বোরহান মেহেদী, নরসিংদী প্রতিনিধি: নরসিংদীর ঘোড়াশাল পৌরসভার পাইকসায় ৩দিন ব্যাপি কুঞ্জমেলা জমতে শুরু করেছে। ফেব্রুয়ারী মাসের ১৭ তারিখ থেকে ১৯ পর্যন্ত চলবে এই মেলা। করোনার কারণে এবার মেলার সময়কাল সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে। হিন্দু ধর্মীয় নন্দোৎসব হরেনাম কীর্তনকে উপলক্ষ করে এই মেলা উৎসবে পরিনীত হয়। ১৫ দিন ব্যাপি রাধা কৃষ্ণ এর নামে কীর্ত্তন উপাসনা শেষে, মাঘ-ফাল্গুনে কোন এক তারিখে এ কুঞ্জমেলা অনুষ্ঠিত হবার রীতি রয়েছে। এবার শুরু হয়েছে ফাল্গুনের প্রথম সপ্তাহে।
এইদিন সকাল থেকে হিন্দু সনাতন ধর্মালম্বীগনের বহু পুরানো নিয়মে রাধা কৃষ্ণের নামের নামজজ্ঞ শুরু হয়। মানব শান্তি কল্যাণের আরাধনায় নানা বয়সের হরিভক্তগন তাদের মানতি ও প্রসাদ বিতরন করে মনের আরতি দান করে থাকে। এদিন ভক্তগন শিবঠাকুর ও কালী দেবতার প্রতিও তাদের ভক্তিপূর্ণ পুজো নিবেদন করে থাকেন। তেজেন বিশ্বাসের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এই সনাতন হিন্দু ধর্মের রাধা কৃষ্ণ প্রার্থণা উৎসবটি এখানে প্রায় ২৫০ বছর ধরে পরম্পরায় পালন করে আসছি। আমাদের নিকট এই কুঞ্জমেলা কৃষ্ণভক্তের বার্ষিক মিনমেলা।
সরজমিনে শনিবার ১৭ ফেব্রুয়ারী মেলা প্রাঙ্গন ঘুরে দেখা গেছে, বহুসংখ্যক দোকানী মেলায় বেচাবিক্রির জন্য নানা রঙের পণ্য সাজিয়ে তারা বসে আছে। বেলা গড়িয়ে বিকাল হলেই অন্যদিনের মতো মেলা দর্শনার্থীর সংখ্যা বেড়ে উঠবে। শুরু হবে দোকানীদের বিক্রির ধুম। ছোটদের খেলনা, মেয়েদের চুড়ি, কিশোর ছেলেদের জন্য হরেক রকমের প্লাস্টিক গাড়ি, বাঁশি, বড়দের জন্য রান্নাবান্নার তৈজসপত্রের দোকান সারিসারি বসেছে।
মেলায় ফোটকা বেলুন বিক্রেতা রবিন মিয়ার সাথে কথা হল, সে আমাকে জানান অনান্য বছরের মতো এবারো সে এই মেলাতে ২/৩ দিন হয় আছে। এবার অন্য বছরের চেয়ে বিক্রি কম। ঠিক মুড়লি বেপারী মিনহাজ জানায় এবার বেচাবিক্রি কম। মাতু ঘোষ শুধু বলেছে তার সব মিষ্টিই প্রতিদিন বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। তবে সকল দোকানীই এবার খুশী আবহাওয়া ভালোর কারনে। মেঘ বৃষ্টি নেই। তাদের মেলায় অবস্থানে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছেনা।
এই মেলা আবার আশপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের হিন্দু-মুসলমানদের কাছে একটি বাৎসরিক মিলনমেলা। এসময় সবার বাড়িতে বিশেষ করে মেয়ে ও জামাই আগমন ঘটে। দূরদুরান্ত থেকে নিমন্ত্রিত অতিথিদের ভিরে বাড়ি সরগরম হয়ে উঠে। এসময় সবার বাড়িতে বিশেষ মাছ মাংসসহ উন্নত খাবার আয়োজন থাকে। নাড়ু মুড়ি মুরকি তো আছেই। সব মিলে অত্র অঞ্চলের মানুষ এই কুঞ্জমেলা ঘিরে সপ্তাহ ধরে সব বয়সের মানুষজন এক অন্যরকম অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠেন। এমনি আবগাহনে, মনে হয় যেন তারা এই মেলার জন্য দীর্ঘ সময় অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকে।
বিপি/কেজে