বাংলাপ্রেস ডেস্ক: কোন পথে এগোচ্ছে সুশান্ত সিং রাজপুতের (Sushant Singh Rajput) মৃত্যুর তদন্ত। বিষয়টা অনেকটা ‘পরিষ্কার’ করতে সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন মুম্বই পুলিশ কমিশনার পরমবীর সিং। আর সেখানেই তিনি জানালেন, মানসিকভাবে অসুস্থ ছিলেন অভিনেতা।
একইসঙ্গে তাঁর দাবি, প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা সালিয়ানের মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে সুশান্তের নাম জড়িয়ে যাওয়ায় আরও ভেঙে পড়েছিলেন তিনি।
সুশান্তের মৃত্যুর দিন পাঁচেক আগেই শোনা যায় আত্মঘাতী হয়েছেন তাঁর প্রাক্তন ম্যানেজার দিশা। দুর্ঘটনা বলে কেস রেজিস্টার করা হয়েছিল। তারপর থেকেই মন খারাপ ছিল সুশান্তের। এমনকী মৃত্যুর ঠিক আগের দিন গুগলে তিনি নিজের নাম সার্চ করেছিলেন। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে গুগলে চোখ আটকেছিল তাঁর। জানতে চাইছিলেন, তাঁর ও দিশার নামে কী কী লেখা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, যন্ত্রণাহীন মৃত্যু (painless death), স্ক্রিজোফেনিয়া (schizophrenia), বাইপোলার ডিসঅর্ডার (bipolar disorder) লিখেও সার্চ করেছেন সুশান্ত।
পরমবীর সিংয়ের কথায়, যেদিন রাতে আত্মঘাতী হন দিশা, সেদিন তাঁর বাড়িতে পার্টি চলছিল। হাজির ছিলেন দিশার হবু স্বামীও। তবে সেখানে রাজনৈতিক জগতের কেউ ছিলেন না। অর্থাৎ এই ঘটনার সঙ্গে যে কোনও রাজনীতির যোগ নেই, সেটাই স্পষ্ট করেছিলেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, সুশান্ত বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছিল বলে খবর সামনে এসেছে। ওঁর চিকিৎসা চলছিল। ওষুধও খাচ্ছিলেন। তাই কোন পরিস্থিতিতে মৃত্যুর দিকে তাঁকে এগিয়ে নিয়ে গেল, তা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হবে। ব্যক্তিগত জীবন, আর্থিক-মানসিক সব দিকই তদন্ত করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই এই মামলায় ৫৬ জনকে জেরা করেছে মুম্বই পুলিশ বলে জানান কমিশনার।
উল্লেখ্য, এরই মধ্যে অভিযোগ উঠেছে সুশান্ত মৃত্যু তদন্তে বিহার পুলিশের কাজে ‘বাধা’ দেওয়ার চেষ্টা করছে মুম্বই পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দিতেও রাজি হয়নি মুম্বই। এমনকী যে আধিকারিককে মামলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাঁকে জোর করে কোয়ারেন্টাইনে পাঠিয়ে দেয় BMC। এ প্রসঙ্গে পরমবীর সিংয়ের বক্তব্য, “আইন বলছে এই মামলার তদন্ত বিহার পুলিশের করার অধিকার নেই। আমরা আইনি মতামত নিয়েই এগোব। কাউকেই এ ব্যাপারে ক্লিনচিট দেওয়া হয়নি।” আর কোয়ারেন্টাইনের বিষয়টি BMC-র ঘাড়েই চাপিয়ে দেন তিনি।
এদিকে, সম্প্রতি ছেলের মৃত্যুর জন্য বান্ধবী রিয়া চক্রবর্তীকেই কাঠগড়ায় তুলেছে সুশান্তের পরিবার। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মুম্বই সিপি বলেন, রিয়াকেও দু’বার জেরা করা হয়েছে। মানসিকভাবে সুস্থ না থাকার জন্যই ৮ জুন সুশান্তের ফ্ল্যাট থেকে চলে গিয়েছিলেন রিয়া। তারপর সুশান্তের দিদি সেখানে যান ও ১৩ জুন ফেরেন। কারণ বাড়িতে তাঁর মেয়ে একা ছিল। তবে গত ১৬ জুন সুশান্তের পরিবার জানিয়েছিল, তাঁরা অভিনেতার মৃত্যুর বিষয়ে কাউকে সন্দেহ করেন না।
সুশান্তের অ্যাকাউন্ট থেকে ১৫ কোটি টাকা তোলা নিয়ে কী বলছে মুম্বই পুলিশের তদন্ত? পরমবীর সিং জানালেন, “আমরা খোঁজ নিয়ে দেখেছি, ওই অ্যাকাউন্টে ১৮ কোটি টাকা ছিল। যার মধ্যে এখনও প্রায় সাড়ে ৪ কোটি রয়েছে। তবে কোনও অর্থই সরাসরি রিয়ার অ্যাকাউন্টে যায়নি। তা সত্ত্বেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” এককথায়, জট ছাড়ার চেয়ে সুশান্ত মৃত্যু রহস্য ক্রমেই গভীর হচ্ছে।
বিপি/আর এল