বাংলাপ্রেস ডেস্ক: নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্বামীসহ গ্রেপ্তার বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগ নেত্রী শামিমা নূর পাপিয়াকে সরকারের সায় আছে বলেই আইনশৃঙ্খলা গ্রেপ্তার করেছে এমনটা জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি জানিয়েছেন, দলের নামে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। অপরাধী যেই হোক তাকে ধরা হবে, দলীয় পরিচয় দেখা হবে না।
সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
গত শনিবার দুপুরে রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশত্যাগের সময় শামিমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউসহ চারজনকে আটক করে র্যাব-১। এদিন র্যাব জানায়, রাজধানীর গুলশানের হোটেল ওয়েস্টিনে প্রেসিডেন্ট স্যুট নিজের নামে সবসময় বুকড করে নানা ধরনের অসামাজিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছিলেন পাপিয়া। যিনি হোটেলটির বারে বিল বাবদ প্রতিদিন পরিশোধ করতেন প্রায় আড়াই লাখ টাকা। বৈধ আয় অনুযায়ী পাপিয়ার বাৎসরিক আয় মাত্র ১৯ লাখ টাকা। অথচ হোটেল ওয়েস্টিনে শুধু গত তিন মাসেই বিল পরিশোধ করেছেন প্রায় এক কোটি ৩০ লাখ টাকা। যিনি নারীসংক্রান্ত অপকর্ম ছাড়াও অস্ত্র-মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ও বিভিন্ন তদবির বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে নানা অপরাধের খবর গণমাধ্যমে এসেছে। রবিবার তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে যুব মহিলা লীগ। সোমবার তিন মামলায় স্বামীসহ পাপিয়াকে ১৫ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
পাপিয়ার গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধী যে দলেরই হোক, অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। অপরাধ অনুসারেই শামিমা নূর পাপিয়ার বিচার হবে।’
কাদের বলেন, ‘যেই অপরাধে যুক্ত হবে, দলীয় কিংবা যে পরিচয় থাকুক, তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। সরকারের সায় রয়েছে বলেই, এসব অপরাধীকে ধরা হচ্ছে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি সরকারের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। সে যে দলেরই হোক।’
মন্ত্রী বলেন, ‘অপরাধ অনুযায়ী অপরাধী শাস্তি পাবে। সরকার দলের হোক কিংবা বাইরের হোক- কোনো অপরাধীকে পার পেয়ে যেতে দেয়নি। সব অপরাধীকেই বিচারের আওতায় আনা হয়েছে। পাপিয়ার পরিচয় যেটাই হোক, অপরাধী হিসেবে এবং অপরাধ অনুযায়ী বিচার হবে।’
পাপিয়ার পেছনে যারা আছেন, তাদের খুঁজে বের করা হবে কি না? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘অপরাধের বিচার করতে গেলে তো পেছনের লোক খোঁজা হয়, হবে না কেন? তারা সামনে আসবে না, এটা মনে করার তো কোনো কারণ নেই। আমাদের সরকারের আমলে এ ধরনের বিচার প্রক্রিয়া চলেছে। বিষয়টি যখন আদালতে যাবে, তখন তো সবকিছুই আসবে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বর্তমান সরকারের আমলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী অপরাধের জন্য অপরাধীদেরকে গ্রেপ্তার করছে এবং শাস্তি দিচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের সায় এবং জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে বলেই আজকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা নিচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সেই স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে। অপরাধ-অন্যায় যারাই করবে, তাদের যেটাই পরিচয় হোক, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই অনুযায়ী অ্যাকশন নেয়া হচ্ছে।’
বিপি/কেজে