম্পকে ১০ কোটি ডলার অঙ্কের বন্ড জমা দিয়ে আপাতত রেহাই পেতে আপিল করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো ৯১টি মামলায় জর্জরিত হলেও দমে যেতে প্রস্তুত নন। নিজের সংকট থেকে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে তিনি সমর্থকদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নিউ ইয়র্কের এক আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্প, তার ছেলেদের ও তার কোম্পানির বিরুদ্ধে মিথ্যাচারের অভিযোগ মেনে নিয়ে রায় দিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে সম্পদের প্রকৃত মূল্য গোপন করে তারা একাধিক ব্যাংক ও বিমা কোম্পানির বিরুদ্ধে প্রতারণা করেছেন। ট্রাম্প সেই রায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও আপাতত তাকে জরিমানার গ্যারান্টি হিসেবে সোমবারের মধ্যে ৪৫ কোটি ৪০ লাখ ডলার মূল্যের বন্ড জমা দিতে হবে। ট্রাম্পের আইনজীবীরা প্রায় ৩০টি বিমা ও বন্ড কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করেও প্রয়োজনীয় অঙ্কের বন্ড আদায় করতে পারছেন না। ট্রাম্পের সম্পত্তি বন্ধক রেখে তারা সেই ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত নয়। অন্যান্য ঋণ পেতে ট্রাম্প আগেই কিছু সম্পত্তি বন্ধক রাখার কারণেও সেটা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি করেছেন প্রাক্তন ফেডারেল কৌঁসুলি অ্যান্ড্রু ওয়াইসম্যান। সংবাদ সংস্থা এএফপি-কে তিনি সে কথা বলেন।
এদিকে, আজ সোমবারের মধ্যে প্রয়োজনীয় বন্ড জোগাড় করতে না পারলে ট্রাম্প অপমান ও মারাত্মক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে পারেন বলে একাধিক বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। একমাত্র অন্য আদালত বা নিউ ইয়র্কের অ্যাটর্নি জেনারেল হস্তক্ষেপ করলে হাতে তিনি কিছুটা বাড়তি সময় পেতে পারেন বলে জানা গেছে। অন্যদিকে, ট্রাম্প নিজে আদালতের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অভিযোগ করছেন। তাকে শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে পানির দরে সম্পত্তি বন্ধক বা বিক্রি করতে হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। এমনকি রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জয় হলেও সেই সম্পত্তি হাতছাড়া হয়ে যাবে।
সাবেক ফেডারেল প্রসিকিউটর পিটার কাটজ জানিয়েছেন, জরিমানার অর্থ না দিতে পারলে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ করাই সবচেয়ে সহজ ও ভালো উপায়। কারণ এরপর ব্যাংকই অর্থ দেওয়ার জন্য চাপ দিবে তার গ্রাহককে। ব্যাংকে ট্রাম্পের অ্যাকাউন্ট থেকে অ্যাটর্নি জেনারেলের অ্যাকাউন্টে অর্থ জমা হবে। তবে ট্রাম্পের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ নিতে হলে নিউ ইয়র্ক সিটি শেরিফ বা ইউএস মার্শালকে জানাতে হবে। এরপর ঐ অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান অফিসে যাবে। আর সম্পত্তি জব্দ করতে দীর্ঘ সময় লাগে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন। সম্পদ জব্দ করতে ৬৩ দিন লাগতে পারে।
বিপি।এসএম