মামদানির চেয়ে এখনও দ্বিগুণ ব্যবধানে এগিয়ে কুওমো, তবে তার নেতৃত্ব কমছে

ইমা এলিস: যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে অ্যান্ড্রু কুওমো এখনো এগিয়ে রয়েছেন, তবে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জোহরান মামদানির সঙ্গে ব্যবধান কমছে—মারিস্ট ইনস্টিটিউট ফর পাবলিক ওপিনিয়নের এক নতুন জরিপে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
৯ থেকে ১২ জুনের মধ্যে ১,৩৫০ জন সম্ভাব্য ডেমোক্রেটিক ভোটারদের ওপর চালানো জরিপে দেখা গেছে, র‍্যাঙ্কড-চয়েস ভোটিং সিমুলেশনের সপ্তম রাউন্ডে কুওমো ৫৫ শতাংশ এবং মামদানি ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। শহরের কম্পট্রোলার ব্র্যাড ল্যান্ডার এক রাউন্ড আগেই ১৩ শতাংশে বাদ পড়েন এবং অন্য সব প্রার্থী এক অঙ্কেই সীমাবদ্ধ থাকেন।
জরিপে অনিশ্চিত ভোটারদের বাদ রেখে ফলাফল দেখানো হয়েছে; তবে অনিশ্চিত ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করলে কুওমো মামদানির চেয়ে ৪৩ শতাংশ বনাম ৩৫ শতাংশে এগিয়ে আছেন।
মারিস্টের মে মাসের জরিপে দেখা গিয়েছিল, র‍্যাঙ্কড-চয়েসের পঞ্চম রাউন্ডে (অনিশ্চিত ভোটার বাদে) কুওমো মামদানিকে ২৪ পয়েন্টে পরাজিত করছিলেন।
৪.৩ শতাংশ মার্জিন অফ এরর সহ জরিপে প্রথম রাউন্ডেই কুওমো ৪৩ শতাংশে এগিয়ে থাকেন, মামদানি পান ৩১ শতাংশ ভোট।
ভোটের ফলাফল অনেকটাই নির্ভর করছে অনিশ্চিত ভোটারদের ওপর: ১১ শতাংশ ভোটার এখনো প্রথম পছন্দ নির্ধারণ করেননি, এবং আরেক ১১ শতাংশ কুওমো বা মামদানি কাউকেই তালিকাভুক্ত করেননি।

জরিপটি দেখাচ্ছে, প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিযোগিতাটি এখন কার্যত দুই ব্যক্তির মধ্যে সীমিত—কুওমো ও মামদানি। কুওমো এবং তার সমর্থনে গঠিত সুপার প্যাক টেলিভিশন ও ডাক-প্রচারণায় মামদানিকে চরমপন্থী এবং অযোগ্য হিসেবে তুলে ধরছে। অপরদিকে, ডেমোক্রেটিক পার্টির বামপন্থী সদস্য মামদানি কুওমোর রাজনৈতিক দুর্নীতি ও ভুল পদক্ষেপগুলো তুলে ধরে প্রচার চালাচ্ছেন। ২৪ জুনের প্রাইমারিকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে আগাম ভোট শুরু হয়েছে।
৭৭ শতাংশ উত্তরদাতা মনে করেন, নিউইয়র্ক সিটি ভুল পথে চলছে। ৭২ শতাংশ ভোটার চান, প্রার্থীরা প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরোধিতা করুক। এটি বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামসের জন্য নেতিবাচক ইঙ্গিত, যিনি স্বাধীন প্রার্থী হিসেবে সাধারণ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছেন—ফেডারেল দুর্নীতি মামলা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিচার বিভাগ কর্তৃক খারিজ হওয়ার পর।
মামদানির প্রচারণা সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে গতি পেয়েছে, বিশেষত কংগ্রেস সদস্য আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কর্টেজ, নিডিয়া ভেলাসকেজ এবং সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্সের সমর্থন পাওয়ার পর।
মারিস্টের তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে মামদানিকে প্রথম পছন্দ হিসেবে দেখেছিল ১৮ শতাংশ ভোটার; এখন সেই সংখ্যা বেড়ে ২৭ শতাংশ। কুওমোকে প্রথম পছন্দ বলেছে ৩৮ শতাংশ ভোটার।
লাতিনো ভোটারদের মধ্যে মামদানি এখন ৪১ শতাংশ ভোটে এগিয়ে, কুওমো সেখানে ৩৬ শতাংশে।
বয়সভেদে ভোটারদের বিভাজন স্পষ্ট: ৪৫-এর কম বয়সীদের মধ্যে মামদানি ৫২-১৮ ব্যবধানে এগিয়ে, কিন্তু বয়স্ক ভোটারদের মধ্যে কুওমো ৩০ পয়েন্ট ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।
কৃষ্ণাঙ্গ ভোটারদের মধ্যে কুওমো ৪৮ শতাংশ সমর্থন পেয়েছেন—প্রতিদ্বন্দ্বীদের কেউই তার কাছাকাছি যেতে পারেননি। মামদানি পেয়েছেন ১১ শতাংশ এবং অ্যাড্রিয়েন অ্যাডামস, যিনি প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ নারী মেয়র হলে ইতিহাস সৃষ্টি করবেন, তিনি পেয়েছেন ১২ শতাংশ।
ইহুদি ভোটারদের মধ্যেও কুওমোর শক্ত অবস্থান রয়েছে—৪০ শতাংশ সমর্থন। মামদানির ইসরায়েলবিরোধী অবস্থানকে কেন্দ্র করে কুওমোর সমর্থক সুপার প্যাক তার বিরুদ্ধে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়েছে। মামদানি ও ল্যান্ডার—যিনি একসময় র‍্যাবাই হওয়ার কথা ভাবতেন—দু’জনেই ইহুদি ডেমোক্রেটদের মধ্যে প্রায় সমান জনপ্রিয়, তাদের পছন্দের হার যথাক্রমে ২০ ও ১৯ শতাংশ।
আগাম ভোটারদের মধ্যেও প্রতিযোগিতা টানটান—সেখানে মামদানি কুওমোর থেকে মাত্র ৫ পয়েন্ট পিছিয়ে।
মারিস্টের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৭০ শতাংশের বয়স ৪৫ বছরের বেশি; ৩৫ শতাংশ ছিলেন শ্বেতাঙ্গ, ৩০ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ, ২৪ শতাংশ লাতিনো এবং ৭ শতাংশ এশীয়। ৬০ শতাংশ ছিলেন নারী এবং ৪০ শতাংশ পুরুষ।

[বাংলা প্রেস বিশ্বব্যাপী মুক্তচিন্তার একটি সংবাদমাধ্যম। স্বাধীনচেতা ব্যক্তিদের জন্য নিরপেক্ষ খবর, বিশ্লেষণ এবং মন্তব্য সরবরাহ করে। আমাদের লক্ষ্য হলো ইতিবাচক পরিবর্তন আনা, যা আজ আগের চেয়ে আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ।]

বিপি।এসএম