Home আন্তর্জাতিক যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব প্রদানে ট্রাম্পের মাথায় নতুন চিন্তা!

যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব প্রদানে ট্রাম্পের মাথায় নতুন চিন্তা!

by bnbanglapress
A+A-
Reset

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি: যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অভিবাসীদের নাগরিকত্ব প্রদানের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মাথায় এসেছে নতুন চিন্তা।গ্রিনকার্ড নিয়ে যারা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন তাদেরকে নাগরিকত্ব প্রদানের ক্ষেত্রে নতুন আইন করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প প্রশাসন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বৈধ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানকালে খাদ্য, চিকিৎসার কিংবা অন্য কোনো সরকারি কল্যাণ কর্মসূচি ব্যবহার করেছেন, তাদের নাগরিকত্ব না দেওয়ার প্রস্তাব করে একটি নতুন নীতিমালা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছেন। গ্রিনকার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রেও অনুরূপ নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হতে পারে বলে সূত্রটি উল্লেখ করেন। ট্রাম্পের কট্টর অভিবাসনবিরোধী উপদেষ্টা স্টিফেন মিলার এই প্রস্তাবের রূপকার বলে হোয়াইট হাউস সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানিয়েছে এনবিসি নিউজ।প্রস্তাবটি এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে জানা গেছে।
এমন একটি কঠোর ব্যবস্থা গৃহীত হতে পারে—এ কথা বেশ কিছুকাল থেকেই শোনা গেছে। এ বছর মার্চে ওয়াশিংটন পোস্ট প্রায় আড়াই শ পাতার একটি খসড়া প্রস্তাব তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে। তখন থেকেই বিভিন্ন অভিবাসী অধিকার গ্রুপ এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করে আসছে।
প্রস্তাব অনুসারে, বৈধ অভিবাসী বা তাদের সন্তানেরা যদি ফুড স্টাম্প, শিশু জীবনবিমা বা এমনকি ওবামাকেয়ার নামে পরিচিত স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচির অধীনের কোনো রকম সরকারি অনুদান ব্যবহার করে থাকে, তাহলে নাগরিকত্বের জন্য অনুপোযুক্ত বলে বিবেচিত হবে। চলতি আইন অনুসারে অন্যান্য আমেরিকানের মতো বৈধ অভিবাসীদেরও ওবামাকেয়ারসহ কোনো না কোনো জীবনবিমা কিনতে হয়। ট্রাম্প প্রশাসন ওবামাকেয়ার বাতিলের চেষ্টা করে এত দিন ব্যর্থ হয়েছে। এই কর্মসূচি যাতে নিজে থেকেই বাতিল হয়ে যায়, সে জন্য তারা স্বাস্থ্যবিমার জন্য সরকারি ভর্তুকি ক্রমাগত হ্রাস করে চলেছে। বৈধ অভিবাসীদের এখন নাগরিকত্ব বাতিলের অজুহাতে ওবামাকেয়ারের ওপর নতুন আক্রমণ আসতে পারে বলে ভাবা হচ্ছে।
এই নীতিমালা বাস্তবায়িত হলে বিপদে পড়বে সবচেয়ে দরিদ্র অভিবাসীরা, কারণ তারাই জনকল্যাণ কর্মসূচির সুযোগ গ্রহণ করে থাকে। জানা গেছে, এই নতুন নীতিমালা নিয়ে কানাঘুষা শুরু হওয়ার পর থেকে গ্রিনকার্ড রয়েছে—এমন অনেক দরিদ্র অভিবাসী বিভিন্ন সরকারি ভর্তুকি গ্রহণ বন্ধ করে দিয়েছে। ওয়াশিংটন পোস্ট এক উপসম্পাদকীয়তে মন্তব্য করেছে, ট্রাম্প প্রশাসন এখন বৈধ অভিবাসীদের দরিদ্র হওয়ার জন্য শাস্তি দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে।
ইমিগ্রান্ট লিগ্যাল রিসোর্স সেন্টারের একজন মুখপাত্র বলেছেন, এটা শুধু অভিবাসীদের বৈধ অধিকারের ওপর হামলা নয়, ওবামাকেয়ারের ওপরেও একটি প্রকাশ্য হামলা। বাস্তবায়িত হলে প্রায় দুই কোটি অভিবাসী এই নীতিমালা দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
জানা গেছে, এই প্রস্তাবিত নীতিমালার আইনগত সূত্র প্রায় ৭০ বছর আগে গৃহীত অভিবাসন ও জাতীয়তা আইন, যার অধীনে রাষ্ট্রের দয়ার ওপর নির্ভরশীল, এমন ব্যক্তিদের মার্কিন নাগরিকত্বের অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এত দিন পর্যন্ত সরকারি খাদ্য সাহায্য বা স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচি ‘অযোগ্যতা’ হিসেবে বিবেচিত হতো না, বরং দরিদ্র অভিবাসীদের বিভিন্ন জনকল্যাণ ব্যবস্থার সুযোগ নিতে উৎসাহিত করা হতো। ট্রাম্প প্রশাসন এই আইনের নতুন যে ব্যাখ্যা দিচ্ছে, তা অনুসারে ফুড স্ট্যাম্প বা সরকারি ভর্তুকিতে স্বাস্থ্যবিমা গ্রহণ সরকারের ওপর নির্ভরশীল হিসেবেই বিবেচিত হবে।
এই নীতিমালা এখনো চূড়ান্ত করা হয়নি। সমালোচনা মুখে ট্রাম্প প্রশাসনের অবস্থান কিছুটা নমনীয় হতে পারে বলে ভাবা হচ্ছে। কংগ্রেসের সামনে উত্থাপিত হলে সেখানেও তীব্র বিরোধিতার সম্ভাবনা রয়েছে।

বাংলাপ্রেস/ইউএস

You may also like

Leave a Comment

কানেকটিকাট, যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বৃহত্তম বাংলা অনলাইন সংবাদপত্র

ফোন: +১-৮৬০-৯৭০-৭৫৭৫   ইমেইল: [email protected]
স্বত্ব © ২০১৫-২০২৩ বাংলা প্রেস | সম্পাদক ও প্রকাশক: ছাবেদ সাথী