বিপ্লব আহমেদ, (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার হাসামদিয়ায় ১৯৭১ সালের ১৬ মে একজন মুসলিমসহ ৩২ জন নিরস্ত্র বাঙালি হিন্দুদের হত্যা করে পাকিস্তানের সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল। দিবসটি উপলক্ষে সোমবার (১৬.০৫.২২) সকালে শহীদদের স্মরণে নির্মিত স্মৃতি স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, উপজেলার চতুল ইউনিয়নের হাসমদিয়ায় পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী ১৬ মে ১৯৭১ সালে হাসামদিয়া গ্রামে এবং নিকটবর্তী এলাকায় নিরস্ত্র বাঙালি হিন্দুদের (একজন মুসলিম সহ) গণহত্যায় ৩৩ জন নিহত হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ মে মেজর নেওয়াজের নেতৃত্বে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনীর একটি দল যশোর সেনানিবাস থেকে বোয়ালমারী রেলস্টেশনে আসে। তৎকালীন বৃহত্তর ফরিদপুরের মুজিববাহিনীর উপ-প্রধান শাহ মোহাম্মদ আবু জাফরের পৈত্রিক বাড়ি হাসামদিয়ায় অভিযান চালায়।
সেই মুহূর্তে তিনি বাড়িতে ছিলেন না। শাহ জাফরকে ধরতে ব্যর্থ হওয়ার পর, পাকিস্তান বাহিনী মাওলানা আবুল কালাম আজাদের সহযোগিতায় হাসামদিয়া, রাজাপুর, পোয়াইল, শ্রীনগর, ময়েনদিয়া এবং রামনগর গ্রামে হিন্দু বাড়িতে অভিযান চালায় এবং ৩২ জন বাঙালি হিন্দুসহ ৩৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেফতারকৃতদের বোয়ালমারী সদর ইউনিয়নের রামনগর গ্রামে নিয়ে যেখানে তাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। হাসমদিয়া বাজারেও আগুন দেয় তারা। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর নিহতের নিকটাত্মীয়দের প্রত্যেককে ২,০০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছিল। তবে নিহতদের রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
২০১৩ সালে শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজে নিহতদের স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মিত করা হয়। দিবসটি উপলক্ষে সোমবার সকালে চতুল ইউনিয়নের হাসামদিয়া শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজ চত্বরে নির্মিত স্মৃতিসৌধে শহীদদের স্মরণে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজ ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে। পরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় শাহ জাফর টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মো. লিয়াকত হোসেন লিটন এর সভাপতিত্বে। সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার অধ্যাপক আব্দুর রশিদ, ডেপুটি কমান্ডার সৈয়দ আব্দুর রউফ সিদ্দিকী প্রমুখ।
বিপি/কেজে