নিজস্ব প্রতিবেদক: ঢাকার ভারতীয় দূতাবাসের সামনের রাস্তাকে ‘ফেলানি সড়ক’ করার দাবি জানিয়েছেন নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাঙালীদের সংগঠন প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশ। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীর গুলিতে নিহত বাংলাদেশী কিশোরী ফেলানী খাতুনে ১৪তম মৃত্যুদিবস উপলক্ষে গত বুধবার (৮ জানুয়ারি) ফেলানী দিবস পালন করা হয়। এ উপলক্ষে নিউ ইয়র্কে বসবাসরত বাঙালীদের সংগঠন ‘প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশ’ বুধবার বিকেলে নিউইয়র্কে অবস্থিত বাংলাদেশ কনসুলেটের সামনে এক প্রতিবাদ সভা ও মানব বন্ধনের আয়োজন করে। উক্ত সভায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহনীর (বিএসএফ) নির্বিচারে বাংলাদেশী নাগরিকদের হত্যা করার নিন্দা করা হয় এবং ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশনের সামনের রাস্তার নামটির নাম ’ফেলানি সড়ক’ করার দাবি জানানো হয়।
সভাশেষে এ সংক্রান্ত একটি স্মারকলিপি বাংলাদেশ কনসুলেটকে প্রদান করা হয়। কনসুলেটের পক্ষ থেকে মিনিস্টার মোহাম্মদ আনিসুজ্জামান স্মারকলিপিটি গ্রহন করেন এবং এটি যথাযথ কতৃপক্ষের কাছে পৌছে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশের প্রধান সমন্ময়কারী আবদুল কাদের বলেন, ভারত যদিও আমাদের বন্ধুরাষ্ট্র ভারতীয়রা যেভাবে সীমান্তে বাংলাদেশিদের হত্যা করছে এটা সৎপ্রতিবেশী সুলভ আচরন হতে পারে না। ‘এটা মানবাধিকারের স্পস্ট লঙ্ঘন। আমরা আশা করবো ভারত সরকার বিএসএফকে সংযত হতে নির্দেশ দেবে’।
এতদিন ভারতের তাবেদার বাংলাদেশ সরকার ফেলানি হত্যার বিচার দাবী করেনি। এখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষের সরকার জোড়ালো ভাষায় ফেলানি হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করবে বলে আশা করছি।
কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আবদুস সবুর বলেন ফেলানিকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে এটা নিঃসন্দেহে মানবতাবিরোধী অপরাধ। ফেলানি হত্যাকান্ডের বিচার দাবি করে সবুর বলেন. ‘ফেলানীকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাকে চার ঘন্টা কাটাতারের ওপর ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। তখন তার শরীর থেকে চুইয়ে চুইয়ে রক্ত পড়ছিল। বিএসএফ তাকে উদ্ধার করেনি। মৃত্যূর ১৪ বছর পরও ফেলানি হত্যার বিচার হয়নি। আমরা হত্যাকারীর বিচার দাবি করছি।
প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশের অন্যতম সদস্য জুয়েল জাকির বলেন ‘বিএসএফকে আরও সংযত ও মানবিক হতে হবে। এটা কোন সভ্য বাহিনীর আচরন হতে পারেনা। একটি ১৫ বছরের কিশোরী নির্মমভাবে নিহত হয়েছে। কিন্তু বিচার পায়নি। আমরা ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের সামনের রাস্তাটির নাম ফেলানির নামে নামকরনের দাবি
জানাচ্ছি। এই রাস্তাটির নাম হোক ফেলানি সড়ক। তাহলে হয়ত তার পরিবার কিছুটা শান্তনা পাবে। বাংলাদেশি হিসেবে দায়বদ্ধতা থেকে আমরা সরকারের কা্ছে এ দবি জানাচ্ছি।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল, মুশফিকুর রহমান, মোহাম্মদ তারিফ ও রাসেল খান।
সভাশেষে চৌধুরী মোহাম্মদ কাজল সংগঠনের পক্ষ থেকে দূতাবাস কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি হস্তান্তর করেন। এসময় প্যাট্রিয়টস অব বাংলাদেশের সদস্যবৃন্দ ছাড়াও বাংলাদেশ কনসুলেটের কাউন্সেলর ইশরাত জাহান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ভোরে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্যরা ফেলানিকে গুলি করে হত্যা করে। তার মৃতদেহ কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলেছিল সাড়ে ৪ ঘণ্টা। সেই ছবি মানুষকে বিক্ষুব্ধ করেছিল। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই হত্যার বিচারের দাবি তোলে। ওই ঘটনার ৩০ ঘণ্টা পর বিজিবির কাছে ফেলানির মরদেহ হস্তান্তর করেছিলে বিএসএফ।
বিপি।এসএম