নিজস্ব প্রতিবেদক: নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে সম্ভাব্য বিচারকদের অর্ধেককে বরখাস্ত করে দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফৌজদারি মামলার বিচার শুরু হয়েছে। সোমবার (১৫ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সকালে নিউইয়র্কের আদালতে শারীরিক সম্পর্ক নিয়ে মুখ না খুলতে পর্নো তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে ঘুষ দেওয়ার অভিযোগের মামলার শুনানিতে হাজির হন তিনি। এই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের কোনও সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফৌজদারি মামলায় বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্টর্মিকে এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ‘ঘুষ’ দেওয়ার ফৌজদারি মামলায় গত বছরের মার্চে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেছিল নিউইয়র্কের গ্র্যান্ড জুরি। এপ্রিলে তাকে ওই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদ ও গ্রেফতারও করা হয়েছিল; যদিও গ্রেফতারের পর জামিনে মুক্তি পেয়েছিলেন রিপাবলিকান পার্টির এই প্রবীণ নেতা।
প্রসিকিউটররা আদালতে বলেছেন, ট্রাম্প ২০১৬ সালের নির্বাচনে ‘বেআইনিভাবে প্রভাবিত’ করার জন্য এটি করেছিলেন। তবে ট্রাম্প দোষী নন বলে স্বীকার করেছেন।
আদালতে দাঁড়িয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটি একটি কেলেঙ্কারির বিচার। আপনি যদি আজ সব আইনি পণ্ডিতকে, সব আইনজ্ঞকে পড়েন, আমি এমন একটিও দেখিনি যে তারা বলেছেন, এটি এমন একটি মামলা, যার বিচার করা যায়। এটি রাজনৈতিক জাদুকরির শিকার।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি জর্জিয়া বা ফ্লোরিডা বা উত্তর ক্যারোলিনায় নয়, আমি আমার মতো প্রচারণা চালাচ্ছি। এটি উগ্র বাম ডেমোক্র্যাটদের জন্য উপযুক্ত। তারা ঠিক এটাই চায়। এটি নির্বাচনি হস্তক্ষেপ। এটি কেবল ষড়যন্ত্র।’
এদিন বিচারক আদালতকক্ষ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ট্রাম্প উত্তেজিত হয়ে পড়েন। বিচারপতি জুয়ান মার্চান তার চেম্বারে চলে যাওয়ার পর ট্রাম্প তার আইনজীবী টড ব্ল্যাঞ্চের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন। পরে তিনি বিরক্তি প্রকাশ করেন।
আদালত মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মুলতবি করেন আদালত। দিনের কার্যক্রম শেষে সম্ভাব্য বিচারকদের কেস সম্পর্কে সংবাদ কভারেজ এড়াতে এবং এটি সম্পর্কে তাদের নিজস্ব কোনও গবেষণা না করার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। এই মামলা মে মাস পর্যন্ত চলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ চার বছরের জেল হতে পারে ট্রাম্পের। তবে কারাদণ্ড এড়াতে জরিমানাও হতে পারে তার।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুলের ইতিহাস ও জননীতি বিভাগের অধ্যাপক অ্যালেক্স কিসার বলেন, ‘আমেরিকার ইতিহাসে এটি নজিরবিহীন ঘটনা। এর সঙ্গে তুলনীয় কিছু নেই।’
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তার সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে মুখ বন্ধ রাখতে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে সাবেক পর্নো তারকাকে মোটা অঙ্কের ঘুষ দেওয়া হয়েছিল। মুখ বন্ধ রাখতে ট্রাম্পের সাবেক আইনজীবী মাইকেল কোহেন ড্যানিয়েলসকে প্রায় এক লাখ ৩০ হাজার ডলার ঘুষ দেন বলে দাবি করেছেন।
বিপি।এসএম